চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে বন্যহাতির আক্রমণে তিন মাস বয়সী এক শিশু নিহতের ঘটনায় বিক্ষুব্ধ জনতা সড়ক অবরোধ করেছিলেন। প্রায় ছয় ঘণ্টা ধরে চলা এই অবরোধ প্রশাসনের আশ্বাসের পর শেষ হয়। বিক্ষোভকারীরা হাতি নিরসনের জন্য চার দিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়ে অবরোধ তুলে নেন।
শনিবার (২২ মার্চ) দুপুর ১টার দিকে তাঁরা সড়ক ছেড়ে দিলে পিএবি সড়কে যান চলাচল ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করে।
এর আগে শুক্রবার (২১ মার্চ) রাত ১টার দিকে কর্ণফুলী উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়নের (৫ নম্বর ওয়ার্ড) শাহমীরপুর জমাদারপাড়া এলাকায় বন্যহাতির আক্রমণে নিহত হয় মোহাম্মদ ইব্রাহীমের তিন মাস বয়সী শিশু পুত্র আরমান জাওয়াদ। এ ঘটনায় শিশুটির মা খজিমা বেগম (৩০) গুরুতর আহত হন এবং বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এই মর্মান্তিক ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী সকাল ৬টা থেকে সড়কে জড়ো হন এবং শিশু জাওয়াদের লাশ নিয়ে পিএবি সড়ক অবরোধ করেন। সকাল ১০টার দিকে সড়কের ওপরই নিহত শিশুর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
সকাল থেকে শুরু হওয়া অবরোধে মইজ্জ্যারটেক থেকে আনোয়ারা পর্যন্ত সড়ক অচল হয়ে পড়ে। সকাল ৮টার দিকে কর্ণফুলী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাফিউল ইসলাম পাটোয়ারী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলেও বিক্ষোভকারীরা সড়ক ছাড়তে রাজি হননি।
পরবর্তীতে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রয়া ত্রিপুরা এবং জেলা জীববৈচিত্র্য ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কর্মকর্তা দীপান্বিতা ভট্টাচার্য। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে আলোচনার পর বিক্ষোভকারীদের দাবির মুখে প্রশাসনের তিন কর্মকর্তা লিখিতভাবে আশ্বাস দেন যে চার দিনের মধ্যে হাতি নিরসনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এরপর বিক্ষোভকারীরা সড়ক থেকে সরে যান।
বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেওয়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. ওয়াসিম আকরাম বলেন, আমরা চার দিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছি। এর মধ্যে কোনো ব্যবস্থা না নিলে আরও বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলব।
কর্ণফুলী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাফিউল ইসলাম পাটোয়ারী বলেন, বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছে। তাঁরা চার দিনের সময় দিয়েছেন প্রশাসনকে। প্রশাসনের আশ্বাসের পর তাঁরা সড়ক ছেড়ে দিয়েছেন, বর্তমানে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।