রিকশাওয়ালা সেজে আসামি ধরল পুলিশ

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ২১ অক্টোবর, ২০২০ at ৭:৩৮ পূর্বাহ্ণ

২০১১ সালে বাকলিয়া থানার একটি মাদক মামলায় গ্রেপ্তার হন ঘাটফরহাদবেগ এলাকার হাজী হাকিম আলী বাড়ির আবু বক্কর সিদ্দিক মামুন। ২০১৭ সালে বিচারে তার ৫ বছরের সাজা হয়। কিন্তু তিনি অনেক দিন ধরে লাপাত্তা। তাকে ধরতে কোতোয়ালী থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীনের পরিকল্পনায় তিন এএসআইয়ের টিম তৈরি করা হয়, যারা ছদ্মবেশে অভিযান চালাবেন। গত তিন দিন আগে থেকে সম্ভাব্য সব স্থানে অভিযান চালিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
অত:পর ছদ্মবেশ আবারো পরিবর্তন করা হলো। এবার পরিকল্পনা অনুযায়ী এএসআই সাইফুল সাজলেন রিকশাওয়ালা। আর এএসআই রনেশ ও এএসআই নূরুন্নবী সাজলেন রিকশারোহী। দেখে চেনার উপায় নেই তারা যে আসলে পুলিশ। অবশেষে এলো সেই কাঙ্খিত সাফল্য। ১৯ অক্টোবর রাত ৯টার দিকে পতেঙ্গা থানাধীন কাঠগড় এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হন সাজাপ্রাপ্ত আসামি মামুন।
পুলিশ জানায়, মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে মামুন পুলিশের তালিকাভুক্ত মাদক কারবারি। ২০১১ সালে বাকলিয়া থানা ও ২০১৪ সালে চান্দগাঁও থানা পুলিশের হাতে মাদকসহ গ্রেপ্তার হন মামুন। তার নামে চান্দগাঁও থানায় দায়ের করা মামলাটি এখনো বিচারধীন।
অপরদিকে ২০১৭ সালে বাকলিয়া থানার মামলার বিচার শেষে তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। এছাড়া দুই হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়। জরিমানার টাকা অনাদায়ে আরও দুই মাস কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তার বাসার ঠিকানা অনুযায়ী সাজার পরোয়ানা পাঠানো হয় কোতোয়ালী থানা এলাকায়। মামুনকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।
কোতোয়ালী থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন আজাদীকে বলেন, রায়ের পর দক্ষিণ আফ্রিকায় পালিয়ে যান মামুন। সমপ্রতি দেশে ফিরে আবার শুরু করেন ইয়াবা ব্যবসা। পুলিশের চোখ ফাঁকি দিতে এক বছর ধরে স্ত্রীকে নিয়ে পতেঙ্গায় বসবাস শুরু করেন। তার স্ত্রী সিইপিজেডে একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। পতেঙ্গায়ও কয়েকবার চেষ্টা করে আমরা তাকে গ্রেপ্তারে ব্যর্থ হই। সবশেষ আমরা কৌশল অবলম্বন করি। আমাদের তিনজন এএসআই রিকশাচালক ও যাত্রীর বেশে তার বাসার সামনে অবস্থান নেয়।
টিম লিডার এএসআই সাইফুল ইসলাম বলেন, মামুনকে গ্রেপ্তারে বারবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছিলাম। তার কল রেকর্ড, ছবি সংগ্রহের পরও সে নাগালের বাইরে ছিল। পরে খবর পেয়ে আমরা তিনজন ছদ্মবেশে সোমবার দুপুর থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত কাঠগড় এলাকায় অবস্থান নিই। এর মধ্যে স্বাভাবিক যাত্রী-চালকের মতই ভাড়া দেয়া-নেয়া করেছি। লোকচক্ষুর আড়ালে গিয়ে আবার খাবারও খাচ্ছিলাম একসাথে। একসময় রিকশার পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় বাসার কাছ থেকেই আসামি মামুনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআরও ১৮ মৃত্যু শনাক্ত ১৩৮০
পরবর্তী নিবন্ধনতুন সাজে নতুন বগিতে সুবর্ণ