ভূমিকম্পের তীব্র ঝাঁকুনিতে টেস্ট ম্যাচ তিন মিনিট থমকে থাকলেও থমকে থাকেনি বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়া। আগের দিন বিপর্যয়ে পড়া আয়ারল্যান্ড এ দিন বেশ লড়াই করেছে ব্যাটিংয়ে। প্রথম ইনিংসে বড় লিড পাওয়া বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসেও গড়ে তুলছে রানের পাহাড়। মিরপুর টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে বাংলাদেশ এগিয়ে আছে ৩৬৭ রানে। হাতে তাদের উইকেট আছে ৯টি। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে চালকের আসনে বসেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ৪৭৬ রানের জবাবে ২৬৫ রানে অলআউট হয় সফরকারী আয়ারল্যান্ড। ফলে প্রথম ইনিংস থেকে ২১১ রানে পিছিয়ে ফলো–অনে পড়ে আইরিশরা। কিন্তু আয়ারল্যান্ডকে ফলো–অন না করিয়ে আবারও ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে তৃতীয় দিন শেষে ১ উইকেটে ১৫৬ রান করেছে টাইগাররা। টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেটে ৯৮ রান করেছিল আয়ারল্যান্ড। ৫ উইকেট হাতে নিয়ে ৩৭৮ রানে পিছিয়ে ছিল আইরিশরা। ফলো–অন এড়াতে আরও ১৭৮ রান দরকার ছিল তাদের। তৃতীয় দিন সকালে বাংলাদেশের বোলারদের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটার আয়ারল্যান্ডের লরকান টাকার ও অভিষিক্ত স্টিফেন ডোহানি। হাফ–সেঞ্চুরির জুটি গড়ার পর বিচ্ছিন্ন হন তারা। ৫৮তম ওভারের প্রথম বলে ডোহানিকে বোল্ড করে জুটি ভাঙেন বাংলাদেশ স্পিনার তাইজুল ইসলাম। ৪টি চারে ৪৬ রান করেন তিনি। ষষ্ঠ উইকেটে ১৫০ বলে ৮১ রানের জুটি গড়েন টাকার–ডোহানি। একই ওভারের তৃতীয় বলে ক্রিজে আসা নতুন ব্যাটার এন্ডি ম্যাকব্রিনকে রানের খাতা খোলার আগেই বোল্ড করেন তাইজুুল। ১৭৫ রানে সপ্তম উইকেট পতনে ২০০’র নীচে গুটিয়ে যাবার শঙ্কায় পড়ে আয়ারল্যান্ড। কিন্তু সেটি হতে দেননি টাকার ও জর্ডান নিল। অষ্টম উইকেটে ৭৪ রান যোগ করে আইরিশদের স্কোর আড়াইশর কাছে নিয়ে যান তারা। হাফ–সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে থাকা নিলকে থামিয়ে বাংলাদেশকে ব্রেক–থ্রু এনে দেন পেসার এবাদত হোসেন। ৯ চারে ৪৯ রান করেন নিল। এরপর গ্যাভিন হোয়েকে পেসার খালেদ আহমেদ এবং ম্যাথু হামফ্রিজকে শিকার করে আয়ারল্যান্ডের ইনিংস ২৬৫ রানে আটকে দেন তাইজুল। সতীর্থদের যাওয়ার আসার মাঝে অন্য প্রান্তে ৭৫ রানে অপরাজিত থাকেন যান টাকার। ১৭১ বল খেলে ৭টি চারে নিজের ইনিংসটি সাজান তিনি। বাংলাদেশের তাইজুল ৭৬ রানে ৪ উইকেট নেন। এই ইনিংসের মাধ্যমে টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারে সাকিব আল হাসানের রেকর্ড স্পর্শ করলেন তিনি। সাকিব ৭১ এবং তাইজুল ৫৭ টেস্টে সমান ২৪৬টি করে উইকেট শিকার করেছেন। এছাড়া হাসান মুরাদ ও খালেদ আহমেদ ২টি করে উইকেট নেন। আইরিশদের ফলো–অন না করিয়ে আবারও ব্যাট করতে নেমে দলকে দারুণ সূচনা এনে দেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় ও সাদমান ইসলাম। ১৮৭ বল খেলে ১১৯ রানের জুটি গড়েন তারা। দু’জনই হাফ–সেঞ্চুরি করেছেন। টেস্ট ক্যারিয়ারে পঞ্চম হাফ–সেঞ্চুরি পূর্ণ করে ৬০ রানে আউট হন জয়। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে ৩৭ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে দিন শেষ করেন সাদমান ও মুমিনুল হক। অষ্টম হাফ–সেঞ্চুরির দেখা পাওয়া সাদমান ৫টি চারে ৬৯ রানে এবং ৪ বাউন্ডারিতে ১৯ রানে অপরাজিত আছেন মুমিনুল। আজ টেস্ট ম্যাচের চতুর্থ দিন।












