চট্টগ্রামে ঘুষের ১০ লক্ষ টাকাসহ র্যাবের হাতে ধরা পড়া দুদুকের উপ পরিচালক (বরখাস্তকৃত) এস এম শাব্বির হোসেনের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলায় ৯ বছর পর আদালতে ফের সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়েছে। এতে করে দীর্ঘসময় পর আবারো বহুল আলোচিত এই মামলাটির বিচার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। গতকাল বিভাগীয় বিশেষ জজ (ভারপ্রাপ্ত) মো. ইসমাইল হোসেনের আদালতে আরও একজনের সাক্ষ্য গ্রহণের মাধ্যমে আলোচিত এই মামলাটির কার্যক্রম শুরু হয়। সাক্ষ্যদানকারী ব্যক্তি মামলাটির বাদী ও মেসার্স ফোর এইচ ফ্যাশন লিমিটেডের তৎকালীন বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক নওশাদ চৌধুরী।
২০১১ সালের জানুয়ারিতে চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানিকৃত একটি প্রতিষ্ঠানের কন্টেনার ভর্তি ফেব্রিকস কাপড় গায়েবের ঘটনায় পরবর্তীতে মানি লন্ডারিং মামলার ভয় দেখিয়ে অভিযুক্ত দুদক কর্মকর্তা তৎকালীন উপ পরিচালক শাব্বির প্রতিষ্ঠানটির কাছে ৫০ লক্ষ টাকা ঘুষ দাবি করেন। এই ঘুষের টাকা লেনদেনের সময় চট্টগ্রাম দুদক কার্যালয় থেকে তাকে ১০ লক্ষ টাকাসহ আটক করে র্যাব। এ ঘটনায় ওই বছরের ২৪ জানুয়ারি ডবলমুরিং থানায় অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. সাইফুদ্দিন পারভেজ গতকাল আজাদীকে বলেন, এই মামলায় মোট ২৯ জন সাক্ষী রয়েছে। এরমধ্যে গতকাল পর্যন্ত দুইজনের সাক্ষী নেয়া হয়েছে।
এর আগে চার্জ গঠন শেষে ২০১১ সালের শেষ নাগাদ মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহণ কার্যক্রম শুরু হয়। ওইসময় একজনের সাক্ষ্য নেয়া হয়েছিল। আদালত আগামী ৪ নভেম্বর পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করেছেন বলে জানান তিনি।
মামলার বিবরণীতে জানা গেছে, ২০১১ সালে চট্টগ্রাম বন্দরের হেফাজতে থাকাবস্থায় কন্টেনার ভর্তি কাপড় ( ফেব্রিকস) সরিয়ে সেখানে পরে বালু ও কংকরের বস্তা রেখে যায় দুস্কৃতকারীরা। এর আগে বন্দরে আনার পর কন্টেনারে থাকা কাপড় শনাক্ত করে বিল অব এন্ট্রি দাখিল করে কাস্টমস ও বন্দর কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় অভিযুক্ত দুদক কর্মকর্তা মানি লন্ডারিং আইনে মামলার তদন্ত রিপোর্ট বিরুদ্ধে দেওয়ার ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজারের কাছ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা ঘুষ দাবি করেন। পরে ২৩ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠানটির তৎকালীন কমার্শিয়াল ম্যানেজার নওশাদ চৌধুরীকে ফোন করে তার কার্যালয়ে ১০ লক্ষ টাকা নিয়ে আসতে বলেন।
এই বিষয়টি র্যাব কার্যালয়ে অভিযোগ করলে তারা সহযোগিতার আশ্বাস দেয়। নির্ধারিত সময়ে নওশাদ চৌধুরী ১০ লাখ টাকা নিয়ে দুদক কার্যালয়ে এসে এসএম শাব্বির হোসেনের হাতে ঘুষের টাকা তুলে দেন। পরে র্যাবের একটি দল অভিযান চালিয়ে দুদক কর্মকর্তাকে ঘুষের ১০ লাখ টাকাসহ হাতেনাতে গ্রেপ্তার করে।
ওই বছরেই র্যাব-১০, ঢাকার স্কোয়াড্রন লিডার মো. তোহিদুল ইসলাম তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। আসামির বিরুদ্ধে ১৬১/১৬৫(ক)/১০৯ দন্ডবিধি ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে ৫(ক) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছিল।