সরকারি খাস জমিতে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা তিনটি ইটভাটা উচ্ছেদ করে প্রায় ৫০ কোটি টাকার দেড়শ একর জমি উদ্ধার করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর। গত মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল পর্যন্ত এই অভিযান চলে। অভিযানে পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয়ের পরিচালক মোহাম্মদ নূরুল্লাহ নূরী, আঞ্চলিক কার্যালয়ের পরিচালক মোহাম্মদ মোয়াজ্জম হোসাইন, পরিবেশ অধিদপ্তর জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক জমির উদ্দিন, মহানগর কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মিয়া মাহমুদুল হক, মহানগর কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহরীন ফেরদৌসী, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উমর ফারুক, সহকারী বন সংরক্ষক সাইফুল ইসলাম অংশ নেন।
পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, অভিযানে নগরীর উত্তর কাট্টলীর বঙ্গোপসাগর পাড়ের কেএনএল ব্রিকস, সীতাকুণ্ড উপজেলার লতিফপুরে এমআরএস ব্রিকস এবং জঙ্গল সলিমপুরে অবস্থিত আবদুস সোবহান ব্রিকসের আগুন সম্পূর্ণ নিভিয়ে দেওয়া হয়। তিনটি ইটভাটার চিমনী ও কিলন উচ্ছেদ করার পাশাপাশি প্রায় ৫ লক্ষ কাঁচা ইট গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
সূত্রে আরো জানা যায়, উত্তর কাট্টলীতে বঙ্গোপসাগর তীরবর্তী সংরক্ষিত ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের নিকটবর্তী প্রায় শতাধিক একর সরকারি খাস জায়গা ঘিরে গড়ে উঠা কেএনএল ব্রিকস ও এমআরএস ব্রিকস ইটভাটা উচ্ছেদের জন্য ২০১৩ সালে কার্যক্রম শুরু হলে অবৈধ দখলদাররা উচ্চ আদালতে রিট করেন। আদালতের রিটের কারণে দীর্ঘদিন ধরে সরকারি খাস জায়গা উদ্ধার এবং ইটভাটা উচ্ছেদ কার্যক্রমে স্থবিরতা ছিল।
সম্প্রতি রাষ্ট্রপক্ষ সরকারি খাস জায়গায় অননুমোদিতভাবে বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী সংরক্ষিত ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের কোল ঘেঁষে গড়ে উঠা পরিবেশ বিনষ্টকারী ইট ভাটাগুলোর বিষয়ে মহামান্য হাইকোর্টের নজরে আনলে আদালত জমির মালিকানা না থাকা, সরকারি খাস জায়গায় ইটভাটা স্থাপন এবং পরিবেশ আইন বিরোধী হওয়ায় সেগুলোর দায়ের করা রিট খারিজ করে দেন। অন্যদিকে বায়েজিদ-ফৌজদারহাট সিডিএ লিংক রোড এলাকায় সীতাকুণ্ড উপজেলা ভূমি অফিসের অধিক্ষেত্রে অবৈধভাবে গড়ে উঠা আবদুস সোবহান ব্রিকস (এসবি ব্রিকস) ইটভাটাটিও ধ্বংস করা হয়। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উমর ফারুক আজাদীকে বলেন, মঙ্গলবার সকাল থেকে স্কেভেটর দিয়ে ইটভাটা তিনটি গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। অভিযানে সরকারি প্রায় ১৫১ একর খাস জমি উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত জমির মূল্য আনুমানিক ৫০ কোটি টাকার বেশি। পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয়ের পরিচালক নূরুল্লাহ নূরী আজাদীকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা পরিবেশ ছাড়পত্র ব্যতিরেখে অবৈধভাবে ইটভাটা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন। তারা আদালতের দ্বারস্থ হওয়ায় দীর্ঘদিন উচ্ছেদ কার্যক্রম বন্ধ ছিল। উচ্চ আদালত তাদের রিট খারিজ করে দিয়েছেন। আমরা জেলা প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে ইটভাটাগুলো উচ্ছেদ করেছি।