৬৩ আইনজীবীর জামিন

চিন্ময়ের জামিন ঘিরে আদালত পাড়ায় তাণ্ডবের মামলা

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ১৪ জানুয়ারি, ২০২৫ at ৮:৩৬ পূর্বাহ্ণ

সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় দাশের জামিন নামঞ্জুরকে কেন্দ্র করে আদালত পাড়ায় তাণ্ডবের একটি মামলায় ৬৩ আইনজীবীকে জামিন দিয়েছেন আদালত। গতকাল দুপুরে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরকার হাসান শাহরিয়ার তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। এর আগে এ ৬৩ সনাতনী আইনজীবী আত্মসমর্পণ করে জামিন চেয়ে আবেদন করেন। এ সময় আদালত ভবন থেকে শুরু করে পুরো আদালত এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। বিপুল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আত্মসমর্পণকারী আইনজীবীদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত ছিলেন।

আত্মসমর্পণ করে জামিন পাওয়া আইনজীবীরা হলেন, নিতাই প্রসাদ ঘোষ, প্রণব মজুমদার, অশোক দাশ, চন্দন দাশ, লিটন কান্তি গুহ, দিলীপ কুমার চৌধুরী, রাজিত কুমার চৌধুরী, সমীর দাশগুপ্ত, নিখিল কুমার নাথ, দীশু কান্তি দাশ, চন্দন তালুকদার, রাসেল সরকার, চন্দন বিশ্বাস, স্বাগত চৌধুরী বিধান, পলাশ দত্ত, মিন্টু আচার্য্য, আকাশ বসু, অরনেন্দু রায় সরকার, মিঠুন বিশ্বাস, অনিক দে, স্বপন রায়, মিঠুন কুমার সরকার, দীপক চন্দ্র নাথ, সুব্রত শীল রাজু, লিটন মিত্র, বিপ্লব আচার্য্য, বিশ্বজিৎ দে, সাগর ধর, পার্থ নন্দী, অর্পণ ঘোষ, রুবেল পাল, তপন কুমার দাশ, অভিজিৎ আচার্য্য, টিপু শীল জয়দেব, কাঞ্চন বিশ্বাস, বিশুময় দেব, রানা মিত্র, দুলাল দেবনাথ, শ্যামল চৌধুরী শুভ, প্রদীপ আইচ, রিগ্যান আচার্য্য, অভিজি ঘোষ, উজ্জ্বল সরকার, সীবাতুস দাশ প্রকাশ শিবতোষ দাশ, বিবেকানন্দ চৌধুরী, উপেল পাল, সমিত্র চক্রবর্তী প্রকাশ সৌমিত্র চক্রবর্তী, সুজিত মহাজন, শুভাশীষ শর্মা (চিন্ময় দাশের আইনজীবী), সজল কান্তি দাশ, পিটু কুমার শীল, আশীর্বাদ বিশ্বাস, সুমন কান্তি সরকার, স্বরুপ পাল, প্রদীপ চন্দ্র পাল, পিপলু কান্দি দাশ, সজল দে, সুমন ধর, চট্টেশ্বর ভট্টাচার্য্য, লাভলু দে, ছোটন আচার্য্য, নয়ন কুমার ধর ও হিরো সুশীল। এদিকে ৬৩ আইনজীবীর জামিন মঞ্জুরের ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে আদালত ভবনের সামনে আইনজীবীদের একটি পক্ষকে নানা স্লোগান দিতে দেখা যায়। চট্টগ্রাম মহানগর পিপি মফিজুল হক ভূইয়া দৈনিক আজাদীকে বলেন, ৬৩ জন আইনজীবী আত্মসমর্পণ করে জামিন চেয়ে আবেদন করলে বিচারক তা মঞ্জুর করেন। নগরীর নিউমার্কেট মোড়ে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে কোতোয়ালী থানায় দায়ের হওয়া একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গত ২৫ নভেম্বর ঢাকা থেকে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাশকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন তথা ২৬ নভেম্বর তাকে চট্টগ্রামের আদালতে হাজির করা হয়। তার পক্ষের আইনজীবীরা তার জামিন চেয়ে সেদিন একটি আবেদন করেন। শুনানি শেষে চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলাম জামিন নামঞ্জুর করে চিন্ময়কে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পুলিশ যখন চিন্ময়কে প্রিজন ভ্যানে করে কারাগারে নিয়ে যাবে তখন আগে থেকে জড়ো হওয়া তার অনুসারীরা প্রিজন ভ্যানের গতিরোধ করে এবং প্রিজন ভ্যানের সামনে পিছে শুয়ে পড়ে। একপর্যায়ে দীর্ঘ আড়াই ঘণ্টা পর লাঠিচার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ এবং চিন্ময় কৃষ্ণ দাশকে বহনকারী প্রিজন ভ্যানকে কারাগারের উদ্দেশ্যে নিয়ে যায়। এ সময় বিক্ষোভকারীরা আদালত পাড়ায় ব্যাপক হামলা, ভাঙচুর করে। শুরু হয় সংঘাত। এক পর্যায়ে আদালতের প্রবেশ গেটের অদূরে খুন হন আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত সাতটি মামলা দায়ের হয়েছে। এর মধ্যে কোতোয়ালী থানায় ৬টি ও আদালতে একটি মামলা দায়ের হয়।

পুলিশ জানায়, কোতোয়ালী থানায় দায়ের হওয়া মামলাগুলোর মধ্যে পুলিশ বাদী হয়ে ৭৯ জনের নামে তিনটি, আলিফের বাবা বাদী হয়ে ৩১ জনের নামে একটি (হত্যা মামলা) ও তার ভাই বাদী হয়ে ১১৬ জনের নামে একটি ও মোহাম্মদ উল্লাহ নামের এক ব্যবসায়ী ২৯ জনের নামে একটি মামলা দায়ের করেন। এছাড়া মো. এনামুল হক নামের একজন বাদী হয়ে ১৬৪ জনের নামে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন। আদালত সেটি কোতোয়ালী থানাকে তদন্তের নির্দেশ দেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধগরিব ও দুস্থদের ৩ হাজার কম্বল দিলেন জেলা প্রশাসক
পরবর্তী নিবন্ধআরামিট সিমেন্টের ব্যাংক হিসাব স্থগিত