১৯৬৬ সালের নভেম্বর মাসে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের যাত্রা শুরু হয়। তখন বইসংখ্যা ছিলো মাত্র ৩০০। ভবনের নিচতলায় ১২০০ বর্গ ফুট বিশিষ্ট একটি কক্ষই ছিলো গ্রন্থাগার। ১৯৬৮ সালে বর্তমান প্রশাসনিক ভবনের (মল্লিক ভবন) দক্ষিণ পাশে মানবিক ও সমাজবিজ্ঞানের ওপর ১৪ হাজার বই নিয়ে ক্ষুদ্র পরিসরে গ্রন্থাগারটির প্রতিষ্ঠা হয়।
বর্তমানে ৫৬ হাজার ৭০০ বর্গফুট পরিমিত গ্রন্থাগারের অবস্থান হলো কলা অনুষদের দক্ষিণ পাশে চাকসু ভবনের পূর্ব পাশে ও দৃষ্টিনন্দন আইটি ভবনের পশ্চিম পাশে। গ্রন্থাগার ভবনে কলা, বিজ্ঞান, বাণিজ্য, সমাজবিজ্ঞান, আইন অনুষদের পৃথক পাঠকক্ষ রয়েছে। দেশি–বিদেশি বই, জার্নালের পরিমাণ প্রায় ৪ লাখের অধিক। ১২টি কম্পিউটার ও একটি সার্ভারও স্থাপন করা হয়। গ্রন্থাগার ভবনে পাঠকের ব্যবহারের সুবিধার্থে রয়েছে আলাদা পাঠকক্ষ।
গ্রন্থাগারের দুষ্প্রাপ্য এবং পান্ডুলিপি শাখায় এমন কতগুলো সংগ্রহ আছে যেগুলো প্রাচীন ভূজপত্র, তানপত্র, তুনট কাগজে লেখা। এই শাখায় রয়েছে গবেষকদের গবেষণাকর্মের উপাত্ত হিসেবে চিহ্নিত প্রাচীন পান্ডুলিপি দুর্লভ বই, দলিল। পুঁতি সংগ্রাহক আবদুল সাত্তার চৌধুরী সংগৃহীত পুঁথি, পুস্তক ও পান্ডুলিপি নিয়েই গ্রন্থাগারে প্রথম দুষ্প্রাপ্য শাখা খোলা হয়। পরে মুন্সী আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ প্রদত্ত সংগ্রহ, প্রফেসর ড. আবদুল করিম সংগ্রহ (চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি), প্রফেসর ড. আবদুল গফুর প্রদত্ত সংগ্রহ, ইবনে গোলাম নবী প্রদত্ত সংগ্রহ, বাবু কাসেম চন্দ্র রক্ষিত প্রদত্ত সংগ্রহ রশীদ আল ফারুকী প্রদত্ত সংগ্রহ, প্রফেসর ড. ভূঁইয়া ইকবাল প্রদত্ত সংগ্রহও এ শাখাকে করেছে সমৃদ্ধ। এই শাখায় আরো রয়েছে হাতে তৈরি তুনট কাগজ তানপাতা ও বাঁশ বন্ডের উপর বাংলা সংস্কৃত, পালি, আরবি, ফার্সি ও উর্দু ভাষায় লেখা ৫৬৫ পান্ডুলিপি। গ্রন্থাগারের প্রথম দুষ্প্রাপ্য শাখায় এমন কিছু সংগ্রহ আছে যা বাংলাদেশের অন্য কোনো গ্রন্থাগারের সংগ্রহে নেই। এ শাখায় ১৮৭২ থেকে ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রকাশিত প্রায় সাড়ে তিন হাজার পুরোনো সাময়িকী রয়েছে।
গ্রন্থাগার নিয়ে রয়েছে বিভিন্ন অভিযোগও। এর নেপথ্যে রয়েছে সুযোগ–সুবিধার অভাব। বই সংগ্রহের ব্যবস্থা, পানির পর্যাপ্ত ফিল্টার না থাকা, একাডেমিক বই না থাকা ইত্যাদি। এ নিয়ে নৃবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, লাইব্রেরিতে বই নিয়ে লেখা নিষেধ। লাইব্রেরিতে নেই পাঠ্যসূচির অনেকগুলি বই।