শচীনদেব বর্মণ বিশিষ্ট সুরকার, সংগীত পরিচালক এবং কণ্ঠশিল্পী হিসেবে বিখ্যাত। অনন্য কণ্ঠশৈলী ও স্বতন্ত্র সুরের ব্যবহার সংগীতে তাঁকে এনে দিয়েছে স্বকীয়তা। আজ এই বিশিষ্ট ধারার সংগীত স্রষ্টার ১১৩তম জন্মবার্ষিকী।
শচীনদেব বর্মণের জন্ম ১৯০৬ সালের ১লা অক্টোবর কুমিল্লায়। ত্রিপুরায় ছিল স্থায়ী বসতি। প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়া শেষ করে ত্রিপুরার রাজ দরবারে চাকরি নিয়েছিলেন। কিন্তু শৈশবকাল থেকেই সংগীতের প্রতি অনুরাগী শচীন চাকরি ছেড়ে কলকাতায় চলে যান গানে তালিম নেবার জন্যে। এখানে তাঁর শিক্ষাগুরু ছিলেন ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ, ওস্তাদ ফৈয়াজ খাঁ প্রমুখ। লোক সংগীতের প্রতি ছিল তাঁর বিশেষ দুর্বলতা। বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে লোক সংগীত সংগ্রহ করে স্বকীয় শৈলীতে গেয়েছেন তিনি এবং তা অসাধারণ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। রাগ সংগীতও তাঁর কণ্ঠশৈলীতে পেয়েছে ভিন্ন মাত্রা। বাংলা ও হিন্দি বহু চলচ্চিত্রে শচীন কণ্ঠ দিয়েছেন, কাজ করেছেন সুর যোজনায়। স্বকণ্ঠে এবং স্ত্রী মীরা দেবীর সঙ্গে দ্বৈত কণ্ঠে তাঁর বেশ কিছু রেকর্ড প্রকাশিত হয়েছে। বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী ও সুরকার রাহুলদেব বর্মণ তাঁর একমাত্র পুত্র। ভারত সরকার কর্তৃক পদ্মশ্রী উপাধিতে ভূষিত হন শচীন। বাঙালিদের কাছে তিনি ‘শচীন কর্তা’ হিসেবে আদৃত। ভারতের সংস্কৃতিক দলের সদস্য হয়ে তিনি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেন। ‘সরগমের নিখাদ’ নামের গ্রন্থে শিল্পী তাঁর সংগীত জীবনের অভিজ্ঞতার কথা লিপিবদ্ধ করেছেন। ১৯৭৫ সালের ৩১শে অক্টোবর এই সুরস্রষ্টার জীবনাবসান ঘটে।