২০১৮ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান হলের দ্বিতীয় ধাপের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। তবে ৫৮ মাস পেরিয়ে গেলেও কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সাড়ে ৬ মাসের মধ্যে কাজ শেষ করতে বলা হলেও ৫৮ মাসে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে মাত্র ৭০ শতাংশ। এর মধ্যে সময় বাড়ানো হয়েছে পাঁচবার।
নির্মাণ কাজ শেষ না হলেও গত আড়াই বছরে হলটিতে নিয়োগ পেয়েছে তিনজন প্রভোস্ট। দীর্ঘ সময় নির্মাণ কাজ আটকে থাকায় হলটিতে নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার সম্পদ।
অপরদিকে, গত বছরের জুলাই মাসে অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান হল থেকে আনুমানিক ২০ লাখ টাকার সরঞ্জামাদি চুরির অভিযোগ উঠেছে। পরে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর সহকারী প্রক্টর ড. শহীদুল ইসলামকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কে বা কারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত এবং ক্ষতির পরিমাণ কত সে বিষয়ে গত সাত মাসেও কোনো প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি এই কমিটি।
জানা যায়, নির্মাণাধীন হলটির প্রায় ২৫টি বোর্ড এবং দেয়ালের পাইলিং ভেঙে বৈদ্যুতিক তারগুলো কেটে নিয়ে যাওয়া হয়। এছাড়া হলটির উত্তর দিকের প্রায় ৩০টি থাই অ্যালুমিনিয়াম ও জানালার কপাট, ২০টি দরজার লক, ৩০টি লাইট, বেশ কিছু সিলিং ফ্যান, ৭টি গ্যাসের চুলা, ৩টি গ্যাস রাইজার ও ১টি পানির মোটরসহ আরও বেশ কিছু সরঞ্জাম চুরি হয়েছে। এমনকি দরজার তালা ভেঙে প্রভোস্ট কক্ষে থাকা টেবিলের কাচও নিয়ে যাওয়া হয়। পাশাপাশি আট–দশটি বেসিন ভাঙা পড়ে থাকতে দেখা যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৩ মে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পের দ্বিতীয় ধাপের কার্যাদেশ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মঞ্জুরুল আলম এন্ড কোং। সময় দেয়া হয় সাড়ে ৬ মাস। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে না পারায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মঞ্জুরুল আলম এন্ড কোং এর সাথে গত সাত মাস আগেই চুক্তি বাতিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অবশিষ্ট কাজ সম্পন্ন করতে নতুন করে টেন্ডার করা হয়েছে।
হলটির প্রভোস্ট ড. সুমন বড়ুয়া আজাদীকে বলেন, হলটিতে নতুন করে টেন্ডার করা হয়েছে। যখন–তখন ওয়ার্ক অর্ডার আসবে। ওয়ার্ক অর্ডার দিলে অল্প সময়ের মধ্যে কাজ হবে। চুরির ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা তদন্ত করছেন। এছাড়া হলের নিরাপত্তার জন্য লোক নিয়োগ করা হয়েছে। নির্মাণাধীন কাজের মানের ব্যাপারে তিনি বলেন, কাজের দেখভাল করে প্রকৌশল দপ্তর। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) ছৈয়দ জাহাঙ্গীর ফজলের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।