আসন্ন জাতীয় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম–১৬ বাঁশখালী আসনে নৌকার সাথে মাঠে নির্বাচনী উত্তাপ ছড়াচ্ছেন আরও ৪ হেভিওয়েট প্রার্থী। প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার লড়াইয়ে মনোনয়ন দাখিলের শেষদিন এ আসনে ১৩ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল বাসার মো. ফখরুজ্জামানের কাছে ১০ জন এবং সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন আক্তারের কার্যালয়ে ৩জন।
মনোনয়ন ফরম জমা দেয়া প্রার্থীরা হচ্ছেন, বর্তমান সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী (আওয়ামী লীগ), দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ–সভাপতি মুজিবুর রহমান সিআইপি (স্বতন্ত্র), আব্দুল্লাহ কবির লিটন (স্বতন্ত্র), মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী (জাতীয় পার্টি), কামাল মোস্তফা চৌধুরী (জাসদ), আশীষ কুমার শীল (ন্যাপ), মো. খালেকুজ্জামান (স্বতন্ত্র), মোহাম্মদ এমরানুল হক (স্বতন্ত্র), মুহাম্মদ মামুন আবছার (এসপিপি), আবদুল মালেক (ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ), মো. মহিউল আলম চৌধুরী (বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট), মো. শফকত হোসাইন চাটগামী (ইসলামী ঐক্যজোট), এম জিল্লুর করিম শরীফি (বাংলাদেশ কংগ্রেস)।
দীর্ঘদিন ধরে বাঁশখালী আওয়ামী লীগে দলীয় কোন্দল ও রাজনৈতিক অবহেলায় এমপি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী গ্রুপ, সিআইপি মুজিবুর রহমান গ্রুপ ও আব্দুল্লাহ কবির লিটন গ্রুপ নামে ৩টি বলয়ে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চলে আসছিল। এই ৩ গ্রুপের আলাদা আলাদা শক্তি মাঠে প্রদর্শন ছিল মানুষের মুখে মুখে। আসন্ন নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন বাঁশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বিগত দুইবারের এমপি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী। দলীয় মনোনয়নে ব্যর্থ হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম নিয়েছেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ–সভাপতি মুজিবুর রহমান সিআইপি এবং দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আব্দুল্লাহ কবির লিটন। নির্বাচনী মাঠে আছেন জোটবদ্ধ জাতীয় পার্টির নেতা সাবেক এমপি ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী এবং জাসদের চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি (স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান) কামাল মোস্তফা চৌধুরী।
বাঁশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল গফুর বলেন, বাঁশখালীতে উন্নয়নের ধারাবাহিতায় নৌকা অবশ্যই জিতবে। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার অধিকার সবার আছে। এই প্রভাব নৌকাতে পড়বে না।
বর্তমান সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী এমপি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে আবারো নৌকা প্রতীক দিয়ে কৃতজ্ঞ করেছেন। বাঁশখালীতে বিগত ১০ বছরে আমি ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। উন্নয়ন দেখে জনগণ ভোট দিয়ে আমাকে আবারো নির্বাচিত করবে। যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর সুনাম রক্ষার্থে নৌকার পক্ষে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি।
দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ–সভাপতি শিল্পপতি মুজিবুর রহমান সিআইপি বলেন, বাঁশখালীতে নিজেদের উদ্যোগে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, মাদরাসা ও স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছি। আমাদের পরিবারের বিভিন্ন ধরনের ১৭টি শিল্প প্রতিষ্ঠান নিয়ে গঠিত স্মার্ট গ্রুপে কর্মরত ২৫ হাজার কর্মকর্তা–শ্রমিকের মধ্যে প্রায় ১৮ হাজারই বাঁশখালীর বাসিন্দা। আমরা ৭ ভাই বাঁশখালী জুড়ে বহুমুখী জনসেবায় নিয়োজিত। আওয়ামী লীগের রাজনীতির জন্য আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে জড়িত। জনগণের দাবির প্রেক্ষিতে এবং প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনা অনুসারে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করছি।
দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আব্দুল্লাহ কবির লিটন বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম নিয়েছি। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে মাঠ পর্যায়ে আমার অবদান আছে কিনা বাঁশখালীবাসী জানেন। নয়তো আমার নাম বাঁশখালীবাসীর মুখে মুখে হতো না।
জাতীয় পার্টির নেতা সাবেক এমপি ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আমি জাতীয় পার্টি থেকে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছি। প্রাণপণ লড়াই চালিয়ে যাব।
জাসদের দক্ষিণ জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কামাল মোস্তফা চৌধুরী বলেন, দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচনী ফরম জমা দিয়েছি। নির্বাচন করার জন্য সকল প্রস্তুতি আছে।
বাঁশখালী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. হারুন মোল্লা বলেন, বাঁশখালীতে নির্বাচনী মাঠে উত্তাপ থাকলেও আইনশৃক্সখলা শান্তিপূর্ণ রয়েছে। মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৭০ হাজার ৭৫৫ জন।