মীরসরাই থেকে এনে যাকে চাকরি দিয়েছিলেন, পরবর্তীতে নিজের পার্টনার করে নিয়েছিলেন সেই সাইফুল আলম পার্টনারের ৭০ কোটি টাকা আত্মসাতের উদ্দেশ্যেই অপহরণের নাটক সাজিয়ে মামলা করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন সাবেক যুবলীগ নেতা ও বর্তমানে আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত নওশাদ মাহমুদ রানা। তিনি গতকাল আজাদীকে বলেন, সাইফুলের একের পর এক জালিয়াতির কারণে বিরক্ত হয়ে তিনি পৃথক ফার্ম খুলেছেন। যৌথ ব্যবসা করার সময় আমদানিকারকরা শুধুমাত্র তাঁর (নওশাদ রানা) উপর আস্থা রেখেই ব্যবসা করেছেন জানিয়ে রানা বলেন, তিনি তাঁর অসুস্থ সন্তানকে নিয়ে দেশে বিদেশে দৌঁড়ের উপর থাকার সুযোগ নিয়ে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে সাইফুল সমুদয় টাকা আত্মসাৎ করে উল্টো তাঁর বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা করিয়েছেন স্ত্রীকে দিয়ে। তবে এ ব্যাপারে হালিশহর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম আজাদীকে বলেন, পুলিশি অভিযানের মুখে অপহরণকারীরা ভিকটিম সাইফুল আলমকে তার বাসা কনকর্ড টাওয়ারের নিচে রেখে গেছে। আমরা চিকিৎসার জন্য তাকে মেডিকেল পাঠিয়েছি। তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন যে, তাঁকে মারধর করে জোরপূর্বক স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে। সাইফুল আলমের স্ত্রী থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলার প্রধান আসামি নওশাদ রানা। আমরা তাকে খুঁজছি। মামলাটি তদন্ত করছি। তদন্তেই ঘটনার সত্যতা বের হয়ে আসবে। অপহরণ মামলার প্রধান আসামি নওশাদ রানা বলেন, শোনা যাচ্ছে যুবলীগের কমিটি হবে। তার আগে একটি চক্র আমার সুনাম ক্ষুণ্ন করতে সাইফুলকে দিয়ে এ কাজ করছে বলে আমার ধারণা। তিনি বলেন, সাইফুলের বিরুদ্ধে অন্তত অর্ধডজন প্রতারণা ও লুটপাটের মামলা রয়েছে, আছে একডজন সাধারণ ডায়রি (জিডি)। তিনি বলেন, ৭০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে পালিয়ে থাকা সাইফুল সে টাকা না দিতে অপহরণের নাটক সৃষ্টি করে রাতেই নিজে বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য প্রভাবশালী এক আওয়ামী লীগ নেতার বাসায় বৈঠক করেন এবং সেখানে অঙ্গীকার করেন সোমবারের মধ্যে আমার টাকা ফেরত দেয়ার।
ব্যবসায়ী রানা বলেন, বউবাজার এলাকায় আমাদের একটা বাড়ি আছে। এলাকার সূত্রে ওই অনুষ্ঠানে দাওয়াত পেয়ে আমি গিয়ে সাইফুলকে দেখি। তার আগে পর্যন্ত সাইফুলকে যতোবার ব্যবসায়িক হিসেব দিতে বলেছি, সে আজ দিচ্ছে, কাল দিচ্ছে করে শুধু সময় ক্ষেপণ করছিল। অনুষ্ঠানে তাকে দেখে আমি বলি যে, আজকেই সব হিসেব চুকাতে হবে। সে বলে, অনুষ্ঠানস্থলে তার অনেক আত্মীয়স্বজন আছে, দূরে কোথাও বসতে চায়। সে অনুযায়ী আমরা রাস্তার অন্য পাড়ে যাই তাকে নিয়ে। এর মধ্যে তার স্ত্রী অপহরণ নাটক সাজায়। তিনি আরো বলেন, আমি অফিস কর্মচারীদের মাধ্যমে ৭ হাজার বিল অব এন্ট্রির বিপরীতে হিসেব মতে ৭০ কোটি টাকা পাওনা হই। সাইফুল পাওনার কথা স্বীকার করলেও দিতে গড়িমসি করতে থাকে। এ নিয়ে অনেক সালিশ দরবার হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রশাসনের মধ্যস্থতায় এক কোটি ৩০ লাখ টাকা দিলেও বাকি টাকা শীঘ্রই ফেরত দেয়ার অঙ্গীকার করে। কিন্তু গত তিন বছর বাকি টাকা না দিয়ে আত্মগোপন করে চলছিল। এ নিয়ে নগরীর বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে ৩/৪টি জিডি করা হয়েছে। রানা বলেন, আমার একটা রাজনৈতিক পরিচয় আছে। প্রয়োজনে ব্যবসা করবো না। কিন্তু স্কিনে কোনো দাগ লাগতে দেবো না।