পর্যটন মৌসুমে কক্সবাজার বেড়াতে গিয়ে প্রাণ নিয়ে ফিরতে পারেন না অনেক পর্যটক। সৈকতে নেমে সাগরে প্রাণ হারান অনেকে। সর্বশেষ গতকাল শুক্রবার ঢাকা থেকে বেড়াতে গিয়ে ইতমাম মাহমুদ নামের ২৩ বছর বয়সী এক যুবকের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। বিশেষত অসর্তকতার কারণেই পর্যটকরা সাগরে নেমে দুর্ঘটনায় পড়েন বলে মন্তব্য করেন জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। যে স্থানে লাইফ গার্ড নেই, সেখানকার সৈকতে না নামার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে কঙবাজার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
জানা যায়, করোনাকালে দীর্ঘদিন পর খুলেছে পর্যটন কেন্দ্রগুলো। যে কারণে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে প্রতিদিনই কক্সবাজার বেড়াতে যাচ্ছে অগুণিত পর্যটক। বেড়াতে গিয়ে অসর্তকতার কারণে শুক্রবার এক যুবক মারা যান। তথ্য অনুযায়ী, গত এক দশকে কঙবাজার সৈকতে গোসল করতে নেমে প্রায় শতাধিক পর্যটক প্রাণ হারিয়েছেন। বেশিরভাগই নির্দেশনা না মেনে বা গুপ্তখালে পড়ে পানিতে তলিয়ে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন।
কঙবাজার বিচ ব্যবস্থাপনা কমিটি সূত্রে জানা গেছে, কঙবাজার সৈকতে জোয়ারের সময় যেস্থানে সমতল, ভাটার সময় সেখানে খাদের সৃষ্টি হতে পারে। ঢেউয়ের ঘূর্ণিপাকে চোরাবালিরও সৃষ্টি হয়। তাই সৈকতের লাবণী, সুগন্ধা ও কলাতলী পয়েন্ট যেখানে লাইফগার্ড ও বিচকর্মী দায়িত্বপালন করেন সেখানকার সৈকতে নামা নিরাপদ হলেও সিগাল, ডায়াবেটিস হাসপাতাল পয়েন্টে সৈকতে নামা অনিরাপদ। একইভাবে হিমছড়ি, ইনানী, টেকনাফ ও সেন্টমার্টিন সাগর সৈকতে গোসল করার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন জরুরি। সৈকত জুড়ে লাল নিশানা উড়ানো স্থানে সাগরে নামা উচিত নয়। আবার ভাটার সময় সাগরে নামা নিষেধ।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার (পর্যটন সেল) ইমরান জাহিদ খান শুক্রবার রাতে দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘সৈকতে বেড়াতে আসা পর্যটকের অনেকেই বারণ শুনতে চান না। কঙবাজারে সাগরের যে বিপদজনক এরিয়া রয়েছে, সেটা মুভ (স্থান পরিবর্তন) করে। সৈকতের গর্তগুলো প্রাকৃতিকভাবেই স্থান পরিবর্তন করে। আমরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওইসব (বিপদজনক) স্থানে সাগরে না নামার জন্য সাইনবোর্ড টানিয়ে দেই। যেখানে ‘বিপদজনক’ লেখা সাইনবোর্ড থাকে, সেখানেই পর্যটকরা পানি মাপতে আসে। পর্যটকরা গিয়ে ছবি তুলে। দুইদিন পর দেখা যায়, সাইনবোর্ডটিই নেই।’ তিনি বলেন, ‘পানির ঢেউয়ে কখন কোথায় বালি সরে গিয়ে গর্তে পরিণত হয় সেটা অনুমান করা যায় না। সে কারণে যেখানে লাইফ গার্ডরা রয়েছেন পর্যটকদের সেই স্থানেই সৈকতে নামা উচিত। তাহলে দুর্ঘটনায় পড়লে দ্রুত উদ্ধার করা সম্ভব হয়। কিন্তু অনেক পর্যটক আছেন, যারা একটু নির্জন স্থানে গিয়ে সৈকতে নামেন। এরাই দুর্ঘটনায় পড়েন বেশি। এতে প্রাণহানিও ঘটে।’