দীর্ঘদিন শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরেও স্থানীয় বাস মালিক–চালকদের সিন্ডিকেটের কারণে চালু হয়নি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় টু নিউ মার্কেট দ্রুতযান স্পেশাল বাস সার্ভিস। আগে একটা সময় ক্যাম্পাস থেকে নিউ মার্কেট বাস সার্ভিস চালু থাকলেও নানা কারণে সেটি বন্ধ হয়ে গেছে। সর্বশেষ ২০২২ সালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও দ্রুতযান মালিক সমিতি একমত হলেও স্থানীয়রা ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেয়নি দ্রুতযান বাস।
এবার বর্তমান প্রশাসন উদ্যোগ নিয়ে বাস মালিক সমিতির সঙ্গে কথা বলে আবারও দ্রুতযান বাস সার্ভিস চালু করেছে। শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের দুর্ভোগ নিরসনে এমন উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এবার আগের চেয়ে ভাড়া কমানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আইডি কার্ড দেখিয়ে ক্যাম্পাসের জিরো পয়েন্ট থেকে মুরাদপুর পর্যন্ত জনপ্রতি ২৫ টাকা এবং নিউমার্কেট পর্যন্ত ৩০ টাকায় যেতে পারবেন। শহর থেকে আসার সময়ও একই হারে ভাড়া দিবেন। তবে সাধারণ যাত্রীদের নিয়মিত ভাড়া ৪০ টাকা নির্ধারিত থাকবে।
গতকাল বুধবার সকাল ১০টায় চবির জিরো পয়েন্ট থেকে দ্রুতযান সার্ভিস উদ্বোধন করেন চবি উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার। এ সময় চবি উপ–উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মো. কামাল উদ্দিন, সিনিয়র সহকারী প্রক্টর প্রফেসর মো. বজলুর রহমান, সহকারী প্রক্টর নাজমুল হোসাইন, মো. নুরুল হামিদ কানন। এতে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম–খাগড়াছড়ি বাস মালিক সমিতির সভাপতি রকিবুল আমিন। এছাড়া চট্টগ্রাম নাজিরহাট–খাগড়াছড়ি বাস মিনিবাস মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার বলেন, দ্রুতযান সার্ভিস চালুর ফলে শিক্ষার্থীরা অনেক উপকৃত হবে। শিগগিরই আমরা জোবাইক ও ইকার চালুর পরিকল্পনা করছি। শিক্ষার্থীদের জন্য সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করতে আমরা দিনরাত কাজ করছি।
উপ–উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, শহর থেকে ক্যাম্পাস দূরে হওয়ায় শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে নানা সমস্যা ছিল। আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই এসব সমস্যা সমাধানে কাজ করেছি। দ্রুতযান বাস সার্ভিস চালু হওয়া এরই ফলস্বরূপ। আশা করি এই সেবা শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমাবে।
জানা গেছে, চবি রেলস্টেশন সংলগ্ন জিরোপয়েন্ট থেকে দ্রুতযান স্পেশাল সার্ভিসের বাসসমূহ নিউমার্কেট পর্যন্ত ২০ মিনিট পর পর ছেড়ে যাবে এবং নিউমার্কেট থেকে চবি ক্যাম্পাসে ফিরে আসবে। সকাল ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত থাকবে বাস। প্রতিটি বাসের চালক ও হেল্পার নির্ধারিত পোশাক পরবেন। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে চালক ও হেল্পার পূর্ণ সতর্কতা অবলম্বন করবেন। প্রতিটি বাসে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দৃশ্যমান স্টিকার লাগানো থাকবে। জরুরি যোগাযোগের জন্য স্টিকারে চবি কর্তৃপক্ষ ও দ্রুতযান স্পেশাল সার্ভিস কর্তৃপক্ষের দুটি মোবাইল নম্বর দেওয়া থাকবে। কোনো চালক বা হেল্পার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করলে শিক্ষার্থীরা তাৎক্ষণিকভাবে প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিবেন। এছাড়া কোনো চালক বা হেল্পার শিক্ষার্থীদের দ্বারা অশোভন আচরণের শিকার হলে তা দ্রুতযান কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে লিখিতভাবে জানাবেন।