ময়মনসিংহের ভালুকা থেকে গত ১৬ ডিসেম্বর নোয়াখালীর চৌমুহনী বাজার যাওয়ার পথে কাভার্ড ভ্যান ভর্তি নারিশ ফিড কোম্পানির লুট হওয়া ৫শ বস্তা মুরগির খাদ্য রাউজান থানা পুলিশ ফটিকছড়ির এক সাবেক চেয়ারম্যানের ঘর থেকে উদ্ধার করেছে। গতকাল শুক্রবার ১২ লাখ টাকা মূল্যের মালামাল উদ্ধার করার অভিযানে ঘটনার সাথে জড়িত দুজনকে আটক করেছে পুলিশ।
আটক দুজন হচ্ছে ফেনী জেলার ইসলামপুর পাঁচ গাছিয়ার প্রয়াত আবদুল্লাহর ছেলে ও কাভার্ড ভ্যান চালক মো. নুর আলম ওরফে মামুন (২৪) ও ফটিকছড়ি উপজেলার জাফতনগর ইউনিয়নের ১নম্বর ওয়ার্ডের প্রয়াত আবদুর রশিদের ছেলে সাইদুল ইসলাম (৩৮)।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ময়মনসিংহের ভালুকা থেকে নারিশ ফিড কোম্পানি বস্তাভর্তি মুরগির খাদ্য কাভার্ড ভ্যানে নোয়াখালীর চৌমুহনী বাজারে পাঠিয়েছিল। একটি চক্র নির্দিষ্টস্থানে না নিয়ে খাদ্যভর্তি কাভার্ড ভ্যানটি নিয়ে আসে ফটিকছড়িতে। যথাসময়ে গন্তব্যে মুরগির
খাদ্য না পৌঁছায় কোম্পানি ম্যানেজার সাইদুর রহমান রতন ভালুকা থানায় অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তদের আসামি করে মামলা করে। পুলিশ প্রযুক্তি ব্যবহার করে জানতে পারে লুট করা মালামালের অবস্থান রাউজানের আশেপাশের এলাকায়। এমন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযানে নামে রাউজান থানা পুলিশ। সর্বশেষ পুলিশ লুণ্ঠিত
মালামালের অবস্থান শনাক্ত করে অভিযান চালায় ফটিকছড়ির জাফতনগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ইলিয়াছ চৌধুরীর বাড়িতে। পুলিশ জানিয়েছে দীর্ঘ সময় ধরে এই বাড়িতে চেয়ারম্যান পরিবারের কেউ না থাকে না। ওই বাড়িতে ছিলেন কেয়ারটেকার সাইদুল ইসলাম।
রাউজান থানার এসআই অজয় দেব শীল ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, মোবাইল ফোন ট্রেক করে ভ্যান চালককে হাটহাজারী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে লুন্ঠিত পণ্যের অবস্থান শনাক্ত করে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে জাফতনগর পুলিশ ফাঁড়ির সহায়তায় এই অভিযান চালানো হয়।
চেয়ারম্যান ইলিয়াছ চৌধুরীর বসতঘরের বিভিন্ন কক্ষে অভিযান চালিয়ে ৫শ বস্তা মুরগির খাদ্য জব্দ করে রাউজান থানা পুলিশ। এই ঘটনার সাথে বাড়ির কেয়ারটেকারসহ আরো লোকজনের সম্পৃক্ততা রয়েছে। জড়িতদের ধরার চেষ্টা হচ্ছে। এ বিষয়ে কোম্পানি ম্যানেজার রতন বলেন, ১৯টন মুরগির খাদ্য নিয়ে ময়মনসিংহের ভালুকা থেকে কাভার্ড ভ্যানটি নোয়াখালীর উদ্দেশ্যে ছাড়া হয়েছিল। গাড়িটি যথাসময়ে না পৌঁছায় ভালুকা ও রাউজান থানায় আলাদা অভিযোগ করি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইলিয়াছ চৌধুরীর ছেলে ইকবাল চৌধুরী বলেন, এ ঘটনায় আমরা বা আমাদের পরিবারের কোনো সদস্য জড়িত নই। আমরা কেউ গ্রামের বাড়িতে থাকি না। ৩০ বছর ধরে ওই বাড়িতে থাকেন কেয়ারটেকার।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল হারুন বলেন, ভালুকা থানায় প্রথমে জিডি হয়। সে জিডির ভিত্তিতে আমরা রাউজানে লোকেশন শনাক্ত করে মালামাল উদ্ধারের পর ভালুকা থানায় সোপর্দ করেছি।