ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মুলতানে সিরিজের প্রথম টেস্ট হেরে সমালোচনার তিরে বিদ্ধ হচ্ছিল পাকিস্তান। এরপর দুটি টেস্টে তারা পুরো স্পিন দুর্গ বানিয়ে খেলেছে। তাতেই এসেছে সাফল্য। রাওয়ালপিন্ডিতে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টেস্টে স্পিন ঘূর্ণিতে দিশেহারা ইংল্যান্ড মাত্র ৩৬ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল পাকিস্তানকে। যা শান মাসুদের দল ৯ উইকেট হাতে রেখে পেরিয়েছে। ঘরের মাঠে এটি পাকিস্তানের ৩ বছর এবং ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৯ বছর পর টেস্ট সিরিজ জয়। রাওয়ালপিন্ডি স্টেডিয়ামে স্পিন–বান্ধব উইকেটের আভাস পেয়ে ইংল্যান্ডও স্পিনার বাড়িয়ে একাদশ সাজিয়েছিল। তবে এক্ষেত্রে পাকিস্তানের দুই স্পিনার সাজিদ খান ও নোমান আলির দাপট ছিল ঐতিহাসিক। দুই ইনিংসে তারা দুজন মিলে নিয়েছেন ১৯ উইকেট। ফলে আরও একটি কীর্তি গড়েছে স্বাগতিকরা। তিন ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে হেরেও এ নিয়ে দ্বিতীয়বার সিরিজ জিতল পাকিস্তান। ১৯৯৫ সালে তারা প্রথমবার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পিছিয়ে থেকেও সিরিজ জিতে। এ ছাড়া ২০১৫ সালের পর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ জয়ের রেকর্ড ছিল না পাকিস্তানের। সেটি এলো। ঘরের মাঠেও ২০২১ সালের পর আরেকটি টেস্ট সিরিজ জিততে পাকিস্তানকে তিন বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। এর মাঝে ৪টি সিরিজ খেলেছিল তারা, ইংলিশদের আগের সিরিজে বাংলাদেশের কাছে হেরেছিল ২–০ ব্যবধানে। সিরিজ নির্ধারণী টেস্টের প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ড গুটিয়ে যায় ২৬৭ রানে। সৌদ শাকিলের সেঞ্চুরিতে সেই রান টপকে পাকিস্তান ৩৪৪ রান তোলে। ফলে ৭৭ রানের লিড পায় শান মাসুদরা। সেই রান টপকাতে পারলেও, বড় লক্ষ্য দিতে পারেনি ইংলিশরা। দ্বিতীয় ইনিংসে তারা সর্বসাকূল্যে তুলতে পারে মাত্র ১১২ রান। দ্বিতীয় দিন শেষে বেন স্টোকসের দল ৩ উইকেটে ২৪ রান করেছিল। গতকাল তৃতীয় দিনে খেলতে নেমে জো রুটের ৩৩ এবং হ্যারি ব্রুকের ২৬ রান ছাড়া আর কেউই বলার মতো রান পাননি। ফলে ১১২ রানেই গুটিয়ে যায় ইংল্যান্ড। পাকিস্তানের হয়ে নোমান ৬ এবং সাজিদ ৪ উইকেট নিয়েছেন। তারাই মূলত অর্ধেক কাজ সেরে ফেলেন স্বাগতিকদের। মাত্র ৩৬ রানের লক্ষ্য তাড়ায়ও পাক ওপেনার সাইম আইয়ুব (৮) আউট হয়ে যান দলীয় ১৪ রানে। জ্যাক লিচ তাকে এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলেন। এই অবস্থায় আর উইকেট পড়ার ঝুঁকি নিতে চাননি স্বাগতিক অধিনায়ক শান মাসুদ। ক্রিজে নেমেই ৪টি চার ও এক ছক্কায় ৬ বলে তিনি ২৩ রান করেন। তাতেই পাকিস্তানের সিরিজ নিশ্চিত হয় ৯ উইকেটের বড় জয়ে। মুলতানে সিরিজের প্রথম টেস্টে ইংল্যান্ড জিতেছিল ইনিংস ও ৪৭ রানের ব্যবধানে। যেখানে সফরকারী দলটি প্রথম ইনিংসে ৮২৩ রান করেছিল। অথচ পরের দুই টেস্টের ৪ ইনিংস মিলিয়ে তারা রান করেছে মোট ৮১৪। রাওয়ালপিন্ডিতে হওয়া পরবর্তী দুই টেস্টে পাকিস্তানের জয় যথাক্রমে ১৫২ রান ও ৯ উইকেটে। ফলে ২–১ ব্যবধানে সিরিজ জিতল শান মাসুদরা।