পদ্মা সেতুর আদলে দ্বিতল বিশিষ্ট নতুন কালুরঘাট সেতু নির্মাণের জন্য প্রাথমিক ভাবে যে নকশা তৈরি করা হয়েছিল সেটি বাতিল করে নতুন নকশা তৈরি করা হয়েছে। এখন নতুন নকশায় সেতু হবে এক তলা বিশিষ্ট চার লেনের। এক পাশে থাকবে রেল চলাচলের জন্য ডাবল লেন (দুই লেন) অপর পাশে থাকবে যানবাহন চলাচলের জন্য ডাবল লেন। এখন যেটা হবে সেটা অনেকটা যমুনা সেতুর মতো।
এই ব্যাপারে কালুরঘাট সেতুর ফোকাল পারসন ও রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী (সেতু) মো. গোলাম মোস্তফা আজাদীকে জানান, পদ্মা সেতুর আদলে ‘কালুরঘাট সেতু’ নির্মাণের জন্য প্রাথমিক ভাবে যে নকশা তৈরি করা হয়েছিল সেটা বাতিল হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সেটি চয়েস করেননি। সেতুর নতুন আরেকটি নকশা তৈরি করেছে কোরিয়ার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মিটিংয়ে নতুন নকশা উপস্থাপন করা হয়েছে। নির্মাণ ব্যয়, মেয়াদসহ সব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নতুন নকশায় সেতু তৈরিতে সম্মতি দিয়ে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন।
তিনি জানান, প্রথমে আমরা পদ্মা সেতুর আদলে ডাবল ডেকের (দ্বিতল বিশিষ্ট) সেতু অর্থাৎ উপরে সড়ক আর নিচে রেললাইন-এমন নকশা করেছিলাম। এখন নতুন আরেকটি নকশা তৈরি করা হয়েছে। প্রকৌশলী গোলাম মোস্তফা বলেন, নতুন নকশায় কালুরঘাট সেতু হবে চার লেনের এক তলা বিশিষ্ট। এক পাশে থাকবে রেল চলাচলের জন্য ডাবল লেন (দুই লেন) অপর পাশে থাকবে যানবাহন চলাচলের জন্য ডাবল লেন। এখন সেতুর প্রস্তাবিত ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা।
নতুন নকশা চূড়ান্ত হওয়ায়-এখন নতুন নকশায় প্রকল্পের সারসংক্ষেপ তৈরি করা হবে। এরপর একনেকে উঠবে। একনেকে অনুমোদনের পর আমরা টেন্ডারে চলে যাবো। ঠিকাদার নিয়োগ হবে। পরামর্শক নিয়োগ হবে। এ সব আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া শেষ করতে ২০২৩ সাল চলে যাবে। ২০২৪ সালের শুরুতে আমরা সেতুর কাজ শুরু করতে পারবো। সেতুটির এখন প্রস্থ হবে প্রায় ৬৫ ফুট। সেতুর স্থান, দৈর্ঘ্য-উচ্চতাসহ সবকিছুই আগের মতো থাকবে বলে জানান প্রকৌশলী গোলাম মোস্তাফা।
তিনি জানান, সেতুর মোট দৈর্ঘ্য হবে ৭৮০ মিটার। পিলার থাকবে ৮টি। সেতুর উচ্চতা ১২ দশমিক ২ মিটার। প্রতিটি স্প্যানের দৈর্ঘ্য হবে ১০০ মিটার। বিদ্যমান কালুরঘাট সেতু থেকে ৭০ মিটার উজানে অর্থাৎ উত্তরে নতুন সেতুটি নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে।
গত ৬ জুলাই সেতুর নকশা, ব্যয় ও নির্মাণকালসহ প্রাথমিক প্রস্তাবনা রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরেছিল দাতা সংস্থা কোরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত এঙ্মি ব্যাংকের নিয়োগ করা প্রতিষ্ঠান ইওসিন ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশনের কর্মকর্তারা।
আগে পদ্মা সেতুর আদলে যে নকশা করা হয়েছিল সেটার ব্যয় ধরা হয়েছিল ৬ হাজার ৩৪১ কোটি টাকা। এখন নতুন নকশায় প্রস্থ বেড়ে যাওয়ায় ব্যয়ও বেড়েছে। ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা।
প্রকল্প ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় কোরিয়ার ঋণ দাতা প্রতিষ্ঠান এতো টাকা দিতে সম্মত হবে কিনা জানতে চাইলে প্রকৌশলী মো. গোলাম মোস্তফা জানান, কোরিয়ার ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন ফান্ড (ইডিসিএফ) পুরো টাকা দিতে সম্মত আছে।