৮ দিনের জন্য উঠে গেল লকডাউন

চলবে অফিস শিল্পকারখানা ও গণপরিবহন

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ১৫ জুলাই, ২০২১ at ১০:১৭ পূর্বাহ্ণ

ঈদুল আজহা সামনে রেখে করোনার ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণের মধ্যেও সর্বাত্মক লকডাউন শিথিল করা হয়েছে। গতকাল রাত ১২টার পর থেকে পরবর্তী আগামী ২২ জুলাই পর্যন্ত এই ৮ দিন বিধিনিষেধ শিথিল থাকছে। এই সময়ে চলবে গণপরিবহণ। খোলা থাকবে দোকানপাট, মার্কেটসহ প্রায় সবকিছু। তবে সবকিছু খোলা থাকলেও মানতে হবে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি। এছাড়া বন্ধ থাকবে সবরকম সামাজিক অনুষ্ঠান ও পর্যটনকেন্দ্র।
আজ থেকে কঠোর লকডাউন উঠে যাচ্ছে এমন আগাম বার্তা পেয়ে গতকাল সকাল থেকেই নগরীর পুরো পরিবেশ ছিল স্বাভাবিক। একদিনের মধ্যেই পাল্টে যেতে থাকে নগরীর দৃশ্যপট। গতকাল সকাল থেকেই নগরীর ফাঁকা রাজপথগুলো ব্যস্ত হয়ে উঠছে।
সকাল থেকে চলেছে প্রাইভেট কার, মাইক্রো, সিএনজি। ফাঁকে ফাঁকে চলেছে বাসও। দুপুর ১২টায় সরেজমিনে আগ্রাবাদ বাদামতল, চৌমুহনী ও দেওয়ানহাট এলাকায় দেখা যায়, স্বাভাবিক দিনের মতো যানজট লেগে আছে। আগ্রাবাদ-দেওয়ানহাটের মোড়ের মতো মানুষের ব্যাপক ভিড় ছিল জিইসির মোড়, বহদ্দারহাট, নিউমার্কেট মোড়, ওয়াসার মোড়, চকবাজার এবং টেরীবাজার মোড়েও।
ঈদুল আজহায় উপলক্ষে ১৫ জুলাই থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত কঠোর লকডাউন শিথিল করার বিষয়ে গতকাল বুধবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত নতুন কিছু নির্দেশনা জারি করেছে সরকার। জারি করা পরিপত্রে মাস্ক পরিধান নিশ্চিত ও জনসমাগম এড়িয়ে চলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, গতকাল বুধবার মধ্যরাত থেকে ২৩ জুলাই সকাল ৬টা পর্যন্ত আগের আরোপিত বিধিনিষেধ শিথিল করা থাকলেও করোনাভাইরাসজনিত রোগের সংক্রমণ বিস্তার রোধকল্পে এ সময়ে মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে অনুসরণ করে সব কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
এ সময়ে পর্যটনকেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্রে গমন ও জনসমাবেশ হয় এ ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠান যেমন- বিবাহোত্তর অনুষ্ঠান (ওয়ালিমা), জন্মদিন, পিকনিক, পার্টি ইত্যাদি এবং রাজনৈতিক ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পরিহার করতে হবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে চিঠির মাধ্যমে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে তথ্য অধিদফতরের বিবরণীতে বলা হয়েছে।
এদিকে গত ১২ জুলাই থেকে নগরীতে বসেছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ৬টি পশুর বাজার। পশুর হাটের কারণে নগরীতে মানুষের যাতায়াত অনেক বেড়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে আগ্রাবাদ এলাকায় নিউ মার্কেটের আশপাশ এলাকায় এবং আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ থেকে লালদীঘির পাড় পর্যন্ত ফুটপাতে ভাসমান হকাররা নানান রকম পণ্য বিক্রির জন্য বসেছে।
নগরীর কাজীর দেউড়ি এবং রেয়াজউদ্দিন বাজারে কাঁচাবাজার মানুষের ভিড় ছিল সীমাহীন। আর প্রতিদিনের মতো নগরীর অলি-গলিগুলোতে মানুষের ভিড় বেড়েছে। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে। কঠোর বিধি-নিষেধ সফলভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গতকাল দিনব্যাপী জেলা প্রশাসন চট্টগ্রামের ১৪ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মহানগরীর বিভিন্নস্থানে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছেন। এ সময় সরকারি বিধিনিষেধ মেনে না চলার কারণে বিভিন্ন দোকান, রেস্টুরেন্টে এবং মার্কেটে অভিযান চালিয়ে মামলা করার পাশাপাশি অর্থদণ্ডও করেছেন। করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় ১ জুলাই থেকে কঠোর লকডাউন আরোপ করে সরকার। পরে তা সময়সীমা বাড়িয়ে ১৪ জুলাই পর্যন্ত করা হয়। আজ ভোর ৬ টা পর্যন্ত ঈদুল আজহা উপলক্ষে কঠোর লকডাউনের বিধিনিষেধ শিথিল থাকবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে প্রথমবার দৈনিক শনাক্ত হাজার ছাড়াল
পরবর্তী নিবন্ধসয়াবিন তেলে মেশানো হচ্ছে জুট অয়েল