বনানী কবরস্থানে স্ত্রী ফরিদা হকের কবরের পাশে সমাহিত হলেন প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হক। সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবী সমিতি প্রাঙ্গণে শনিবার দুপুর দুইটায় জানাজা শেষে সেখানে তার দাফন সম্পন্ন হয়। এর আগে ঢাকার আদ-দ্বীন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার সকালে তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। এদিন সকাল সাড়ে ১০টায় হাসপাতাল সংলগ্ন মসজিদে ব্যারিস্টার রফিকের প্রথম জানাজার পর মরদেহ পল্টনের বাড়িতে নেওয়া হয়। সেখান থেকে মরদেহ নেওয়া হয় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে। বাদ জোহর সেখানে দ্বিতীয় জানাজার পর মরদেহ নেওয়া হয় সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে।
তার তৃতীয় জানাজায় প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ফজলে নূর তাপস, অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, সাবেক আইনমন্ত্রী আব্দুল মতিন খসরুসহ সুপ্রিম কোর্টের বিচারক, আইনজীবীরা অংশ নেন। খবর বিডিনিউজের।
ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের ছেলে দেশের বাইরে থাকায় তার বড় ভাইয়ের ছেলে মিজবা-উল হক সবার কাছে দোয়া চান। জানাজা শেষে রফিক-উল হকের কফিনে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেওয়া হয়। এছাড়া আইনজীবী সমিতি, ল’ রিপোর্টার্স ফোরামসহ বিভিন্ন সংগঠন তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছে।
ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিএনপির পক্ষ থেকে শোক প্রকাশ করেছেন মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি সহ বেশ কিছু নেতাকর্মী জানাজায় অংশ নেন। এছাড়া বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী শোক প্রকাশ করেছেন।
ফুসফুসে সংক্রমণসহ নানা জটিলতা নিয়ে গত ১৫ অক্টোবর ঢাকার আদ-দ্বীন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন ব্যারিস্টার রফিক-উল হক। এর মধ্যে তার স্ট্রোকও হয়েছিল। গত মঙ্গলবার থেকে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন তিনি।
রফিক-উল হকের জন্ম ১৯৩৫ সালের ২ নভেম্বর কলকাতার সুবর্ণপুর গ্রামে। বাবা মুমিন-উল হক ছিলেন পেশায় চিকিৎসক। মা নূরজাহান বেগম। ১৯৫৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং ১৯৫৭ সালে দর্শন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেওয়ার পর ১৯৫৮ সালে এলএলবি করেন। এরপর ১৯৬০ সালে কলকাতা হাই কোর্টে আইন পেশা শুরু করেন রফিক-উল হক।
১৯৬২ সালে ঢাকা হাই কোর্টে আইনপেশায় যুক্ত হন। রফিক-উল হক ১৯৭৫ থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ বার কাউন্সিল ট্রাইব্যুনাল ও বার কাউন্সিল ইলেকশন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।