৪ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের লক্ষ্য

কেইপিজেডে চলছে হাইটেক পার্কের নির্মাণ কাজ নির্মিত হবে ১৮ তলার ২২টি ভবন

আনোয়ারা প্রতিনিধি | শনিবার , ২৮ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৭:৪৩ পূর্বাহ্ণ

আনোয়ারা কোরিয়ান ইপিজেডে ৪ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ লক্ষ্যমাত্রায় হাইটেক পার্ক নির্মাণের কাজ চলছে। এটি হবে তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) খাতে বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ। এখানে ১৮ তলা বিশিষ্ট ২২টি ভবন নির্মিত হবে। পার্কে যাতায়াতের জন্য নির্মিত হয়েছে সোয়া দুই কিলোমিটারের সড়ক। ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হলে বিনিয়োগ আসা শুরু হবে বলে জানিয়েছে কেইপিজেড সংশ্লিষ্ট সূত্র।

 

দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালিভিত্তিক যৌথ বিনিয়োগে নির্মিত হবে দেশের বৃহত্তম এই হাইটেক পার্ক। যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালিকে বিশ্বের তথ্য প্রযুক্তির রাজধানী বলা হয়ে থাকে। এখানে সেমিকন্ডাক্টর, সফটওয়্যার আর নতুন নতুন সব প্রযুক্তির কারবার। হাইটেক পার্কের জন্য টেকভিশন (বিডি) লিমিটেড নামে কোম্পানিও গঠন করা হয়েছে। ‘ওয়ার্ক এন্ড স্ট্যা’ কনসেপ্টে কয়েক ধাপে নির্মিত হবে ২২টি ভবন। যার প্রত্যেকটিই হবে ১৮ তলা উচ্চতার।

এই পার্কে ঠিক কতটা বিনিয়োগ আসবে তা বৈশ্বিক অর্থনীতির উপর নির্ভর করবে জানিয়ে কেইপিজেড সূত্র জানায়, এখনই অনেক কিছু খোলাসা করা যাচ্ছে না। ৩৬০ মিলিয়ন ডলারের বিদেশী বিনিয়োগ আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। সবকিছু মিলিয়ে এখানে ৪ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ হবে। এতে কর্মসংস্থান হবে ২০ হাজার মানুষের। এই পার্কের আয়তন হবে প্রায় ১০০ একর। পাঁচটি ভবনের নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে এবং খুব শিগগিরই আরও কয়েকটি ভবন নির্মিত হবে।

ইয়ংওয়ান করপোরেশনের মালিকানাধীন কেইপিজেড আরও ৫০ একর জমি নিয়ে কাজ করছে, যেখানে ২২ তলার একটি আইটি ভবন থাকবে। এই পার্ক বা কমপ্লেক্সটিতে বিভিন্ন সফটওয়্যার ডেভলপমেন্ট সুবিধা ছাড়াও সুউচ্চ আইটি ভবন, বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল এবং কমিউনিটি পরিষেবাসহ অ্যাপার্টমেন্টও থাকবে। দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে হাইটেক পার্কটিশিক্ষা, কারিগরি প্রশিক্ষণ এবং মানবসম্পদ উন্নয়নে সহায়তা প্রদান করবে।

ইয়ংওয়ান সূত্র জানায়, কেইপিজেডের মালিকানা প্রতিষ্ঠান ইয়ংওয়ান সারাবিশ্বে বছরে ৩০ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা পরিচালনা করছে। এর মধ্যে বাংলাদেশে ব্যবসার পরিমাণ এক তৃতীয়াংশ। কেইপিজেডে আইটি পার্ক হলে এখান থেকেই ভিয়েতনামসহ অন্যান্য দেশে তাদের পরিচালিত কোম্পানিগুলোতে আইটি সহায়তা দেয়া হবে।

২০২১ সালে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ, স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড এবং কোরিয়ান রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলের (কেইপিজেড) মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। মাঝখানে বৈশ্বিক করোনা মহামারীর কারণে কাজের গতি কিছুটা শ্লথ ছিল। বর্তমানে আবারও গতি পেয়েছে এই প্রকল্প।

প্রস্তাবিত হাইটেক পার্কে হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার, ডেটা সেন্টার, গবেষণা ও উন্নয়ন কেন্দ্র, প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসহ নানা খাতে বিদেশি বিনিয়োগের প্রত্যাশা করা হচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে এর মধ্যে বলা হয়েছে, বেসরকারি এই হাইটেক পার্কে বিনিয়োগকারীরা ১২ ধরনের সুযোগসুবিধা পাবেন। এছাড়া চুয়েটে আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর, সিঙ্গাপুর ব্যাংকক মার্কেটে সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক এবং চান্দগাঁওয়ে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং সেন্টার স্থাপনের মাধ্যমে চট্টগ্রামে আইটি বিজনেস হাব হিসেবে গড়ে তোলার প্রক্রিয়া চলছে।

আইটি পার্ক প্রকল্পের অগ্রগতি প্রসঙ্গে কেইপিজেডের উপ মহাব্যবস্থাপক মুশফিকুর রহমান বলেন, আইটি খাতে বিনিয়োগের জন্য সব রকমের প্রস্তুতি চলছে। ভবনের কাজ শেষ হলে বিনিয়োগ আসা শুরু হবে। দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালিভিত্তিক কোম্পানির যৌথ বিনিয়োগে এই আইটি পার্ক হবে। বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিষ্ঠান ইয়াংওয়ানের জন্য ১৯৯৯ সালে চট্টগ্রামের আনোয়ারায় কেইপিজেড প্রতিষ্ঠায় ২ হাজার ৪৯২ একর জমি বরাদ্দ করা হয়। বর্তমানে কেইপিজেডে ৪০টি অত্যাধুনিক সবুজ কারখানা রয়েছে। এছাড়া আরও ৩৫টি কারখানা নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমালয়েশিয়ায় দুই লাখ বাংলাদেশির বৈধ হওয়ার সুযোগ
পরবর্তী নিবন্ধনদীর বালিতে খাল ভরাট!