শিশুরা স্বভাবতই অনুকরণপ্রিয়। পারিপার্শ্বিক অবস্থার সাথে খাপখাঁইয়ে তারা বেড়ে ওঠে। যেসব শিশু ভালো পরিবেশে বড় হয় তাদের ব্যবহারও ভালো হয়। একটি শিশুর আচরণকে তার পরিবার, শিক্ষক, বন্ধুবান্ধব কিংবা প্রতিবেশিরা দারুণভাবে প্রভাবিত করে। তবে প্রাথমিক এবং সব থেকে বড় ভুমিকা রাখে শিশুটির পরিবার। অভিভাবকরা শিশুর মূল্যবোধ ও লক্ষ্য স্থির করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বাবা-মা ‘ই সন্তানের আদর্শ। তাই তাদের উচিত সব সময় সন্তানের সাথে সহজ, বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করা। অভিভাবকদের অবশ্যই জীবন সংগ্রামের নিত্য নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে সন্তানকে সাহায্য করবে এবং তাদের মধ্যে আদর্শ ও নৈতিক মূল্যবোধ তৈরি করতে হবে। শিশুদের চরিত্র গঠনে শিক্ষকদের একটা বড় ভূমিকা থাকে। শিশুরা সজ্ঞানে বা অজ্ঞানে শিক্ষকদের অনুকরণ করে। বিখ্যাত মনিষীদের জীবনী জানার ব্যাপারে আগ্রহ সৃষ্টি করতে হবে। ফলে তারা সত্যবাদী, ক্ষমাশীল, কৃতজ্ঞ, উদার বা ন্যায়পরায়ণ হতে শিখবে। শিশুকে ভাগ করে নেওয়ার মানসিকতা শিখাতে হবে। পৃথিবীটা শুধু যে নেওয়ার জায়গা নয়, দেওয়ারও জায়গা, তা শিশুকে বোঝাতে হবে। শিশুরা শ্রদ্ধাবোধ শেখে পরিবার থেকে। শিশুরা যদি দেখে পরিবারের সদস্যরা একে অপরের সঙ্গে শ্রদ্ধার সঙ্গে কথা বলছে, তাহলে তাদের মধ্যেও শ্রদ্ধাবোধ তৈরি হয়। এই পারিবারিক শ্রদ্ধাবোধগুলো সব পরিস্থিতিতেই বজায় রাখতে হয় সেগুলো বুঝতে শিখে। সর্বোপরি, মূল্যবোধ একটি সমাজের সভ্যতা ও সংস্কৃতির অন্যতম উপাদান। মূল্যবোধের ওপর পুরো সমাজের প্রভাব থাকলেও বাবা-মা বা পরিবারের প্রভাবই সবচেয়ে বেশি। তাই পরিবারের সদস্যরা একটু সচেতন হলে ইতিবাচক মূল্যবোধসম্পন্ন সন্তান ও সুনাগরিক গড়ে তুলা সম্ভব।
মামুন হোসেন আগুন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা কলেজ, ঢাকা।