মহাত্মা গান্ধী ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা এবং অহিংস রাজনীতির প্রবর্তক। স্বাধীনতা পূর্ববর্তী ভারতের জাতীয় আন্দোলনের জনক হিসেবে তিনি সুপরিচিত। আজ তাঁর ১৫০তম জন্মবার্ষিকী। ‘গান্ধীজি’ হিসেবে সমধিক আদৃত মহাত্মা গান্ধীর পুরো নাম মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী। জন্ম ১৮৬৯ সালের ২রা অক্টোবর গুজরাটের পোরবন্দরে। পেশায় তিনি ছিলেন আইনজীবী। ওকালতির কাজে দক্ষিণ আফ্রিকায় গেলে সেখানে এশীয়দের প্রতি শ্বেতাঙ্গদের বৈষম্যমূলক আচরণে অত্যন্ত পীড়িত হন গান্ধী। এবং এর বিরুদ্ধে আন্দোলন হিসেবে তিনি বেছে নেন অহিংস পন্থা। গান্ধীর রাজনৈতিক আদর্শের মূল কথাই ছিল অহিংস সত্যাগ্রহ কর্মপদ্ধতি।
তিনি বিশ্বাস করতেন, সত্য আর অহিংসা অবিচ্ছেদ্য বন্ধনে যুুক্ত। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন সংগ্রামেও গান্ধীর অহিংস পন্থা ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছিল। তাঁর রাজনৈতিক গুরু ছিলেন গোপালকৃষ্ণ গোখলে। জাতিবিদ্বেষ, সামপ্রদায়িকতা ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী চেতনায় বিশ্বাসী গান্ধী মনে করতেন, আধুনিক যন্ত্রসভ্যতা ও পুঁজিবাদ মানুষের শুভসত্তার পরিপন্থী। তিনি কৃষি ও কুটিরশিল্পভিত্তিক আদর্শ সমাজ বিনির্মাণের ওপর জোর দিয়েছিলেন, যা মূলত গ্রামভিত্তিক অর্থনৈতিক কাঠামো প্রতিষ্ঠা করে। ভারতে ১৯১৯ সালে ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক কুখ্যাত রাওলাট আইন পাশ এবং জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে মহাত্মা গান্ধী আন্দোলন শুরু করেন।
ভারতের ‘স্বরাজ’ বা স্বাধীনতার জন্য ব্রিটিশবিরোধী ‘ভারত–ছাড়ো’ আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। এইসব আন্দোলন সংগ্রামের জন্য তাঁকে কারাবরণও করতে হয়েছে। গুজরাটি, হিন্দি ও ইংরেজি ভাষায় তাঁর বেশ কিছু প্রবন্ধ রয়েছে। যা প্রকাশিত হয়েছে ইংরেজিতে, কয়েকটি খণ্ডে। ১৯৪৮ সালের ৩০ জানুয়ারি আততায়ীর গুলিতে এই মহান নেতা নিহত হন।