চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে একটি বিশেষায়িত বার্ন ইউনিট স্থাপনে চীনের একটি প্রতিনিধি দল প্রথম দফায় ২০১৪ সালে চট্টগ্রাম আসে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও সারাদেশে বার্ন চিকিৎসা সম্প্রসারণে সমন্বয়কের দায়িত্ব পাওয়া ডা. সামন্ত লাল সেন চীনের ওই প্রতিনিধি টিমকে সাথে করে নিয়ে আসেন। চীনের প্রতিনিধি দলটি জায়গা পছন্দ করে গেলেও নানা জটিলতায় বিশেষায়িত বার্ন ইউনিটের কাজ
আর এগোয়নি। বিশেষায়িত বার্ন ইউনিটও আর হয়নি। এর পিছনে হাসপাতাল প্রশাসনের সমন্বয়ের ঘাটতির পাশাপাশি চট্টগ্রামের মন্ত্রী–এমপিদের নির্লিপ্ততাও কম দায়ী নয়। তবে একজন সামন্ত লাল সেন হাল ছাড়েননি। চট্টগ্রামে একটি বিশেষায়িত বার্ন ইউনিট হোক, সে চেষ্টা থেকে তিনি কখনো নিবৃত্ত হননি।
অবশেষে ৯ বছর পর হলেও তার স্বপ্নের বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে। শুক্রবার চট্টগ্রামে এসে সে কথাই বলে গেলেন ডা. সামন্ত লাল সেন। তিনি আজাদীকে বলেন, চট্টগ্রামে একটি বিশেষায়িত বার্ন ইউনিট হোক, এটা আমার একটি স্বপ্ন। চিকিৎসা সুবিধার অভাবে বেশি পোড়া রোগীদের এখান থেকে ঢাকায় নিয়ে যেতে হয়।
এটি আমার কাছে খুবই কষ্টের। কারণ, পোড়া রোগীদের চিকিৎসায় সময়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ঢাকা নেয়ার পথেই অনেক রোগী মারা যান। এটা মানতে পারার মতো নয়। তাই ৯ বছর ধরে চেষ্টা করছি। আধুনিক চিকিৎসা–সুবিধা সম্বলিত একটি বার্ন ইউনিট এখানে হোক। কিন্তু বিভিন্ন জটিলতার কারণে সেটি হচ্ছিল না।
চট্টগ্রামের মন্ত্রী–এমপিরা চেষ্টা করলে এ কাজটা কিন্তু আরো বহু আগে হতে পারতো। যাই হোক, চীনা প্রতিনিধিরা এবার গোঁয়াছি বাগানের জায়গাটি খুবই পছন্দ করেছে। তারা প্রস্তাবনা নিয়ে এসেছে। শতভাগ অর্থ সহায়তায় দেড়শ শয্যার বিশেষায়িত বার্ন ইউনিটটি তারা করে দেবে। তারা ২০ মিলিয়ন ডলার খরচ
করে এটি করে দিতে প্রস্তুত। এখন কেবল নির্ধারিত জায়গাটি তাদের বুঝিয়ে দেয়া বাকি। মার্চের ১০ তারিখ ঢাকায় একটি চুক্তি স্বাক্ষরের অনুষ্ঠান রয়েছে।
চুক্তির পরপরই তারা কাজ শুরু করে দিতে চায়। তাই চট্টগ্রামের মানুষের উচিত– যত দ্রুত সম্ভব নির্ধারিত জায়গাটি খালি করে তাদের বুঝিয়ে দেয়া। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলেছে– সেখানে অনেক স্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে। আমরাও গিয়ে দেখেছি। কিন্তু সেগুলো বৈধ কোনও স্থাপনা নয়। তাই চট্টগ্রামের মন্ত্রী–এমপি থেকে শুরু করে প্রশাসন–পুলিশ সকলের প্রতি অনুরোধ থাকবে– আপনারা যত দ্রুত সম্ভব জায়গাটি বুঝিয়ে দিতে সহযোগিতা করুন। আমরা চাই দ্রুত
বিশেষায়িত বার্ন ইউনিটের নির্মাণ কাজ শুরু হোক। এটি হলে পোড়া রোগীদের আর ঢাকায় নিতে ছুটোছুটি করতে হবে না। উন্নত চিকিৎসার সব ধরনের সুযোগ–সুবিধা এখানেই থাকবে। চীনারাই সেটি করে দেবে। এতে চট্টগ্রামের মানুষই উপকৃত হবে।