আনোয়ারায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে মো. জালাল (৩৮) নামে এক যুবলীগ কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল রোববার ভোর ৬ টায় উপজেলার বারখাইন ইউনিয়নের শোলকাটা মনু মিয়া দীঘি এলাকায় প্রতিপক্ষ হামলা চালিয়ে জালালকে কুপিয়ে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটায়। জালাল কালাবিবি দীঘির মোড়ে মৎস্য আড়তে মাছ বিক্রি করতে যাচ্ছিলেন।
ঘটনার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে ছৈয়দ আহমদ (৫৯) নামে একজনকে আটক করে। নিহত মো. জালাল উপজেলার জুঁইদন্ডী ইউনিয়নের মৃত আলতাফ মুন্সির পুত্র। তিনি স্থানীয় ইউনিয়ন যুবলীগের সক্রিয় কর্মী ও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইদ্রীসের আত্মীয়। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী জুঁইদন্ডী ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ মহিউদ্দিন বলেন, ভোর ৬ টায় মনু মিয়ার দীঘির সামনে আমাদের টেঙি পৌঁছালে এলাকার মোক্তার হোসেন, নুর হোসেন, জাকির ও বোরহানসহ আরো কয়েকজন টেঙির গতিরোধ করে। এসময় ঘটনা বুঝতে পেরে জালাল গাড়ি থেকে নেমে দৌঁড়ে পালিয়ে যেতে চাইলে তারা জালালকে ধরে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে চলে যায়। এরপর জালালকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন চমেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নুরুল আলম আশেক।
স্থানীয় ও থানা সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে নিহত জালালের পরিবার ও বিবাদীদের সাথে নানা কারণে বিরোধ চলে আসছিল। তারই জের ধরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
জালালের বড় ভাই মো. জামালের অভিযোগ তার ভাইয়ের অন্যতম হত্যাকারী মোক্তার কিছুদিন আগে তাদের কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করলে জালাল বাদী হয়ে আদালতে মোক্তার ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এ কারণে তারা গতকাল ভোরে জালালকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে।
জুঁইদন্ডী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. ইদ্রীস জানান, জালালের হত্যাকারী মোক্তার গং ইউনিয়নের ত্রাস হিসেবে পরিচিত। তাদের বিরুদ্ধে হত্যা, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, মারামারিসহ ১০/১২ টি মামলা রয়েছে। তিনি আরো জানান, হত্যা মামলায় জেল থেকে জামিনে এসে মোক্তার বেপরোয়া হয়ে যায় এবং গতকাল জালালকে নির্মমভাবে হত্যা করে। তিনি হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। গতকাল ময়না তদন্ত শেষে এশার নামাজের পর জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে জালালকে দাফন করা হয়।
আনোয়ারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সোহেল আহমেদ জানান, আমরা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হই মোক্তারসহ বেশ কয়েকজন জালালকে কুপিয়ে হত্যা করে। ঘটনার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে একজনকে আটক করে। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে।