শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলা সদরে নির্যাতিত সেই শিশু গৃহকর্মী সাদিয়া আকতার ফেলি (১০) মারা গেছে। গতকাল শুক্রবার সন্ধায় ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। খবর বাংলানিউজের।
এ ব্যাপারে শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বন্দে আলী মোবাইল ফোনে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, শুনেছি সে মারা গেছে তবে এখনও মৃত্যুর কোনো কাগজ আমরা পায়নি। জানা যায়, শ্রীবরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আশরাফ হোসেন খোকার ছেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব শাকিলের বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতো মুন্সিপাড়া মহল্লার কৃষক সাইফুল ইসলামের মেয়ে সাদিয়া উরফে ফেলি (১০)। তাকে শাকিলের স্ত্রী রাবেয়া আক্তার ঝুমুরসহ অন্যরা নির্মম নির্যাতন করে আসছিল। তার শরীরের এমন জায়গা নেই যেখানে ক্ষত চিহ্ন ছিল না। মেয়েটি ধীরে ধীরে অসুস্থ হয়ে পড়লেও প্রভাবশালী ওই পরিবারের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস কারো না থাকায় কোথাও অভিযোগ করা হয়নি। শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাতে মেয়েটির ওপর নির্যাতন হলে তার চিৎকার শুনে প্রতিবেশী কে বা কারা ‘৯৯৯’ নম্বরে জানালে পুলিশ শ্রীবরদীর শহরের খামারিয়াপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসা থেকে ওইদিন রাতেই অসুস্থ মেয়েটিকে উদ্ধার করে। পরে তাকে প্রথমে শ্রীবরদী হাসপাতাল ও পরে শেরপুর জেলা হাসপাতাল এবং সেখান থেকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। গ্রেফতার করা হয় শাকিলের স্ত্রী রাবেয়া আক্তার ঝুমুরকে। বর্তমানে তিনি শেরপুর জেলা কারাগারে আছেন। ওই সময়ই শেরপুর জেলা হাসপাতালের আরএমও ডা. খায়রুল কবীর সুমন মেয়েটিকে নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, মেয়েটির যৌনাঙ্গসহ সব স্থানেই আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এবং তার পেট ফুলে গেছে। তাই তাকে ২৬ সেপ্টেম্বর (শনিবার) ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৭ দিন পর সাদিয়ার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় পুলিশ গুহিনী ঝুমুর গ্রেফতার করলেও গৃহকর্তা আহসান হাবিব শাকিল রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। ইতোধ্যেই তাকে গ্রেফতারের জন্য মানবাধিকার সংগঠন আমাদের আইন মানবন্ধনসহ বিভিন্ন মহলের পক্ষ থেকে দাবি জানানো হয়েছে।
শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রহুল আমীন তালুকদার জানান, সাদিয়ার মৃত্যু হয়েছে। তার মরদেহ ময়মনসিংহ কোতোয়ালি থানার পুলিশ সুরতহাল রিপোর্ট করবে এবং ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করা হবে।