সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যাকান্ডের ‘মাস্টার মাইন্ড’ হিসেবে বিবেচিত টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশের ‘প্রধান’ সহযোগী রুবেল শর্মাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আরো ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল বুধবার এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তার ৮দিনের রিমান্ড আবেদনের প্রেক্ষিতে কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহ’র আদালত এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রুবেল শর্মাকে সিনহা হত্যা মামলার সন্দেহজনক আসামি হিসেবে গত ১৪ সেপ্টেম্বর গ্রেফতার করে র্যাব। পরে গত ৩০ সেপ্টেম্বর আদালতে তার ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হলে আদালত ৭ দিনের রিমাণ্ড মঞ্জুর করেন। গত ২ অক্টোবর তাকে র্যাব হেফাজতে নিয়ে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়। গত ৮ অক্টোবর রিমান্ড শেষে ফের কারাগারে পাঠানো হয়। তবে রুবেল শর্মা স্বীকারোক্তি জবানবন্দি দেননি।
সিনহা হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা র্যাব ১৫ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার খায়রুল ইসলাম জানান, কোন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি না দিলেও ৭দিনের রিমান্ডে সিনহা হত্যা সম্পর্কে রুবেল শর্মার কাছ থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। ফলে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার আরো ৮দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছিল। আদালত ৫দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। শীঘ্রই তাকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হবে।
উল্লেখ্য, গত ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর এলাকায় এপিবিএন’র চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান। এ ঘটনায় ৫ আগস্ট নিহত মেজর (অব.) সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে ৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলা করেন। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় র্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার খায়রুল ইসলামকে। মামলায় ওসি প্রদীপসহ ৭ আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। বাকী ২ জন পুলিশ সদস্য নয় বলে জানায় জেলা পুলিশ। পরে মামলায় আরো ৭ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ৮ জন পুলিশ সদস্য, ৩ জন এপিবিএন সদস্য ও ৩ জন স্থানীয় বাসিন্দা। ইতোমধ্যে গ্রেফতারকৃতদের বিভিন্ন দফায় রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদের পর ওসি প্রদীপ ও রুবেল শর্মা ছাড়া বাকী ১২ আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এদিকে মেজর সিনহা হত্যার ঘটনায় নজিরবিহীনভাবে কক্সবাজার জেলার সকল পুলিশ সদস্যকে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে।