করোনা মহামারীর অভিঘাত না কাটতেই রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দেশে ব্যবসা বাণিজ্য ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। এতে অনেক ব্যবসায়ী ঋণের কিস্তি সময় মতো পরিশোধে ব্যর্থ হয়েছেন। এ সব ব্যবসায়ীদের ঋণ পরিশোধে বিশেষ সুবিধা ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ঋণের কিস্তির অর্ধেক দিলেই খেলাপি থেকে মুক্তি পাবে ব্যবসায়ীরা। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, মেয়াদি ঋণের চলতি বছরের এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত মেয়াদের কিস্তির অর্ধেক টাকা জুনের মধ্যে পরিশোধ করলে খেলাপি হবে না। গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবৃদ্ধি ও নীতি বিভাগ ‘ঋণ শ্রেণিকরণ’ সংক্রান্ত নির্দেশনা দিয়ে একটি সার্কুলার জারি করে। সার্কুলারটি সব তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে। খবর বাংলানিউজের।
সার্কুলারে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে বহির্বিশ্বে দীর্ঘায়িত হওয়ার কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালসহ বিভিন্ন উপকরণের দাম ও আমদানি খরচ বেড়েছে। ফলে ঋণগ্রহীতারা তাদের ঋণের বিপরীতে কিস্তির সম্পূর্ণ অংশ পরিশোধে অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে উৎপাদন ও সেবা খাতসহ সব ধরনের ব্যবসা চলমান রাখা ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড গতিশীল রাখতে নতুন নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
নির্দেশনা অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ এপ্রিল বিদ্যমান খেলাপি নয় এমন মেয়াদি ঋণের (স্বল্পমেয়াদী কৃষি ও ক্ষুদ্র ঋণসহ) বিপরীতে ২০১৩ সালের এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত প্রদেয় কিস্তির কমপক্ষে ৫০ শতাংশ শেষ কর্ম দিবসের মধ্যে পরিশোধ করা হলে, ওই ঋণগুলো ত্রৈমাসিকে ভিত্তিতে খেলাপি করা হবে না। এ সময়ে কিস্তির যেসব টাকা বকেয়া থাকবে, তা ঋণের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে সম–কিস্তিতে অথবা এক কিস্তিতে পরিশোধ করতে হবে। নির্দেশনা মোতাবেক ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে ঋণগুলো যথানিয়মে শ্রেণিকরণের আওতাভুক্ত হবে।
পুনঃতফসিলের মাধ্যমে অশ্রেণিকৃত হিসেবে প্রদর্শিত ঋণের জন্যও এ সার্কুলারের প্রদত্ত সুবিধা প্রযোজ্য হবে। শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলো তাদের প্রদত্ত বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও এ সুবিধা পাবে। এ সার্কুলারের আওতায় সুবিধাপ্রাপ্ত ঋণ বা বিনিয়োগের বিপরীতে যে পরিমাণ আরোপিত সুদ বা মুনাফা নগদে আদায় হবে তা আয় খাতে স্থানান্তর করা যাবে।