৩৩ বছর পর ফেরা

এসএম নাঈম উদ্দীন, বোয়ালখালী | সোমবার , ১১ মার্চ, ২০২৪ at ৮:৩৫ পূর্বাহ্ণ

১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ের সময় বন্যায় ভেসে গিয়েছিলেন আবুল হাশেম (৭৫)। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও হদিস না পেয়ে তার পরিবার ধরে নিয়েছিল হাশেম হয়ত আর বেঁচে নেই। কিন্তু দীর্ঘ তেত্রিশ বছর পর বাড়ি ফিরেছেন বোয়ালখালী উপজেলার পূর্ব জৈষ্ঠ্যপুরা সন্দ্বীপ পাড়া জাহাঙ্গীর মেম্বারের বাড়ির মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে আবুল হাশেম। জানা যায়, ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল ঘূর্ণিঝড়ের বন্যায় মেঘনা নদীর পানিতে ভেসে আবুল হাশেম চলে যান হাতিয়ায়। কিন্তু তিনি জীবিত ছিলেন। হাতিয়ার স্থানীয় বাসিন্দা কেবলা হুজুর নামের এক ব্যক্তি তাকে উদ্ধার করেন। সেই থেকেই হাশেম হুজুরের তত্ত্বাবধানে ছিলেন। হুজুরের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান কবুতর হোটেলে তিনি থাকতেন, খাবারও খেতেন সেখানে। মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় নামঠিকানা কিছুই জানতেন না তিনি। হাতিয়ার সড়কে সড়কে ঘুরে বেড়াতেন। অসুস্থ হলে হাতিয়ার স্থানীয় বাসিন্দারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গিয়ে তার চিকিৎসা করান।

গত জানুয়ারি মাসে ফেসবুকে আবুল হাশেমের একটি ভিডিও প্রচার হলে তার বোন নাছিমা বেগম তাকে প্রাথমিকভাবে চিনতে পারেন। নাছিমা বেগম বলেন, ভিডিওতে দেখে আমার ভাই বলে প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করতে পারি। পরে সরেজমিনে হাতিয়া গিয়ে তার শরীরের কিছু চিহ্ন ও আচার আচরণ দেখে নিশ্চিত হই যে এটি আমার ভাই। পরে ২২ জানুয়ারি আইনি সহযোগিতায় তাকে নিজ বাড়ি বোয়ালখালীর জৈষ্ঠ্যপুরাতে নিয়ে আসা হয়। আবুল হাশেমের স্ত্রী জরিনা বেগম বলেন, ১৯৯১ সালের বন্যায় তিনি হারিয়ে যান। আমরা মনে করেছিলাম তিনি আর বেঁচে নেই। তবে তেত্রিশ বছর পর আবার ফিরে পেলাম আমার স্বামীকে। বর্তমানে তিনি বিভিন্ন রোগে অসুস্থ। তার চিকিৎসার জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন। সামর্থ্যবানরা এগিয়ে আসলে তার চিকিৎসা করা সম্ভব হবে। এদিকে ৩৩ বছর পর তাকে খুঁজে পেয়ে তার পরিবারসহ আশপাশের শত শত মানুষ তাকে দেখতে আসে এবং ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেয়।

শ্রীপুরখরণদ্বীপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মোকারম বলেন, সমাজসেবা কার্যালয়ে তার বিষয়টি অবগত করেছি। তারা তার চিকিৎসা খরচের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিমের ইন্তেকাল
পরবর্তী নিবন্ধকুষ্টিয়ার সবুজেরই মেয়ে অভিশ্রুতি, জানাল ডিএনএ