নগরীর বায়েজিদে নাশকতার মামলায় মহানগর বিএনপি, যুবদল ও সোচ্ছাসেবক দলের ১৬ নেতাকর্মীর জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। একই সময় বয়স ও অসুস্থতার বিবেচনায় ১০ নেতাকর্মীর জামিন মঞ্জুর করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালত বায়েজিদের নাশকতার ৮টি মামলায় ২৬ নেতাকর্মীর জামিন শুনানিতে এ আদেশ দেন।
২০১৮ সালের ৩০ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপি, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের এসব নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলাগুলো দায়ের হয়েছিল। ওইসব মামলায় আসামিরা হাইকোর্ট থেকে ৪/৬ সপ্তাহ জামিনে ছিলেন।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মহানগর পিপি মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী বলেন, নাশকতার ৮টি মামলায় বিএনপির নেতাকর্মীরা হাইকোর্ট থেকে জামিনে ছিলেন। গতকাল বৃহস্পতিবার তারা মহানগর দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হিসেবে আমি তাদের জামিনের বিরোধিতা করি। পরে আদালত শুনানি শেষে ১৬ জনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আদালতের আদেশে কারাগারে যাওয়া নেতাকর্মীরা হলেন, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সহ দপ্তর সম্পাদক ইদ্রিস আলী, বিএনপি নেতা ডা. ফরহাদ, রুহুল আমিন, হাসান সওদাগর, মনজুরুল আলম, চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মঞ্জুর হোসেন, এরশাদ হোসেন, সহ-সাধারণ সম্পাদক জাফর আহমেদ খোকন, মহানগর যুবদলের সহ-প্রচার সম্পাদক জিল্লুর রহমান জুয়েল, সহ-সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বাবু, পাঁচলাইশ থানা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মনির হোসেন ভূট্টো, হুমায়ুন কবীর, সদস্য মোহাম্মদ নাছির, ছাত্রদল নেতা ফখরুল ইসলাম শাহীন, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আকবর হোসেন ও খাজা স্বপন। এছাড়া জামিন পেয়েছেন- কামরুল ইসলাম, মফিজ, বশির উদ্দিন, আব্দুল মজিদ, সাইফুল বশর, আবুল কালামসহ ১০ নেতাকর্মী।
এর আগে আসামিসহ দলীয় নেতাকর্মীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে আদালত ভবনে প্রবেশ করেন। এসময় তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা ও গায়েবি মামলার প্রতিবাদ জানিয়ে স্লোগান দেয়া হয়। পরে আদালতে এজলাস কক্ষে আসামিরা প্রবেশ করেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের পাশাপাশি আসামিপক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে অ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দীন, আব্দুস সাত্তার, সিরাজুল ইসলাম, জহুরুল আলম, তারেক আহম্মদ, নেজাম উদ্দীন, নাজমুল হাসান সিদ্দিকী, এরফানুর রহমান, জায়েদ বিন রশিদ, এহসানুল হক উপস্থিত ছিলেন। আসামি পক্ষের আইনজীবীরা জানান, মামলায় উল্লেখিত ঘটনার দিন কোনো আসামি উপস্থিত ছিলেন না। এ ঘটনায় আদালতে ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছি। যদি মামলার মেরিট বিবেচনা করা হতো তাহলে সবাই জামিন পেতেন বলে জানান তারা।
বিএনপি নেতাদের তীব্র নিন্দা : বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ১৬ নেতাকমীর জামিন বাতিলের ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবর রহমান শামীম, মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান। এ সময় নেতৃবৃন্দ দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হয়রানি বন্ধ করে তাদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি করেন।