৮ বছর পর নাফে মাছ ধরার অনুমতি

মানতে হবে শর্ত

কক্সবাজার প্রতিনিধি | শুক্রবার , ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ at ৫:২৮ পূর্বাহ্ণ

মাদক ও চোরাচালান রোধে ৮ বছর আগে সীমান্ত উপজেলা টেকনাফের নাফ নদীতে মাছধরা বন্ধ করে দিয়েছিলো তৎকালীন সরকার। এই নিষেধাজ্ঞায় জেলেদের কপাল পুড়ে কয়েক হাজার জেলের; যাদের অধিকাংশের একমাত্র পেশা ছিলো নাফ নদীতে মাছধরা। দীর্ঘ সময় মাছ ধরতে না পেরে অনাহারেঅর্ধাহারে দুঃখেকষ্টে কাটে এই জেলেদের জীবন। এই দীর্ঘ সময়ে তাদের হাহাকার ও চোখের জল মিশেছে নাফের জলে।

অবশেষে দীর্ঘ ৮ বছর পর নাফ নদীতে মাছধরার দুয়ার খুলছে। নানা প্রচেষ্টার পর এবার শর্ত সাপেক্ষে মাছধরার অনুমতি দেয়া হয়েছে। সকাল ৮ টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত জেলেরা নাফে মাছ ধরতে পারবে। হাইকোর্টের দায়েরকৃত রিট পিটিশনের প্রেক্ষিতে গতকাল বৃহস্পতিবার কক্সবাজার জেলা প্রশাসন এই অনুমতি দিয়েছেন। জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার মো. কামরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক পত্রে এ তথ্য জানা যায়। জানা গেছে, চোরাচালান ও ইয়াবা পাচার বন্ধের কথা বলে নাফ নদীতে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল সরকার। এতে জেলেদের দুঃখের সাথে জীবনযাপন করতে হলেও বন্ধ হয়নি ইয়াবা পাচার। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার সংক্রান্ত পত্রে ৫ টি বিষয়ে শর্তের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

পত্রে উল্লেখ করা হয়, মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক জারিকৃত রুলনিশিতে টেকনাফের নাফনদীতে জেলে কর্তৃক বৈধভাবে মাছ ধরা কার্যক্রম চালু করতে জেলা প্রশাসক কঙবাজারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে নির্দেশনা প্রদান করা হয় এবং পিটিশনার কর্তৃক এই কার্যালয়ে ১৫/০৮/২০২৪ খ্রি. তারিখে দাখিলকৃত আবেদন যথাযথভাবে নিষ্পত্তি করতে বলা হয়। এরই প্রেক্ষিতে নিম্নোক্ত শর্তসাপেক্ষে নাফ নদীতে মাছ ধরার অনুমতি প্রদান করা হলো।

সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বাংলাদেশ সীমানার অভ্যন্তরে নাফ নদীতে শাহপরীর দ্বীপ হতে টেকনাফ জেটিঘাট পর্যন্ত মাছ ধরা যাবে।

জেলেরা মাছ ধরতে যাওয়ার সময় বিজিবির ৫টি নির্ধারিত পোস্টে টোকেন/পরিচয়পত্র দেখাবে এবং মাছ ধরাশেষে ফেরত আসার পর বিজিবির পোস্টে তল্লাশি করার ব্যাপারে বিজিবি সদস্যকে সর্বাত্মক সহায়তা প্রদান করতে হবে। কোনো জেলে চেকপোস্টে না জানিয়ে মাছ ধরতে পারবেন না। কোনোক্রমে বাংলাদেশের সীমানা অতিক্রম করতে পারবেন না। মৎস্য অধিদপ্তরের হালনাগাদকৃত নিবন্ধিত জেলেদের তালিকা বিজিবি, কোস্ট গার্ড ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রদান করা যেতে পারে। যাতে কোনোক্রমে নিবন্ধিত জেলে ব্যতীত কেউ নাফ নদীতে মাছ ধরতে না পারে। এই অনুমোদন সম্পূর্ণ সাময়িক। তিন মাস পর সীমান্তের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে এ অনুমতি নবায়নের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিন জানান, পত্রের আলোকে জেলেদের সাথে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।

টেকনাফ মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি আমান উল্লাহ বলেন, প্রাথমিকভাবে অনুমতি মিলেছে। এতে জেলেরা খুশি। তবে রাতে মাছ ধরার অনুমতি না পেলে জেলেদের পোষাবে না। কারণ, রাতে মাছ বেশি পাওয়া যায়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে গোলাগুলি, পুড়ল বসতঘর
পরবর্তী নিবন্ধঅপহৃত ঠিকাদার ৩৫ ঘণ্টা পর বাকলিয়ায় উদ্ধার