বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান এড. আহমেদ আজম খান বলেছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ভেতরে বাইরে ষড়যন্ত্রকারীরা গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছে। ফ্যাসিবাদ শেখ হাসিনা বলতেন–আগে উন্নয়ন পরে নির্বাচন, আগে লুটেপুটে খেয়ে পরে নির্বাচনের চিন্তা। শেখ হাসিনা সরকারের মত এ সরকারের মাথায়ও ভূত চেপেছে। ষড়যন্ত্রকারীরা এখন বলছেন আগে সংস্কার পরে নির্বাচন। আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই–আগামী ৫ আগস্ট এ সরকারের মেয়াদ এক বছর হবে। সংস্কারের জন্য এক বছর সময় যথেষ্ট।
তিনি বলেন, আগামী দিনের রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমান ৩১ দফা সংস্কার কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় গিয়ে এ সংস্কার কর্মসূচি করবেন। ৫ আগস্টের পর আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সমর্থন দিয়েছি, সহযোগিতা দিয়েছি, আমরা তাঁর সম্মানজনক বিদায় চাই। তাই সরকারের প্রতি অনুরোধ–আগামী ৫ সেপ্টেম্বর নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা এবং ৫ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করুন। অন্যতায় বিএনপি দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে।
গতকাল শনিবার বিকেলে আনোয়ারা সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপি আয়োজিত জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আজম খান আরো বলেন, আজকের বিশাল সমাবেশ প্রমাণ করে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলায় একটি সুযোগ্য আহ্বায়ক কমিটি হয়েছে। এজন্য আমি আগামীর রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমানকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আগামী নির্বাচন হবে সবচেয়ে কঠিন নির্বাচন। তাই দলকে এগিয়ে নিতে হলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আগামী নির্বাচনে চট্টগ্রাম দক্ষিণের সকল আসন তারেক রহমানকে উপহার দিতে হবে।
দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ইদ্রিস মিয়ার সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব লায়ন মুহাম্মদ হেলাল উদ্দিনের সঞ্চালনায় সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম। তিনি বলেন, সংস্কার সংস্কার করে নির্বাচনকে আর বিলম্বিত করা যাবে না। বাংলাদেশের জনগণ আগে সংসদ নির্বাচন চায়। তাই জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত বিএনপি রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাবে। সরকারকে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহ–সাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশিদ (ভিপি হারুন) বলেন, ফ্যাসিবাদ সরকারের দোসররা এখন কোথাও নেই, তারা কখনো ফিরে আসবে না, অভ্যুত্থানে যাদের পতন হয় তারা আর দাঁড়াতে পারে না। আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে দলের জন্য মাঠে কাজ করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহ–সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল বলেন, ষড়যন্ত্রকারীরা তারেক রহমানের জনপ্রিয়তা ও কর্মদক্ষতাকে ভয় পায়। বাংলাদেশের মানুষের কাছে নেতা হিসেবে তারেক রহমান জনপ্রিয়তায় শীর্ষে অবস্থান করছেন। তাই ষড়যন্ত্রকারীরা ভোট দিতে ভয় পায়। ইলেকশন দ্রুত দেন, না হলে কীভাবে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করাতে হয় তা বিএনপির জানা আছে।
সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য গাজী মোহাম্মদ শাহজাহান জুয়েল, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ডা. মহসীন জিল্লুর করিম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আলী আব্বাস, যুগ্ম আহ্বায়ক মিশকাতুল ইসলাম চৌধুরী পাপ্পা, জহুরুর ইসলাম চৌধুরী আলমগীর, মোস্তাক আহমদ খান, লোকমান, মুজিবুর রহমান, এস.এম. মামুন মিয়া, মহসীন চৌধুরী রানা, শরীফুল ইসলাম তুহিন, সরোয়ার হোসেন প্রমুখ।
এর আগে দুপুর থেকে দক্ষিণ জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে নেতাকর্মীরা বিভিন্ন যানবাহনে স্লোগানে, মিছিল নিয়ে সমাবেশ স্থলে যোগ দেয়। দুপুরের দিকে পুরো আনোয়ারা স্কুলের মাঠ মহাসমাবেশে রূপ নেয়। হাজার হাজার নেতাকর্মী সমাবেশে যোগ দেন।