কিশোর গ্যাংয়ের মারধর থেকে ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে গুরুতর আহত দন্ত চিকিৎসক কোরবান আলী (৬০) ৫দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে মৃত্যুবরণ করেছেন। গত ১০ এপ্রিল বুধবার ভোর সাড়ে ৫টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয় বলে জানান ছেলে আলী রেজা।
কোরবান আলী সন্দ্বীপ উপজেলার সারিকাইত ইউনিয়নের কবিরুল ইসলামের ছেলে। পরিবার নিয়ে তিনি পশ্চিম ফিরোজশাহ কলোনির গ্রিন টাওয়ারে থাকতেন। ষোলশহরে জাহানারা ডেন্টাল কেয়ার নামে তার ব্যক্তিগত চেম্বার রয়েছে। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে পূর্ব ফিরোজ শাহ এলাকায় প্রথম নামাজে জানাজা এবং গ্রামের বাড়ি সন্দ্বীপে দ্বিতীয় জানাজা শেষে সেখানে তাকে দাফন করা হয়।
এর আগে ৫ এপ্রিল শুক্রবার বিকেলে নগরের ফিরোজ শাহ কলোনি এলাকায় দুই স্কুলছাত্রকে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা মারধর করার সময় তারা সাহায্য চাইলে ৯৯৯–এ ফোন দেন দন্ত চিকিৎসক কোরবান আলীর ছেলে আলী রেজা। পুলিশ এসে একজনকে ধরে নিয়ে যায়। ওইদিন সন্ধ্যায় ইফতারি কিনতে বের হন আলী রেজা। তাকে একা পেয়ে মারধর শুরু করে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। খবর পেয়ে ছেলেকে বাঁচাতে ছুটে আসেন কোরবান আলী। একপর্যায়ে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের ইটের আঘাতে কোরবান আলী মাথায় গুরুতর আঘাত পান। তাকে চমেক হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে মেডিক্যাল সেন্টার হাসপাতালে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ এপ্রিল বুধবার ভোর সাড়ে ৫টায় মৃত্যু মৃত্যুবরণ করেন। এ ঘটনায় ৬ এপ্রিল শনিবার ছেলে আলী রেজা বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত ৫–৬ জনকে আসামি করে আকবর শাহ থানায় মামলা করেন। এতে মো. সামির, মো. রিয়াদ, সোহেল ওরফে বগা সোহেল, মো. আকিব, মো. অপূর্ব, মো. নিশান, মো. রাজু, মো. সাগর, মো. বাবু, মো. রাজু, মো. সংগ্রাম ও মো. সাফায়েতের নাম উল্লেখ করা হয়।
এ ঘটনায় গত ৯ এপ্রিল মঙ্গলবার আকবরশাহ এলাকা থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে আদালতে রিমান্ডের আবেদন করা হয়। আদালত প্রত্যেকের একদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন বলে জানান আকবর শাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম রব্বানী।
প্রতিবাদে মানববন্ধন : গতকাল ১৫ এপ্রিল বিকেলে চট্টগ্রাম স্টেডিয়াম সংলগ্ন সার্কিট হাউসের সামনে চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরামের উদ্যোগে চট্টগ্রাম ফিরোজ শাহ কলোনীতে কিশোর সন্ত্রাসীদের হামলায় চিকিৎসক কোরবান আলীর মৃত্যুর ঘটনায় অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ও চট্টগ্রামকে কিশোর গ্যাং মুক্ত করার দাবিতে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরামের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার মনোয়ার হোসেনের দিকনির্দেশনায় আয়োজিত এই মানববন্ধনের সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মোহাম্মদ ফোরকান।