সেকান্দর মিয়ার লাশ ফ্রিজার গাড়িতে ছত্রিশ ঘণ্টা পর্যন্ত ঘরের সামনে রাখা আছে। সম্পত্তির ভাগ–বাটোয়ারা নিয়ে তার দুই সংসারের সন্তানদের মধ্যে চরম বিরোধ চলছে। প্রথম সংসারের সম্পত্তি বঞ্চিত সন্তানরা বাবার লাশ দাফনে বাধা দিচ্ছে। গতকাল রবিবার হাটহাজারী পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের ফটিকা এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, পূর্ব মেখল ৫ নং ওয়ার্ডের মরহুম দানা মিয়া সওদাগরের বাড়ির মৃত নকশু মিয়ার বড় পুত্র ও হাটহাজারী পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের স্থায়ী বাসিন্দা মো. সেকান্দর (৭০) শনিবার ভোর ৬টার দিকে মারা যান। মৃত্যুকালে তিনি দুই সংসারে মোট ৮সন্তান রেখে গেছেন। মৃত্যুর আগে সেকান্দর মিয়া তার সব সম্পত্তি দ্বিতীয় স্ত্রী ও তার সন্তানদের নামে হেবা রেজিস্ট্রি করে দেন। এ নিয়ে প্রথম সংসারের পাঁচ সন্তান এবং দ্বিতীয় সংসারের তিন সন্তানের মধ্যে দীর্ঘদিন দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। বাবার মৃত্যুর পর দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তানরা দাফনের আয়োজন করলে প্রথম স্ত্রীর সন্তানরা এতে বাধা দেন। তারা সম্পত্তির সুষ্ঠু বণ্টন না হওয়া পর্যন্ত মরদেহ দাফন করতে দিবেন না বলে ঘোষণা দেন।
সেকান্দার মিয়ার প্রথম স্ত্রীর মেয়ে আয়শা ও সম্প্রতি প্রবাস থেকে আসা সন্তান মনজু বলেন, বাবা আমাদের প্রাপ্য সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করে সব তার দ্বিতীয় স্ত্রী ও সন্তাদের দিয়ে গেছেন। আমরা এটার উপযুক্ত বণ্টন চাই। অপর দিকে দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তান ইমতিয়াজ বলেন, বাবার লাশ আগে দাফন করা হোক। এরপর পরে আমরা বৈঠকে বসে সমাধান করবো। খবর পেয়ে হাটহাজারী মডেল থানা পুলিশের এস আই জালাল ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয় পক্ষের সাথে কথা বলে বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধানের চেষ্টা করেন।
এদিকে বিকেলের দিকে স্থানীয় সংবাদকর্মী রেজাউল হাসান মিন্টু জানান, থানা পুলিশ ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উভয় পক্ষকে নিয়ে একটা স্ট্যাম্প করেছেন। মৃতদেহ দাফনের পর সম্পত্তির সুষ্ঠু বণ্টনের লক্ষ্যে উভয় পক্ষ বৈঠকে মিলিত হবেন। এছাড়া প্রথম ঘরের সন্তান মনজু ও আয়শা আকতার পক্ষকে চলাচলের রাস্তাসহ ২ গন্ডা জায়গা ২য় স্ত্রীর সন্তানরা বুঝিয়ে দিতে রাজি হন। এ বিষয়ে উভয়পক্ষ একমত হয়ে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করলে একইদিন বাদে মাগরিব মরহুমের জানাযা নামাজের সময় ঘোষণা করা হয়। পরে নিজ গ্রামের বাদামতল এলাকা ঈদগাহ মাঠে জানাযার নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মু. আবদুল্লাহ আল মুমিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন।












