৫০০ টাকার ফি ৩ হাজার টাকা করার প্রস্তাব

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ৬ অক্টোবর, ২০২১ at ৫:১০ পূর্বাহ্ণ

বন্দর ও শিপিং কর্পোরেশনসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের দুটি আবর্জনাগারে বর্জ্য অপসারণ করে। এক্ষেত্রে প্রতি টন বর্জ্য অপসারণের জন্য চসিককে পরিশোধ করতে হয় ৫০০ টাকা। এ অবস্থায় যেসব বর্জ্য অপসারণ করা হয় সেগুলোকে সাত ক্যাটাগরিতে ভাগ করে আলাদা আলাদা ফি নির্ধারণের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব করছে চসিক। এক্ষেত্রে প্রতি টন আবর্জনা অপসারণ ফি সর্বনিম্ন এক হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ তিন হাজার টাকার প্রস্তাব করা হচ্ছে। দুয়েকদিনের মধ্যে প্রস্তাবনাটি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর কথা রয়েছে। নতুন করে প্রস্তাবিত ফি অনুমোদন হলে রাজস্ব আদায় বাড়বে চসিকের। অবশ্য ইতোপূর্বে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনও বর্জ্য অপসারণ ফি নির্ধারণে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছিল। সেখানে আড়াই হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা ফি এর প্রস্তাব করা হয়েছিল। ওই হিসেবে চসিকের প্রস্তাব ঢাকার চেয়ে অর্ধেক ও সহনশীল।
চসিক সূত্রে জানা গেছে, তাদের প্রস্তাবনায় প্রতি টন নির্মাণ বর্জ্য অপসারণে এক হাজার ৫০০ টাকা ফি নির্ধারণের কথা বলা হয়। এছাড়া প্রতি টন অক্ষতিকর শিল্প বর্জ্য তিন হাজার টাকা, পচনশীল বর্জ্য দেড় হাজার টাকা, অপ্রয়োজনীয় (পেপার, প্লাস্টিক) বর্জ্য এক হাজার টাকা, সিরামিক বর্জ্য তিন হাজার টাকা, ধাতব বর্জ্য দুই হাজার টাকা, প্রশমিত রসায়নিক বর্জ্য দুই হাজার ৫০০ টাকা এবং বিবিধ বর্জ্যর জন্য এক হাজার টাকা প্রস্তাব করা হচ্ছে। এর সঙ্গে ভ্যাট যোগ হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চসিকের উপ-প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মো. মোরশেদুল আলম চৌধুরী দৈনিক আজাদীকে বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন মন্ত্রণালয়ে বর্জ্য ডাম্পিং করার জন্য ফি নির্ধারণ করতে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব দিয়েছে। তারা একটি খসড়াও দিয়েছে। ওই খসড়ার বিপরীতে আমাদের কাছে মতামত চাওয়া হয়। এরপ্রেক্ষিতে আমরাও প্রস্তাব পাঠাবো। তবে ঢাকার প্রস্তাবে যে পরিমাণ ফি এর কথা বলা হয়েছে সেখানে টাকার পরিমাণ অনেক বেশি। ওই টাকা ধার্য করলে কেউ বর্জ্য অপসারণে আগ্রহী হবে না। তাই আমরা সহনশীল হার প্রস্তাব করছি। এটা অনুমোদিত হলে আমাদের রাজস্ব আদায় বাড়বে। যারা বর্জ্য অপসারণ করবেন তাদের উপরও চাপ হবে না।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন আওতাধীন এলাকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সংস্থা, শপিংমল, ফুড এন্ড বেভারেজ কোম্পানি, ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ও নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের অক্ষতিকর বর্জ্য অপসারণের ফি নির্ধারণের জন্য তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছিল। কমিটি বর্জ্যগুলোকে সাত ক্যাটাগরিতে ভাগ করে ফি এর একটি খসড়া তৈরি করে। যা একই বছরের ১৭ নভেম্বর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করে অনুমোদনের জন্য। ওই খসড়াটি গত ৮ এপ্রিল চসিকের কাছে পাঠিয়ে মতামত চেয়েছেলি মন্ত্রণালয়। তখন চসিক কোনো উত্তর দেয়নি। সর্বশেষ গত ৩ অক্টোবর স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব নুমেরী জামান মতামত পাঠানোর জন্য চসিক প্রধান নির্বাহীকে তাগাদা দিয়ে নির্দেশনা দেয়। এর প্রেক্ষিতে বর্জ্য অপসারণ ফি এর তালিকা তৈরি করে চসিক। তবে চসিকের প্রস্তাবিত ফি ঢাকা উত্তরের চেয়ে প্রায় অর্ধেক।
ঢাকা উত্তরে প্রস্তাবে প্রতি টন নির্মাণ বর্জ্য অপসারণে আড়াই হাজার টাকা, অক্ষতিকর শিল্প বর্জ্য পাঁচ হাজার টাকা, পচনশীল বর্জ্য তিন হাজার টাকা, অপ্রয়োজনীয় (পেপার, প্লাস্টিক) বর্জ্য দুই হাজার টাকা, সিরামিক বজ্য পাঁচ হাজার টাকা, ধাতব বর্জ্য তিন হাজার টাকা, প্রশমিত রসায়নিক বর্জ্য চার হাজার টাকা এবং বিবিধ বর্জ্যর জন্য আড়াই হাজার টাকা নির্ধারণের কথা বলা হয়।
স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব নুমেরী জামান জানান, সিটি কর্পোরেশন আদর্শ কর তফসিল, ২০১৬ অনুযায়ী সিটি কর্পোরেশনের সেবা গ্রহণকারীরা ইমারতের বার্ষিক কর মূল্যায়নের উপর সর্বোচ্চ সাত শতাংশ হারে ময়লা অপসারণ রেইট পরিশোধ করে। এর বাইরে বর্জ্য অপসারণ সংক্রান্ত কোনো ফি নাই। ফলে বর্জ্যের ধরণ অনুযায়ী বর্জ্য অপসারণ ফি নির্ধারণে ঢাকা উত্তরের প্রস্তবনাটি পর্যালোচনার জন্য অন্যান্য সিটি কর্পোরেশনের মতামত গ্রহণ করা প্রয়োজন। তাই সিটি কর্পোরশনের অধিক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সংস্থা, হোটেল, শপিংমল, নির্মাণ প্রতিষ্ঠান, ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রস্তুতকৃত অক্ষতির বর্জ্য অপসারণ ফি নির্ধারণের প্রস্তাবের উপর প্রস্তাব পাঠাতে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচকবাজার ওয়ার্ডে ভোট গ্রহণ কাল
পরবর্তী নিবন্ধমিয়ানমার সীমান্তে অবৈধ কর্মকাণ্ড বন্ধে প্রয়োজনে গুলি চালানো হবে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী