বিদ্যমান সংবিধান পর্যালোচনা ও মূল্যায়নের জন্য সংবিধান সংস্কারের আলোচনার মধ্যে ১৯৭২ সালে রচিত বাংলাদেশের প্রথম সংবিধানের ‘জন্ম’ ভারতে হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমীর শফিকুর রহমান।
রাজধানীর একটি হোটেলে গতকাল বুধবার জামায়াতে ইসলামীর তরফে ‘রাষ্ট্র সংস্কার প্রস্তাবনা’ তুলে ধরার পর প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানটি ‘জন্মভূমি হিসেবে বাংলাদেশকে পায়নি’। খবর বিডিনিউজের। সংবিধান সংস্কার হবে, না পুনর্লিখন–এমন প্রশ্নের উত্তরে জামায়াতের আমীর বলেন, আপনি ৭২ এর সংবিধান সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন, যে সংবিধানটি রচিত হয়েছিল, সেটা ভারতে বসেই হয়েছিল। এবং ভারত যখন স্বাধীনতা যুদ্ধে একটা গুরুত্বপূর্ণ রোল রেখেছে। সংবিধানটা বাংলাদেশে বসে রচিত করা যেত। শুধু ভারত নয়, দুনিয়ার এঙপার্টদের আমরা ইনভাইট করে আনতে পারতাম। তাহলে আমাদের সংবিধানের জন্মভূমি হত বাংলাদেশ।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘ভারতে বসে রচিত’ বাহাত্তরের সংবিধান পার্লামেন্টে এনে অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল; তার ভাষায় ওই সংবিধান ছিল ‘ফরমায়েশি’। ‘এটায় অনেক পক্ষ, অনেক কনসার্ন এঙপ্রেস করেছে। পরবর্তীতে এসে আবার অনেক সংশোধনী এসেছে। এবং এই সংশোধনীগুলো তারা যেটা প্রথম সংবিধান করেছিল, ওই জায়গায়ও থাকেনি।’
জামায়াতের আমির বলেন, আমরা লক্ষ্য করলাম মুজিব সাহেব থাকা অবস্থায় পার্লামেন্টে ৭ মিনিটের বক্তব্যের পর বাকশাল কায়েম হল। আমাদের সংবিধান যেন মতলবি সংবিধান না হয়। শুধু নির্বাচন নয়, সমগ্রিক সমাজ কাঠামো ধরে সংবিধান হতে হবে।
আগে নির্বাচন, না আগে সংস্কার–এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, দুটি রোডম্যাপ হবে। একটা সংস্কারের, আর একটা নির্বাচনের। তবে সময় যেন অতি দীর্ঘ না হয়, আবার অতি সংক্ষিপ্ত না হয়। দেশে অনেক রাজনৈতিক দল আছে। একটি বর্ণাঢ্য সংসদের জন্য জনগণের কোনো ব্যাক্তিকে না, ভোট দিতে হবে দলকে। গত সরকারের শেষ দিনে আন্দোলন দমন করতে গিয়ে ‘গণহত্যায় জড়িত’ যারা সরকার পতনের পর পালিয়ে গেছে, তাদের ফিরিয়ে এনে বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
অতীতের মত কোনো দলকে বাদ দিয়ে নির্বাচন হবে, নাকি সব দল নিয়ে নির্বাচনের পক্ষে–সেই প্রশ্নে জামায়াতের আমির বলেন, “তারা ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে ক্ষমতায় এসেছেন, ওটা যেভাবেই আসুক, তারা এসেছেন। এরপর ‘১৪, ’১৮, ’২৪ তিনটা নির্বাচন হয়েছে, আদৌ কি এটা নির্বাচন হয়েছে? তারা নির্বাচন চাননি, তারা ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছেন। এই ক্ষমতায় থাকার জন্য যা কিছু করা দরকার, তারা সেটাই করেছেন। তারা নিজেরাই যদি নির্বাচন চেয়ে না থাকেন, তো আওয়ামী লীগের ওপর আমরা নির্বাচন চাপায়ে দিলে এটা তাদের ওপর জুলুম হবে কিন্তু। আওয়ামী লীগের নির্বাচনে আসা বা না আসার ‘হিসেবের ভার বাংলাদেশের জনগণের ওপর’ দেওয়ার কথা বলেন জামায়াত নেতা। তিনি বলেন, আমরা কোনো মত দিতে চাই না। এটাও একটা বৈষম্য হয় কিনা চিন্তা করেন, তারা চাচ্ছে না, আমরা জোর করে বললাম এটা দিতেই হবে।