৬ প্রজাতির সী-উইড চাষে সাফল্য

কক্সবাজারে আজ মেলা

কক্সবাজার প্রতিনিধি | শনিবার , ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ at ৫:৪৯ পূর্বাহ্ণ

উচ্চ পুষ্টিগুণ সম্পন্ন সামুদ্রিক সবজি হিসেবে পরিচিত সী-উইডের তৈরি পণ্যের মেলা কক্সবাজারে বসছে আজ। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউটের (বিএফআরআই) উদ্যোগে কক্সবাজারে অবস্থিত সামুদ্রিক মৎস্য ও প্রযুক্তি কেন্দ্র প্রাঙ্গণে দেশে প্রথমবারের মত এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। মেলায় সী-উইড দিয়ে তৈরি স্যুপ ও খাদ্য ছাড়াও বিভিন্ন প্রসাধনী সামগ্রী প্রদর্শন করা হবে বলে জানিয়েছে বিএফআরআই। কক্সবাজারে অবস্থিত মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউটের সামুদ্রিক মৎস্য ও প্রযুক্তি কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শফিকুর রহমান বলেন, বঙ্গোপসাগরের বিস্তীর্ণ উপকূলে প্রাকৃতিকভাবে সী-উইড জন্ম নেয়। এটি আমাদের দেশে সামুদ্রিক আগাছা হিসেবে পরিচিত হলেও উন্নত বিশ্বে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জলজ সম্পদ হিসাবে বিবেচিত। অধিক পুষ্টিমানের দরুণ বহুকাল আগে থেকেই সরাসরি সালাদ, মশলা, সবজি ইত্যাদি হিসেবে উন্নতদেশে এর ব্যবহার রয়েছে। এছাড়াও ফার্মাসিউটিক্যালস পণ্য, ঔষধ, আগার, কারাজিনান ইত্যাদি বিভিন্ন দ্রব্যের উপজাত হিসেবেও সী-উইডের ব্যবহার ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশে ২০১৩ সাল থেকেই বিএফআরআইর বিজ্ঞানীগণ সী-উইড নিয়ে গবেষণা করছেন। ইতোমধ্যে তারা ১৪৩ প্রজাতির সী-উইড শনাক্ত ও সংরক্ষণ করেছেন। যার মধ্যে ২৩ প্রজাতির সী-উইড বাণিজ্যিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। আর বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ সম্পন্ন প্রজাতিগুলোর সঠিক চাষ প্রক্রিয়া নির্ণয়ের জন্যও বিএফআরআইর বিজ্ঞানীরা কাজ করে যাচ্ছেন।
তিনি জানান, ইতোমধ্যে বিজ্ঞানীরা ৬ প্রজাতির সী-উইডের চাষ প্রক্রিয়া নির্ণয়ে সাফল্য পেয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় এ বছর সী-উইডজাত খাদ্য পণ্যের পাশাপাশি অন্যান্য পণ্যও তৈরি করা হয়েছে। আর পণ্য নিয়েই শনিবার দিনব্যাপী মেলা বসছে কঙবাজারে।
বিএফআরআই সূত্র জানায়, আজ বিকেল সোয়া ৫টায় মেলার উদ্বোধন করবেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ.ম রেজাউল করিম। মেলা শেষ হবে রাত সাড়ে ৮টায়। এর আগে বিকেল ৩টায় সাগর পাড়ের হোটেল সী-গালে ‘সী-উইডজাত পণ্য উৎপাদন ও জনপ্রিয়করণ’ শীর্ষক এক কর্মশালাতেও প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন মৎস্য মন্ত্রী। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউটের (বিএফআরআই) মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় এ কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেবেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী।
উল্লেখ্য, বিএফআরআইর পাশাপাশি সী-উইড নিয়ে গবেষণা করছেন বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইন্সটিটিউটের বিজ্ঞানীগণ। তারাও ১৩৭ প্রজাতির সী-উইড আবিষ্কার করেছেন। এছাড়া নেদারল্যান্ডস সরকারের আর্থিক সহায়তায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিট বাংলাদেশের সমুদ্র এলাকায় সমুদ্রের প্রাণিজ ও উদ্ভিদ সংক্রান্ত সম্পদের উপস্থিতি, সার্বিক অবস্থান, অর্থনৈতিক সম্ভাবনা তথা বাণিজ্যিকীকরণ যাচাইয়ের লক্ষ্যে দুই বছর ধরে গবেষণা পরিচালনা করে বাংলাদেশে ২২০ প্রজাতির সী-উইড আবিষ্কার করে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসেন্টমার্টিনে অর্ধশতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ
পরবর্তী নিবন্ধমানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কায়সার মারা গেছেন