৫ মাস পর ভিআইপি চোর তৌহিদকে গ্রেফতার দেখিয়েছে ডিবি পুলিশ

জে. জাহেদ, নিজস্ব প্রতিবেদক | মঙ্গলবার , ১৬ জুলাই, ২০২৪ at ৩:৩৪ অপরাহ্ণ

৫ মাস আগে চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে পুলিশ পরিচয়ে বসতবাড়িতে ডাকাতি মামলায় দুই মাস আগে দুবাই পালিয়ে যাওয়ার পথে ইমিগ্রেশনে গ্রেপ্তার বহুল আলোচিত ভিআইপি চোর তৌহিদকে (৩১) কে ডিবি পুলিশের আবেদনে গ্রেপ্তার দেখিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) ১২টার দিকে শুনানি শেষে চট্টগ্রাম দ্বিতীয় আদালতের মহানগর হাকিম (সিএমএম) মো. অলি উল্লাহ এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দীন।

থানা পুলিশের হাত ঘুরে তদন্তের জন্য মামলাটি কিছুদিন আগে ন্যস্ত হয়েছিলো মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে। চাঞ্চল্যকর এই মামলাটি ডিবির কাছে যেতেই পেয়েছে নতুন প্রাণ। নিয়েছে ঘটনার ভিন্ন মোড়। যদিও এখনো রিমান্ডের কোন আবেদন করেনি মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (বন্দর জোন)।

মহানগর ডিবি ও বিশ্বস্ত সূত্রে জানায়, কর্ণফুলীর এই ডাকাতি মামলায় নতুন কিছু তথ্য পেয়েছে মহানগর ডিবি পুলিশ। ফলে, ভিন্ন মাত্রা যোগ হচ্ছে মামলাটিতে। এতে থানা পুলিশের হাত ঘুরে ডিবির হাতে যাওয়া এ মামলায় বদলে যেতে পারে দৃশ্যপট।

গত ১৫ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে কর্ণফুলীর জুলধা ইউনিয়নের মো. নাজেমের (৪৮) বাড়িতে পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতির ঘটনাটি ঘটে। এতে ডাকাতেরা পরিবারের সবাইকে হাত পা বেঁধে রুমে আটকে রেখে প্রায় ৩ ভরি স্বর্ণ, দুই লক্ষ নগদ টাকা, দুটি মোবাইল ফোনসহ কাপড় লুট করে নিয়ে যান।

এ ঘটনায় বাড়ির মালিক মো. নাজেম বাদি হয়ে ১০/১২ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে তখন কর্ণফুলী থানায় মামলা দায়ের করেন। যার জিআর মামলা নং-২৭। কিন্তু মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কর্ণফুলী থানার এসআই মো. আবু সাঈদ রানা তিন মাসেও উল্লেখযোগ্য কোন ক্লু পাননি।

যদিও থানা পুলিশ এ মামলায় আনোয়ারা বারশত ইউনিয়নের বিলপুর হাজী বাড়ির মৃত আবদুর রহিমের ছেলে নুর মোহাম্মদ (৩৫) ও কর্ণফুলীর জুলধার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাদির ভাগিনা আবুল হাসেমের ছেলে নুর নবীর (৩০) কে মোট তিন দিনের রিমান্ডে নেন। কিন্তু রিমান্ডে নিলেও তদন্ত কর্মকর্তার ফলাফল ছিলো অন্তঃসারশূন্যতা।

পরে মামলাটি উর্ধ্বতন কর্মকতাদের নির্দেশে ক্লু লেস হিসেবে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) এর কাছে হস্তান্তর করা হয়। তখন বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন সিএমপি বন্দর জোনের উপ পুলিশ কমিশনার (ডিসি) শাকিলা সোলতানা ও মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (বন্দর জোন) ডিসি মো. আলী হোসেন (এডি. ডিআইজি পদোন্নতিপ্রাপ্ত)।

বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরের তথ্য বলছে, গ্রেপ্তার ভিআইপি চোর তৌহিদ চকরিয়ার গরু চোর নইব্যা গ্রুপের অন্যতম সদস্য। সে চকরিয়া উপজেলার চিরিংগা ইউনিয়নের কারিয়া ঘোনা গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে।

তার পেশা গরু চুরি আর ডাকাতি বলে বিভিন্ন সংবাদে উল্লেখ্য রয়েছে। দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকানিয়া, পটিয়া, চন্দনাইশ, কর্ণফুলী ও বোয়ালখালী এলাকাতে ডিসেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত অন্তত ১০টি ডাকাতি ও গরু চুরির ঘটনা ঘটে। সে সব ঘটনার মূল হোতা এই তৌহিদ বলে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর তদন্ত কর্মকর্তারা জানান।

এই চক্রের সদস্যরা গ্রাম ছাড়িয়ে শহরেও মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার ও সিটবিহীন নোহা গাড়ি নিয়ে চুরি ও ডাকাতি করেন। কোনো ঘটনায় বাঁধা পেলে তাৎক্ষণিক তাঁরা ফাঁকা গুলি চালাতেন।

এদের রয়েছে ২০–২৫ জনের সক্রিয় গ্যাং। বেশির ভাগ গ্যাংয়ের ডাকাত চকরিয়া এলাকার। পুরো চকরিয়া জুড়ে এদের বলয়। কর্ণফুলীর জুলধায় এর আগেও এ চক্রটি গরু চুরি ও ডাকাতির ঘটনা ঘটান বলে থানা পুলিশ জানান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসাতকানিয়ায় প্রতিপক্ষের দায়ের কোপে নিহত ১
পরবর্তী নিবন্ধমহেশখালীতে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ব্যবসায়ীর মৃত্যু