৪ মে’র পর সড়কে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহন চালুর ঘোষণা মালিক গ্রুপের

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ৩ মে, ২০২১ at ৫:৩৫ পূর্বাহ্ণ

করোনা প্রাদুর্ভাবে গত ১৪ এপ্রিল থেকে কঠোর লকডাউনে সরকারি বিধি নিষেধ থাকার কারণে গণপরিবহন চলাচলে বন্ধ রয়েছে। প্রাথমিকভাবে এক সপ্তাহ সময়ের জন্য নির্দেশনা থাকলেও পরবর্তীতে ৪ মে পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা বর্ধিত করা হয়। আর ৪ মে’র পর গণপরিবহন চালুর ঘোষণা দিয়েছেন চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপ। গতকাল রোববার চট্টগ্রাম আন্তঃজেলা বাস মালিক সমিতির অফিসে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিজেরা সড়কে গণপরিবহন চালুর ঘোষণা দেন সংগঠনটির নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের মহাসচিব মঞ্জুরুল আলম মঞ্জু। সংবাদ সম্মেলনে গণপরিবহন চালুর পাশাপাশি বিনা সুদে সড়ক পরিবহন মালিকদের ঋণ প্রদান, করোনাকালীন সময়ে এক বছরের জন্য ব্যাংকঋণ ও কিস্তির সুদ মওকুপ, কিস্তির টাকার জন্য হয়রানি ও মামলা প্রদান বন্ধ, করোনা মহামারি শেষ হওয়া পর্যন্ত ডকুমেন্ট হালনাগাদ করার সময় বৃদ্ধি এবং সকল পরিবহন শ্রমিকদের বেঁচে থাকার মতো আর্থিক সহযোগিতা প্রদানসহ পাঁচ দফা দাবি জানানো হয়।
এতে শ্রমিকদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সড়ক শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম-সিলেট পূর্বাঞ্চলের সভাপতি মৃনাল চৌধুরী। উপস্থিত ছিলেন মালিক গ্রুপের সভাপতি খোরশেদ আলম, সহ-সভাপতি বদরুল হুদা মুরাদ, অতিরিক্ত মহাসচিব আহসান উল্লাহ চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক এসএম আবু তৈয়ব, মনসুর রহমান চৌধুরী, যুগ্ম সম্পাদক মো. শাহজাহান, সাংগঠনিক সম্পাদক খোরশেদ আলম, প্রচার সম্পাদক আবুল বশর চৌধুরী, মো জাফর, মোরশেদুল আলম, বাংলাদেশ সড়ক শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ মুসা, সাধারণ সম্পাদক অলি আহমদ, আন্তঃজেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের ইমাম শরীফ চৌধুরী প্রমুখ।
চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের মহাসচিব মঞ্জুরুল আলম মঞ্জু রোববার সন্ধ্যায় দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী এতোদিন গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রাখা হয়। আগামী ৪ মে পর্যন্ত আমরা দেখবো। সকলের (মালিক-শ্রমিকদের) পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গেছে। এখন স্বাস্থ্যবিধি মেনে সড়কে কেউ গাড়ি চালাতে চাইলে আমাদের কোন আপত্তি থাকবে না।’
এর আগে সংবাদ সম্মেলনে মহাসচিব মঞ্জুরুল আলম মঞ্জু বলেন, ‘লকডাউনে সবকিছু খোলা। রাস্তায় দোকানপাটে স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই। বেশি ভাড়ায় স্বাস্থ্যবিধি না মেনে অন্য সব পরিবহনও চলাচল করছে। শুধু গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, করোনা সংক্রমণের জন্য শুধু একমাত্র বাস ও চেয়ার কোচগুলো দায়ী। স্বাস্থ্যবিধি মেনে দুয়েকদিনের মধ্যে গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দেয়া না হলে নিজ উদ্যোগে সড়কে গণপরিবহন চালাতে বাধ্য হব।’ লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বর্তমান সময়ে সারাদেশের পরিবহন ব্যবস্থা মহাসংকটে এবং ধ্বংসের মুখে পড়েছে। লকডাউন কিংবা গণপরিবহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও পরিবহনের প্রাতিষ্ঠানিক খরচ বন্ধ থাকে না। বিভিন্ন পরিবহন সার্ভিসের প্রধান ও শাখা কার্যালয়ের ভাড়া, কর্মচারিদের বেতন ইত্যাদি মালিকের কাঁধের ওপর চড়ে বসে। আবার পরিবহন শ্রমিকরা বেকার হয়ে পড়ে।
গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন: গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দেওয়ার দাবিতে গতকাল রোববার সকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছে চট্টগ্রাম অটোরিকশা-অটোটেম্পো শ্রমিক ইউনিয়ন। এসময় চট্টগ্রাম অটোটেম্পো শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. হারুনুর রশিদ বলেন, ঈদকে সামনে রেখে দোকানপাট খুলে দেওয়া হলেও গণপরিবহন বন্ধ করে রাখা হয়েছে। এতে হাজার হাজার পরিবহন শ্রমিক আর্থিক কষ্টে আছে। সরকার থেকেও কোনো রকম সহায়তা করা হচ্ছে না। ফলে পরিবার পরিজন নিয়ে দুর্বিষহভাবে দিনাতিপাত করছেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমরা গণপরিবহন চালাতে চাই। আমাদেরকে অনুমতি দেওয়া হোক। অন্যথায় পরিবার পরিজন নিয়ে আমাদের পথে বসতে হবে।’
মানববন্ধনে উপস্থিাত ছিলেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের সভাপতি মৃণাল চৌধুরী, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম অঞ্চলের সভাপতি মো. মূছা, সাধারণ সম্পাদক অলি আহমদ, কার্যকরী সদস্য রবিউল মাওলা, কেন্দ্রিয় অটোটেম্পো শ্রমিক ইউনিয়ন নেতা শফিকুর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক মো. সোলাইমান, হাসান মোল্লা প্রমুখ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধগুম-খুনের হুমকি পেয়ে মুনিয়ার বোনের জিডি
পরবর্তী নিবন্ধদোষ না করেও দেড় বছর ধরে কারাগারে