আমাদের দেশে মহামারি করোনাকালে হঠাৎ করে ধর্ষণের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় সকলের মাঝে নতুন আরেক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। যদিও এটি আগেও ছিল কিন্তু এ বছর পূর্বের তুলনায় অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে মর্মে প্রতীয়মান হয়। পরিচিত বা অপরিচিত, প্রেমিক বা আত্মীয় দ্বারা ৫ বছরের শিশু হতে ৭২ বছরের বৃদ্ধা কারো যেন রক্ষা নেই। এমন কি ধর্ষণের শাস্তি বা কুফল সম্পর্কে যেখানে শিক্ষা দেয়া হয় সেখানেও অহরহ হচ্ছে এমন হীনকর্ম। সামপ্রতিক সময়ে ধর্ষণের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকার কর্তৃক বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের খসড়া মন্ত্রিসভায় চূড়ান্ত অনুমোদনের পর ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে সমপ্রতি অধ্যাদেশ জারী করা হয়েছে। সরকারের এই উদ্যোগকে প্রায় সকল মহল থেকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি শাস্তি কার্যকর করার ক্ষেত্রেও সরকারের আন্তরিক সদিচ্ছা কামনা করা হয়েছে। সদ্য পাশ হওয়া আইনের মর্মানুসারে খুব দ্রুত সময়ে প্রকৃত দোষী ব্যক্তির শাস্তি কার্যকর করা হলে এটি এসিড সন্ত্রাসের ন্যায় খুব সহসা অনেকাংশে নির্মূল হবে মর্মে বিশেষজ্ঞ মহল মনে করছেন।
এর পূর্বে এ কাজের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান থাকলেও প্রমাণের অভাব বা প্রভাবশালীর সুনজরে পড়ে আইনের ফাঁক ফোকর দিয়ে অনেক দোষী ব্যক্তি শাস্তির হাত হতে রক্ষা পেয়ে পরবর্তীতে আরো বেশি অপকর্মে জড়িয়ে পড়ার প্রমাণ দেখার অভিজ্ঞতাও আমাদের প্রচুর রয়েছে।
মোদ্দা কথা হলো দলীয় প্রভাবমুক্ত হতে না পারলে এ অধ্যাদেশ জারির মূল উদ্দেশ্য পুরোপুরি কার্যকর হবে না। ভিন্ন মতাদর্শের হওয়ার কারণে বিনা দোষে কেউ যেন শাস্তির সম্মুখীন না হয়, কোন নারী যাতে ষড়যন্ত্র করে কোন অভিযোগ দায়ের করতে না পারে, দোষী ব্যক্তি যাতে খুব সহসা সর্বোচ্চ শাস্তি ভোগ করে ইত্যাদি বিষয়ে সংশ্লিষ্টগণের সজাগ দৃষ্টিই দিতে পারে দেশবাসীর আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ করতে। তবে সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা বিভিন্ন প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রচারের ব্যবস্থা করা হলে অনেকে ভয়ে এ পথ হতে সরে আসবে। এ কথা নির্ধিদ্বায় বলা যায় যে, ইতোপূর্বেকার সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড যেমনটা ধর্ষণের সংখ্যার চেয়ে অনেক অনেক কম ছিল ঠিক তেমনটি মৃত্যুদণ্ডের বেলায় না হলে খুব দ্রুত সময়ে দেশবাসী অধ্যাদেশ জারির সুফল ভোগ করবে, দেশ অপরাধ মুক্ত হবে তথা নারীকূল বা তার আত্মীয় স্বজন দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকবে।