তৃণমূল পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে প্রাইমারী স্কুল। সরকার এ শিক্ষাকে ইতিমধ্যে বাধ্যতামূলক করে এর জন্য পৃথক একটি মন্ত্রণালয়ও সৃষ্টি করেছে। শিক্ষার অবকাঠামোগত উন্নয়ন খাতে ফি বছর মোটা অঙ্কের বাজেটও যোগান দিয়ে আসছে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান শিক্ষাবান্ধব সরকার। তারপরও এসব স্কুল শিক্ষাক্ষেত্রে অনেকটা পিছিয়ে আছে বেসরকারি পর্যায়ের স্কুলের তুলনায়। এখনো শতভাগ শিক্ষার্থী ভর্তি নিশ্চিত করা সম্ভব হয় নাই অবৈতনিক এসব স্কুলগুলোতে। এর পিছনে অনেক কারণ থাকিলেও স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটি এক্ষেত্রে বড় একটা ফ্যাক্টর হয়ে দাড়িয়েছে। নিয়মানুযায়ী দেশের অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মত তৃণমূলের এসব প্রাইমারীতেও একটি অনুমোদিত কমিটি যথারীতি বিদ্যমান আছে। কিন্তু অপ্রিয় হলেও সত্য যে কাগজে কলমের এসব কমিটির বাস্তবে নেই প্রাতিষ্ঠানিক কোন ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব। উচ্চতর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বেলায় সম্মানী ভাতাসহ নানা সুবিধা এমনকি স্কুলের কাজে প্রয়োজন হলে জরুরি তহবিল (ফান্ড) ব্যবহারের সুযোগ থাকিলেও এক্ষেত্রে তাও নেই। ঢাল নেই, তলোয়ার নেই, নিধিরাম সর্দ্দারের মত যেন এসব কমিটি। শিক্ষকদের বেতন বিলে সই করা ছাড়া আর কোথাও নাক গলানো বা অধিকার চর্চার কোন সুযোগ নেই আলোচিত এসব কমিটির। এছাড়া সবচেয়ে বড় অভিযোগ আছে যে, স্কুলের উন্নয়ন কাজে কমিটিকে সরাসরি সম্পৃক্ত করা হয় না। রাখা হয় ধরা ছোয়ার বাইরে। কমিটিকে আড়াল রেখে উন্নয়ন কাজ দেখভাল করে সরকারি (সংশ্লিষ্ট) কর্মকর্তারাই। ঠিক এমনটি দেখা গেছে স্থানীয় এবাদুল্লাহ পণ্ডিত স্কুলের উন্নয়ন কাজের বেলায়। আমি নিজেও এ স্কুলটির দাতা পরিবারের একজন সদস্য। শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির অধীনে বড় ধরনের কাজের টেন্ডার হয় এই স্কুলের। এ ব্যাপারে এলজিইডি (স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ) একটি চিঠি ইস্যু করে। এই চিঠির অনুলিপি প্রধান শিক্ষক সহ বার জনের (সংশ্লিষ্টদের) বরাবরে প্রেরণ করা হলেও বড় লক্ষণীয় যে, খোদ স্কুলটির (সম্মানিত) সভাপতিকে তা (চিঠি) দেওয়ার প্রয়োজনবোধ মনে করে নাই সরকারি সংস্থা এলজিইডি। যা শুধু অসম্মানজনক নয়, কমিটির যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। অর্থাৎ সবকিছু মিলে নানা অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে চলছে স্কুল কমিটির কার্যক্রম। এদিকে বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ে নিজস্ব অফিসসহ শিক্ষা কর্মকর্তা থাকিলেও থানা ওয়ারী নেই পৃথক কোন প্রাইমারী শিক্ষা কর্মকর্তা এমনকি কোতোয়ালীর মত গুরুত্বপূর্ণ থানায় নেই থানা শিক্ষা অফিসের নিজস্ব ঠিকানা। তাই প্রাইমারী শিক্ষার উন্নয়নে স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটির সুযোগ সুবিধাবৃদ্ধি সহ এর ক্ষমতায়নের বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা দরকার।
বজল আহমদ, সহ-সভাপতি, কলিমউল্লাহ মাস্টার স্কুল ব্যবস্থপনা কমিটি,
এনায়েত বাজার, চট্টগ্রাম।