করোনা পরিস্থিতিতে নির্বাচনের মাধ্যমে স্কুল পরিচালনা কমিটি গঠনের সুযোগ না থাকায় মেয়াদ শেষ হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোতে এডহক কমিটি গঠনের নির্দেশনা দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নির্দেশনার প্রেক্ষিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে এডহক কমিটি গঠন করছে শিক্ষাবোর্ড। পরিচালনা কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় ফটিকছড়ির আজিমপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়েও নিয়ম অনুযায়ী এডহক কমিটি গঠন করে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড।
গত ২১ সেপ্টেম্বর বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক ড. বিপ্লব গাঙ্গুলী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে জয়নাল আবেদিন কাঞ্চনকে সভাপতি করে প্রতিষ্ঠানটির এডহক কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়। ওই দিনই (২১ সেপ্টেম্বর) কমিটি অনুমোদন সংক্রান্ত আদেশটি শিক্ষাবোর্ডের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। তবে পরদিনই (২২ সেপ্টেম্বর) ওই কমিটি বাতিল করে শিক্ষাবোর্ড। আগের দিনের কমিটি বাতিলের পাশাপাশি একই দিন (২২ সেপ্টেম্বর) নতুন কমিটি অনুমোদনের আদেশও জারি করা হয় বোর্ডের পক্ষ থেকে। বিদ্যালয় পরিদর্শক ড. বিপ্লব গাঙ্গুলীর স্বাক্ষরিত দুটি আদেশই ওই দিন (২২ সেপ্টেম্বর) শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
কমিটি অনুমোদনের দুটি আদেশ পর্যালোচনায় দেখা যায়– প্রথম বার (২১ সেপ্টেম্বর) অনুমোদিত এডহক কমিটিতে সভাপতি হিসেবে (বোর্ড কর্তৃক মনোনীত) নাম রয়েছে জয়নাল আবেদিন কাঞ্চনের। চার সদস্যের এ কমিটির সদস্য সচিব স্কুলের প্রধান শিক্ষক। বাকি দুই সদস্যের একজন মোহাম্মদ মোস্তফা (জেলা শিক্ষা অফিসার কর্তৃক মনোনীত), অপর সদস্য মো. কামাল উদ্দিন (উপজেলা নির্বাহী অফিসার কর্তৃক মনোনীত)।
তবে পরদিন অনুমোদিত কমিটিতে তিন সদস্য অপরিবর্তিত থাকলেও পাল্টে যায় সভাপতির নাম। ২২ সেপ্টেম্বর নতুন অনুমোদিত কমিটিতে সভাপতি হিসেবে (বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত) মোহাম্মদ জসিম উদ্দীনের নাম দেখা যায়। অর্থাৎ প্রথমবার এডহক কমিটি অনুমোদন ও আদেশ জারির পর রাতের মধ্যেই পাল্টে গেছে সেই কমিটি। বিষয়টি নিজের জন্য অসম্মানের বলে মন্তব্য করেছেন সভাপতি পদ থেকে বাদ পড়া জয়নাল আবেদিন কাঞ্চন। তিনি আগের কমিটির সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। আর আগের কমিটির শিক্ষানুরাগী সদস্য হিসেবে ছিলেন মোহাম্মদ জসিম উদ্দীন। পরিবর্তিত কমিটিতে তাঁকে সভাপতি করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এডহক কমিটির সভাপতি পদে জয়নাল আবেদিন কাঞ্চনের জন্য সুপারিশ পত্র (ডিও লেটার) দেন ফটিকছড়ি এলাকার সংরক্ষিত নারী সাংসদ খাদিজাতুল আনোয়ার সনি। আর জসিম উদ্দীনের জন্য ডিও লেটার দেন স্থানীয় সাংসদ মুজিবুল বশর মাইজভান্ডারী। প্রথমবার অনুমোদিত কমিটিতে খাদিজাতুল আনোয়ার সনির সুপারিশকৃত প্রার্থীকে সভাপতি হিসেবে মনোনীত করে শিক্ষাবোর্ড। কিন্তু পরদিনই ওই কমিটি বাতিল করে মুজিবুল বশর মাইজভান্ডারীর সুপারিশকৃত জসিম উদ্দীনকে সভাপতি হিসেবে নতুন কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়।
এ ঘটনায় বিব্রত শিক্ষাবোর্ড কর্মকর্তারাও। রাতের মধ্যে কমিটি পাল্টে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষাবোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক ড. বিপ্লব গাঙ্গুলী বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এডহক কমিটিতে সভাপতি মনোনীত করার এখতিয়ার বোর্ড চেয়ারম্যানের। চেয়ারম্যান মহোদয় যাকে যোগ্য মনে করবেন, তাঁকে এ পদে মনোনয়ন দেবেন। আবার কোনো কমিটি গঠনের পর প্রয়োজনে তা সংশোধন বা পরিবর্তনের এখতিয়ারও চেয়ারম্যান মহোদয়ের রয়েছে।