১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ দেশে প্রথম রাষ্ট্রভাষা দিবস পালন করা হয়। ওইদিন বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে পালিত প্রথম হরতাল কর্মসূচিতে পুলিশি নির্যাতনের প্রতিবাদে প্রতি বছর ১১ মার্চ রাষ্ট্রভাষা দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই অনুযায়ী ১৯৪৯ সালে দ্বিতীয়, ১৯৫০ সালে তৃতীয় এবং ১৯৫১ সালে চতুর্থবারের মতো রাষ্ট্রভাষা দিবস পালিত হয়। ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ প্রথম রাষ্ট্রভাষা দিবসের প্রাক্কালে ঢাকার সচিবালয়ের গেটে পিকেটিং করতে গিয়ে অনেক ভাষাকর্মী আহত হন, অনেকে গ্রেপ্তার হন। ১১ মার্চের আন্দোলন শুধু ঢাকাতেই সীমাবদ্ধ ছিল না, পূর্ববাংলার সব জেলাতেই ছড়িয়ে পড়ে।
ঐতিহাসিক ১১ মার্চের ঘটনা তাই ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। শুধু তাই নয়, পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর এদেশে এটাই ছিল কোনো হরতাল কর্মসূচি, যা ভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে। ১১ মার্চ প্রতিবাদের যে ভিত রচনা হয়েছিল তারই সূত্র ধরে তৎকালীন সরকার ১৫ মার্চ রাষ্ট্রভাষা চুক্তি করতে বাধ্য হয়। এই সংগ্রামের পূর্ণতা লাভ করে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি।
১১ মার্চ হরতালে পূর্ব পাকিস্তানের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মঘট, ঢাকা শহরের বিক্ষোভ মিছিল ও পিকেটিং করা হয়। ঢাকার সচিবালয়ের সামনের গেটে পিকেটিং করার সময় গ্রেপ্তার হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, কাজী গোলাম মাহবুব, শামসুল আলম, আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরী, অলি আহাদ, শওকত আলী, রণেশ দাসগুপ্তসহ অনেকে। পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের আহ্বায়ক নাঈমুদ্দিন আহমদ এক বিবৃতিতে বলেন, হরতালের সময় ২০০ জন আহত, ১৮ জন গুরুতর আহত এবং ৯শ জন গ্রেপ্তার হন।