চকরিয়ায় পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে রিয়াজ উদ্দিন (৭) ও রাজু আক্তার (১০) নামে দুই ভাই–বোনকে জঙ্গলে নিয়ে জবাই করে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। এর মধ্যে বোন রাজু আক্তারের দুই হাতের কব্জি কেটে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। পরে তাদের জবাই করে হত্যার চেষ্টা চালালে ভাই রিয়াজ জঙ্গল থেকে পালিয়ে সড়কে এসে চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসে। এসময় ঘাতকরা পালিয়ে যায়। পরে দুই ভাই–বোনকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে মালুমঘাট মেমোরিয়াল খ্রিষ্টান হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। গতকাল সোমবার সকাল ১০টায় খুটাখালী ইউনিয়নের মেধাকচ্ছপিয়া জাতীয় উদ্যানের ঘাঁটি রাস্তার মাথায় এই নৃশংসতা ঘটে। নৃশংসতার শিকার দুই শিশু খুটাখালী ইউনিয়নের চার নম্বর ওয়ার্ডের গর্জনতলী গ্রামের আবদুর ছবিরের ছেলে–মেয়ে। এর মধ্যে বোন রাজু আক্তার গর্জনতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির এবং ভাই রিয়াজ উদ্দিন একই বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী।
কী কারণে অবুঝ দুই শিশুর ওপর এমন নৃশংসতা– এমন প্রশ্নে দুই শিশুর দিনমজুর বাবা আবদুর ছবির দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘একই এলাকার আবদুর রহিম নামে এক ব্যক্তি আমার কাছে কিছু টাকা পান। কিন্তু ওই টাকা দিতে না পারায় কয়েকদিন আগে আমার স্ত্রী মিনা আক্তারকে হুমকি দিয়ে যান রহিম। এরপর আমার দুই শিশুকে বাড়ি থেকে ফুসলিয়ে জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে নৃশংসতা চালায়।
ঘটনার সময় কোথায় ছিলেন– এমন প্রশ্নে আবদুর ছবির বলেন, আমি ও আমার স্ত্রী এনজিও থেকে নেওয়া ঋণের কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে ঈদগাঁও যাই। সেই সুযোগে দুই শিশুকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে আবদুর রহিম গং।
স্থানীয়রা জানান, দুই শিশুকে যেখানে জবাই করে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়েছে সেখানে ২০০০ সালে স্থানীয় মোজাম্মেল হক নামে এক ব্যক্তিকে জবাই করে হত্যা করা হয়েছিল। ওই হত্যাকাণ্ডের আসামিও আবদুর রহিম।
দুই শিশুর মা মিনা আক্তার বলেন, আমরা স্বামী–স্ত্রী বনবিভাগের মালি হিসেবে কাজ করি। আবদুর রহিম তিনদিন আগে বাড়িতে এসে আমাকে হুমকি দিয়েছিল যে, আমাদের জন্য বড় অঘটন অপেক্ষা করছে বলে। এর মধ্যে সেই আমার দুই শিশুর ওপর নৃশংসতা চালিয়েছে। আমরা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছি।
চকরিয়া থানার ওসি শাকের মোহাম্মদ যুবায়ের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। শিশুর বাবা–মায়ের সাথে কথা বলেছি। দুই শিশুর প্রতি এমন নৃশংসতায় যারা জড়িত তাদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। পুলিশ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে মাঠে নেমেছে।