৬ রোহিঙ্গা হত্যায় দুই মামলা আসামি ২৭৫, অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ১০

উখিয়া প্রতিনিধি | সোমবার , ২৫ অক্টোবর, ২০২১ at ৫:০৬ পূর্বাহ্ণ

উখিয়ার বালুখালীর ক্যাম্পে মসজিদে ৬ জন শিক্ষক-শিক্ষার্থীকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঘটনার পর পরই অস্ত্রসহ ১ জন ও শনিবার একাধিক অভিযান চালিয়ে আরো ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছে এপিবিএন পুলিশ। এদের মধ্যে তিনজন সরাসরি হত্যাকাণ্ডে অংশ নেন বলে দাবি করেছেন ৮ এপিবিএন অধিনায়ক মোহাম্মদ সিহাব কায়সার খান। এ ঘটনায় নিহত আজিজুল হকের পিতা নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে ২৫ জন এবং অজ্ঞাতনামা আরও ২৫০ জনের বিরুদ্ধে শনিবার উখিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। এপিবিএন পুলিশ বাদী হয়ে অস্ত্র আইনে আরো একটি মামলা করেছে।
ঘটনার পর পরই অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়া ক্যাম্প-১১ এর আবুল কালামের ছেলে মুজিবুর রহমান (১৯) কে ১টি দেশীয় ওয়ান শ্যূটারগান, ৬ রাউন্ড তাজা গুলি ও একটি ছুরি সহ গ্রেফতার করা হয়। এদিকে শুক্রবার রাতে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে ক্যাম্প-১৮ এর একটি কবরস্থানে ৫ জনকে এবং ক্যাম্প-১১ এর একটি কবরস্থানে অপর একজনের নামাজে জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন করা হয় বলে জানান এপিবিএন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ কামরান হোসেন।
৮ এপিবিএন অধিনায়ক বলেন, অস্ত্রসহ গ্রেফতারকৃত মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে অস্ত্র আইনে উখিয়া থানায় পৃথক একটি মামলা করেছে। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছেন, ১১নং ক্যাম্পের আবুল কালামের ছেলে মুজিবুর রহমান (১৯), ৮/ ওয়েস্ট ক্যাম্পের আবু তৈয়বের ছেলে দিলদার মাবুদ প্রকাশ পারভেজ (৩২), একই ক্যাম্পের ছৈয়দ আহম্মদের ছেলে মোঃ আয়ুব (৩৭), ৯নং ক্যাম্পের নুর বশরের ছেলে ফেরদৌস আমিন (৪০), একই ক্যাম্পের মৌলভী জাহেদ হোছেনের ছেলে আবদুল মজিদ (২৪)।
মামলায় আটকরা হচ্ছেন, ১৩নং ক্যাম্পের আলী
আহম্মদের ছেলে মোঃ আমিন (৩৫) ও আবু ছিদ্দিকের ছেলে মোহাম্মদ ইউনুস ওরফে ফয়েজ (২৫), ১২নং ক্যাম্পের ইলিয়াছের ছেলে জাফর আলম (৪৫), ১০ নং ক্যাম্পের ওমর মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ জাহিদ (৪০), ১৩নং ক্যাম্পের নজির আহম্মদের ছেলে মোহাম্মাদ আমিন (৪৮)।
শুক্রবার ভোররাতে উখিয়ার ক্যাম্প-১৮ এইচ-৫২ ব্লকের ‘দারুল উলুম নাদওয়াতুল ওলামা আল-ইসলামিয়াহ’ মাদ্রাসায় একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী অকস্মাৎ এলোপাতাড়ি গুলি চালালে ৬ জনের মৃত্যু হয়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহত স্বজনদের দাবি, মুহিবুল্লাহর হত্যাকারী কথিত আরসার সন্ত্রাসীরাই এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। কথিত আরসার বিরুদ্ধে সামাজিকভাবে প্রতিরোধের ডাক দিয়ে বিভিন্ন সময় মহল্লাভিত্তিক বৈঠকে সাধারণ রোহিঙ্গাদের একীভূত হয়ে থাকতে অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য রেখেছেন শুক্রবার নিহত হাফেজ মো. ইদ্রিসসহ আহতদের কয়েকজন।
এছাড়া নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র দাবি করেছে, রোহিঙ্গা ক্যাম্প ভিত্তিক সব মাদ্রাসার নিয়ন্ত্রণ নিতে চেষ্টা চালাচ্ছে কথিত আরসা। সেই লক্ষ্যে তারা প্রতিটি মাদ্রাসা পরিচালনায় কমিটিতে দুজন আরসা সদস্যকে রাখার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা তাতে রাজি হননি। যদিও ইতিমধ্যে অনেক মাদ্রাসা আরসার নিয়ন্ত্রণে বলে দাবি করেছে সূত্রটি। মূলত পুরো ক্যাম্পের একচ্ছত্র আধিপত্য তাদের হাতে রাখতেই একের পর এক ঘটনা ঘটিয়ে সাধারণ রোহিঙ্গাদের মাঝে ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করছে বলে জানা গেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাকলিয়ায় গৃহকর্মীর আত্মহত্যা
পরবর্তী নিবন্ধমিতু হত্যাকাণ্ড ভোলার জামিন না-মঞ্জুর