৩২৩ সন্ত্রাসীর তালিকা সিএমপির

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ১০ মে, ২০২১ at ৪:৪৪ পূর্বাহ্ণ

১৩ বছর পর সিএমপির ১৬ থানা এলাকার সন্ত্রাসীদের তালিকা হালনাগাদ করা হয়েছে। তবে তালিকাটি নিয়ে ইতোমধ্যে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ তালিকা থেকে এমন কিছু নাম বাদ পড়েছে, যাদের বিরুদ্ধে মামলা চলছে, হয়ত তারা জামিনে আছেন। কিন্তু রাজনৈতিক প্রভাবশালী ব্যক্তিদের আশীর্বাদপুষ্ট হওয়ার কারণে তাদের নাম কৌশলে বাদ পড়েছে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের। এদিকে তালিকা করা হলেও এ ব্যাপারে মুখ বন্ধ রেখেছেন পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা। এর আগে ২০০৮ সালে সর্বশেষ সন্ত্রাসীদের তালিকা করেছিল সিএমপি।
পুলিশ সূত্র জানায়, নতুন তালিকা অনুযায়ী সিএমপির থানাগুলোতে সন্ত্রাসী আছে ৩২৩ জন। মূলত ডাকাতি, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, খুনসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িতদের সন্ত্রাসী তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে। তালিকাভুক্ত ৩২৩ সন্ত্রাসীর মধ্যে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও দলটির অঙ্গ সংগঠনের ৪৩ জন, বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনের ৩৮ জন এবং জামায়াত-শিবিরের ১৩ জন রয়েছে। ৩২৩ সন্ত্রাসীর মধ্যে বায়েজিদ বোস্তামী থানা এলাকায় ৮৫ জন, কোতোয়ালী থানায় ৪৪ জন, হালিশহর থানায় ৩৪ জন, ইপিজেড থানায় ২৫ জন, বাকলিয়া থানায় ২৪ জন, পাঁচলাইশ থানায় ২১ জন, ডবলমুরিং থানা এলাকায় ১৮ জন, চকবাজার থানায় ১৪ জন, খুলশী থানায় ১২ জন, পাহাড়তলী থানায় ১২ জন, পতেঙ্গা থানায় ১১ জন, কর্ণফুলী থানায় ১১ জন, আকবর শাহ থানায় ৭ জন, বন্দর থানায় ৩ জন ও চান্দগাঁও থানা এলাকায় ২ জন আছেন। সদরঘাট থানায় তালিকাভুক্ত কোনো সন্ত্রাসী নেই। ২০০৮ সালে সিএমপির সর্বশেষ তালিকায় সন্ত্রাসী ছিল ৪০৬ জন। ২০০৬ সালে ৩৯৬ জন সন্ত্রাসীকে তালিকাভুক্ত করেছিল সিএমপি। এর মধ্যে ৬৮ জন ছিল শীর্ষ সন্ত্রাসী। ২০২১ সালে করা সিএমপির নতুন সন্ত্রাসী তালিকায় কোতোয়ালী থানা এলাকায় ৪৪ সন্তাসীর মধ্যে আলোচিত নাম নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর। তার বিরুদ্ধে মামলা আছে ৯টি মামলা। আছে সিআরবির জোড়া খুনের আসামি যুবলীগকর্মী অজিত বিশ্বাস (৪৮), রাজিব দত্ত রিংকু (৩৮), শফি মোস্তফা (৪৫), ১৭ মামলার আসামি হাত কাটা ইদু (৪০), আব্দুল আল ফরহাদ ওরফে জেকি (২৩) ও ২০ মামলার আসামি জালাল আহাম্মদ প্রকাশ জইল্যা (৩৫)।
বাকলিয়া থানার তালিকার ১ নম্বরে আছে শীর্ষ সন্ত্রাসী মিয়াখান নগরের মোরশেদ খান (৪০)। মামলা আছে ১০টি। আছে ২৫ মামলার আসামি দিদারুল হক কাজেমী ওরফে কিরিচ বাবুল (৫২), ১১ মামলার আসামি এহতেশামুল হক ভোলা (৪৮)।
চকবাজার থানায় তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ৬ মামলার আসামি এনায়েত উল্লাহ। আছে ৫ মামলার আসামি নাছির উদ্দিন প্রকাশ ক্রেকার বাবুল (২৯)।
পাঁচলাইশ থানার তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রজন্ম লীগের ওয়াহিদুল ইসলাম প্রকাশ অনিক (২৩), মো. রাহাত হোসেন (২৫), হকার লীগের আবদুল মান্নান ওরফে মামুন, মিজান হোসেন ওরফে মিজান (৩০), যুবলীগের সাব্বির হোসেন সাকিব (২৫), মো. হায়দার আলী (২৫) ও পূর্ব নাসিরাবাদ কসমোপলিটন আবাসিক এলাকার কথিত যুবলীগের মোহসেন চৌধুরী ওরফে সাদ্দাম প্রমুখ।
চান্দগাঁও থানার সন্ত্রাসী তালিকায় আছে দুজন। এর মধ্যে একজন ২৩ মামলার আসামি ইসমাঈল হোসেন ওরফে টেম্পো। তার বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যা ২৩টি। তালিকায় থাকা দ্বিতীয় ব্যক্তিটি হলো মো. তৌহিদ প্রকাশ বডি তৌহিদ (২৫)। তার বিরুদ্ধে ১২টি মামলা আছে।
খুলশী থানার সন্ত্রাসীর তালিকায় শীর্ষে আছে ১৫ মামলার আসামি মাসুদ কামাল প্রকাশ কামাল (৩৫)। আরো আছে ১৭ মামলার আসামি বিএনপি কর্মী ওয়াকিল হোসেন ওরফে বগা (২৯), ২০ মামলার আসামি আনোয়ার হোসেন ওরফে মনা (২৭), ১১ মামলার আসামি সুমন ওরফে কসাই সুমন (২৬), ৮ মামলার আসামি মো. সোহাগ।
বায়েজিদ বোস্তামী থানায় এক নম্বরে আছে ভারতে পালিয়ে থাকা বহদ্দারহাটের এইট মার্ডারসহ ৯ মামলার আসামি শিবির ক্যাডার সাজ্জাদ আলী সাজ্জাদ (৩৮)। আছে শিবির ক্যাডার ও সাত মামলার আসামি মো. নুরুন্নবী ওরফে ম্যাঙন (৩০) এবং বিএনপির ক্যাডার ১৫ মামলার আসামি সরোয়ার ওরফে বাবলা (৩১), ১০ মামলার আসামি আবদুল কুদ্দুস ওরফে কানা কুদ্দুস (৪৪), ১১ মামলার আসামি শফিকুল ইসলাম ওরফে গ্যারেজ শফি (৪৫) ও লিয়াকত আলী ওরফে জসিম (৪২)।
ডবলমুরিং থানায় শীর্ষে আছে ৯ মামলার আসামি সুমন ওরফে দাতলা সুমন (৩৫), ১৭ মামলার আসামি ইমতিয়াজ খান প্রকাশ রনি ওরফে মাইকেল রনি (৩০), ৯ মামলার আসামি জালাল উদ্দিন রানা ওরফে ফঙ রানা (২৯), ১৭ মামলার আসামি মো. জসিম ও মোস্তফা কামাল টিপু (৪০)।
হালিশহর থানায় শীর্ষে আছে ১০ মামলার আসামি পিচ্চি মাসুদ। পাহাড়তলী থানায় শীর্ষে আছে ৬ মামলার আসামি কুইন্টাল রিভারো (৩০)। আকবরশাহ থানায় শীর্ষে আছে ৩০ মামলার আসামি মো. নুরে আলম প্রকাশ নুরু (২৫)। ইপিজেড থানার শীর্ষে আছে চার মামলার আসামি হাসান মুরাদ (৪০)। বন্দর থানায় শীর্ষে আছে ১০ মামলার আসামি মো. ইদ্রিছ (৪০)। পতেঙ্গা থানায় শীর্ষে আছে আট মামলার আসামি আকাম উদ্দিন প্রকাশ হাকিম।
তালিকায় আরও আছে চার মামলার আসামি আরব আলী (২৮), চার মামলার আসামি জাহিদ প্রকাশ শহীদ (২৭), ৭ মামলার আসামি আলমগীর হোসেন প্রকাশ খোকন (৩০), চার মামলার আসামি আজম খান (৪১), দুই মামলার আসামি মো. নাসির (২৭) ও সাত মামলার আসামি জোবায়ের বশর (৩৪) প্রমুখ। কর্ণফুলী থানা এলাকায় শীর্ষে আছে ১১ মামলার আসামি আক্তার হোসেন (২৮) ও ১৩ মামলার আসামি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজেরুজালেমে শবে কদরেও সংঘর্ষ
পরবর্তী নিবন্ধভারতে ফের দৈনিক শনাক্ত ৪ লাখের বেশি, মৃত্যু ৪০৯২