বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের (বিএসসি) মালিকানাধীন এমটি বাংলার জ্যোতি ও এমটি বাংলার সৌরভ জাহাজ দুটি স্ক্র্যাপ হিসেবে বিক্রি করা হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত এই দুটি জাহাজ উন্মুক্ত টেন্ডারের মাধ্যমে সীতাকুণ্ডের একটি শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডের কাছে বিক্রি করা হয়। টেন্ডারে অংশ নেওয়া দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দরদাতা জিরি সুবেদার শিপ রিসাইক্লিন ইন্ডাস্ট্রিজের কাছে জাহাজ দুটি ভ্যাট এবং ট্যাক্সসহ মোট ৪৫ কোটি ৮৬ লাখ ৬১ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়। ইতোমধ্যে জাহাজ দুটিকে সীতাকুণ্ডের উক্ত শিপইয়ার্ডে বিচিং করা হয়েছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে জাহাজ দুটি কাটার কার্যক্রম শুরু হবে।
গতকাল মঙ্গলবার বিকালে বিএসসির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিএসসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর মাহমুদুল মালেক জাহাজ দুটি বিক্রির কথা সাংবাদিকদের জানান। বিএসসি সরকারের লাভজনক প্রতিষ্ঠান উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলার জ্যোতি ও বাংলার সৌরভ ১৯৮৭ সালে ডেনমার্ক থেকে ৬০ কোটি টাকায় সংগ্রহ করা হয়েছিল। জাহাজ দুটি এ পর্যন্ত ৪২৫ লাখ টন কার্গো পরিবহন করে। এমটি বাংলার জ্যোতি আয় করেছে ৮০৫ কোটি টাকা এবং এমটি সৌরভ ৭৩১ কোটি টাকা আয় করেছে।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর বাংলার জ্যোতি জাহাজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ৫ অক্টোবর বাংলার সৌরভে আগুন লাগে। অগ্নিকাণ্ডে ৪ জন মারা যান। জাহাজ দুটির নিলামের জন্য ৫ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হয়। ৭ জানুয়ারি দরপত্র খোলা হয়। ১৬টি দরপত্র পাওয়া যায়। প্রথম সর্বোচ্চ দরদাতা মাস্টার অ্যান্ড ব্রাদার্স দর দিয়েছিল ৪০ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দরদাতা ৩৬ কোটি ৬৯ লাখ টাকা দর দিয়েছিল। করসহ তারা দিচ্ছে ৪৫ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। সংরক্ষিত মূল্য ছিল ৩৬ কোটি ১০ লাখ টাকা। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি চুক্তি হয়। ৫ মার্চ দুটি জাহাজের দায়িত্বভার নিয়ে জাহাজ দুটি উক্ত কোম্পানি তাদের ইয়ার্ডে বিচিং করে।
এ ধরনের জাহাজ ২৫–২৬ বছরের বেশি সময় চালানো যায় না উল্লেখ করে কমডোর মাহমুদুল মালেক বলেন, মেইনটেন্যান্সের মাধ্যমে আমরা দীর্ঘদিন চালিয়েছি। এ জাহাজ রিইউজ করার সুযোগ নেই।
সংবাদ সম্মেলনে বিএসসির নির্বাহী পরিচালক (প্রযুক্তি) মোহাম্মদ ইউসুফ, সচিব আবু সাফায়েৎ মুহম্মদ শাহেদুল ইসলাম, মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) সাজিয়া পারভীন উপস্থিত ছিলেন।