চালের দাম ফের বাড়ছে। এক মাস ধরে পাইকারি বাজারে চালের দাম স্থিতিশীল থাকলেও গত দুইদিন ধরে দাম বাড়ায় ভোক্তাদের কপালে ভাঁজ পড়তে শুরু করেছে। চালের আড়তদাররা বলছেন, উত্তরাঞ্চলের মিল মালিকরা চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। যদিও ধানের দাম বাড়েনি। প্রতি বছর নতুন ধান ঘরে উঠার আগে সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে দেন তাঁরা। এছাড়া নগরীর পাইকারি বাজারগুলোতে গত এক সপ্তাহ ধরে তুলনামূলকভাবে চালের সরবরাহও কমে গেছে। ভোক্তারা বলছেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধগতিতে এমনিতেই ক্রেতাদের নাভিশ্বাস উঠেছে। চালের বাজারের অব্যাহত মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে তাই প্রশাসনের হস্তক্ষেপ জরুরি।
নগরীর চালের আড়ত চাক্তাইয়ের চালপট্টি ও পাহাড়তলীতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে নাজিরশাইল, জিরাশাইল সিদ্ধ, মিনিকেট সিদ্ধ, বাসমতি সিদ্ধ, স্বর্ণা সিদ্ধ, বেতি, পাইজাম আতপ, মিনিকেট আতপ, কাটারিভোগ আতপ ও মোটা সিদ্ধ চালের দাম বস্তাপ্রতি সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে।
চালের আড়তদাররা জানান, গত দুইদিনের ব্যবধানে জিরাশাইল সিদ্ধ বস্তায় ১০০ টাকা বেড়ে গিয়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৬৫০ টাকায়। এছাড়া মিনিকেট সিদ্ধ ১০০ টাকা বেড়ে ২ হাজার ৪৫০ টাকা, পাইজাম সিদ্ধ বস্তায় ৫০ টাকা বেড়ে ২ হাজার ৪০০ টাকা, কাটারিভোগ সিদ্ধ ১০০ টাকা বেড়ে গিয়ে ২ হাজার ৫৫০ টাকা, কাটারিভোগ আতপ বস্তাপ্রতি ১৫০ টাকা বেড়ে গিয়ে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৬৫০ টাকায়। অন্যদিকে অপরিবর্তিত আছে স্বর্ণা সিদ্ধ, বেতি আতপ, নাজিরশাইল সিদ্ধ, পাইজাম আতপ ও মোটা সিদ্ধ চালের দাম। বর্তমানে স্বর্ণা সিদ্ধ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৩০০ টাকা, নাজিরশাইল সিদ্ধ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৭৫০ টাকা, বেতি আতপ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৩৫০ টাকা, পাইজাম আতপ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৩৫০ টাকা ও মোটা সিদ্ধ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ২০০ টাকায়।
পাহাড়তলী বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এস এম নিজাম উদ্দিন দৈনিক আজাদীকে বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে হঠাৎ চালের সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছেন মিল মালিকরা। বরাবরের মতোই উত্তরাঞ্চলের মিল মালিকরা সিন্ডিকেট করে দাম বৃদ্ধি করে যাচ্ছেন। অথচ প্রতিটি মিল মালিকের কাছে পর্যাপ্ত ধানের মজুদ আছে শুনেছি। বর্তমানে দেশে ধান চালের কোনো সংকট নেই। চট্টগ্রামের বাজারে সাধারণত কুষ্টিয়া, দিনাজপুর ও আশুগঞ্জ থেকেই বেশি চাল আসে।
এদিকে প্রান্তিক কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি আমন ধান সংগ্রহ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে ২৬ টাকা কেজি দরে দুই লাখ মেট্রিক টন ধান, ৩৭ টাকা কেজি দরে ছয় লাখ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল এবং ৩৬ টাকা কেজি দরে ৫০ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। গত ২৮ অক্টোবর খাদ্য মন্ত্রণালয়ের খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ভিডিও কনফারেন্সের এ
বৈঠক শেষে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, আগামী ৭ নভেম্বর থেকে ২০২১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ২৬ টাকা কেজি দরে দুই লাখ মেট্রিক টন ধান, ১৫ নভেম্বর থেকে ২০২১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৩৭ টাকা কেজি দরে সিদ্ধ চাল এবং ৩৬ টাকা কেজি দরে আতপ চাল সংগ্রহ করা হবে।