ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মীরসরাইয়ের ৩০ কিলোমিটার অংশে পাঁচটি ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)। তবে এসব ব্রিজ ব্যবহার না করে সড়ক দিয়েই পার হচ্ছেন পথচারীরা। ফলে বিভিন্ন সময় ঘটছে দুর্ঘটনা। গত মঙ্গলবার নিজামপুরে ফুট ওভারব্রিজের পাশে সড়ক পার হতে গিয়ে নিহত হয় এইচএসসি ২য় বর্ষের এক ছাত্রী। এছাড়া বারইয়াহাট এবং মীরসরাই সদরেও কয়েকটি দুর্ঘটনায় বেশ কয়েকজন প্রাণ হারিয়েছেন। এরপরও সচেতন হচ্ছে না পথচারীরা। ঝুঁকি নিয়েই সড়ক পার হচ্ছেন প্রতিদিন। জানা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত হওয়ার পর মীরসরাই সদর, বড়দারোগাহাট, নিজামপুর কলেজ, বারইয়ারহাট ও ধুমঘাটে পাঁচটি ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৯৫ লাখ থেকে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা।
সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটছে বারইয়ারহাট ট্রাফিক মোড়ে। ঝুঁকি নিয়ে পার হতে গিয়ে এখানে গত পাঁচ বছরে আটজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। এছাড়া বড়দারোগাহাট, নিজামপুর, মীরসরাই সদরেও সড়ক পার হওয়ার সময় অনেকে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন।
বারইয়ারহাট পৌর বাজারের ব্যবসায়ী বেলায়েত হোসেন বলেন, বারইয়ারহাট পৌরসভায় যে জায়গায় ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ হয়েছে সেখানে মানুষ যায় না। ফেনী থেকে আসা যাত্রীরা গাড়ি থেকে নামে বাজারের উত্তর পাশে। চট্টগ্রাম সিটি থেকে যাত্রীরা নামে ট্রাফিক মোড়ে। এরপর একটু দূরে হেঁটে গিয়ে কেউ ফুট ওভারব্রিজ ব্যবহার করতে চান না।
এ বাজারের আরেক ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন বলেন, সড়ক দিয়ে মানুষ পারাপারের পথ যদি বন্ধ করে দেওয়া হয়, তখন সবাই বাধ্য হয়ে ফুট ওভারব্রিজ ব্যবহার করবে। তা না হলে ব্রিজগুলো কেউ ব্যবহার করবে না। বেসরকারি চাকরিজীবী শামসুল হুদার দাবি,অনেক বয়স্ক নারী-পুরুষ ও রোগী ফুট ওভারব্রিজ দিয়ে চলাচল করতে পারে না। তাই তারা বাধ্য হয়ে সড়কের ওপর দিয়ে চলাচল করে। এছাড়া ব্রিজের সিঁড়িগুলো বেশি খাঁড়া হয়ে যাওয়ায় মানুষ উঠা-নামা করতে হাঁপিয়ে যায়।
চট্টগ্রাম জেলা ট্রাফিক ইনসপেক্টর (বারইয়ারহাট ট্রাফিক মোড়ের দায়িত্বে থাকা) আশরাফুল ইসলাম বলেন, বারইয়ারহাটে নির্মিত ফুট ওভারব্রিজ ব্যবহার করছেন শতকরা পাঁচজন পথচারী। বাকি সব মানুষ ঝুঁকি নিয়ে সড়ক পার হয়। কিছুদিন আগে রাস্তা পার হওয়ার সময় এক বৃদ্ধা ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে। তাকে যখন উদ্ধার করছিলাম তখনও মানুষ ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, মানুষ যদি নিজে সচেতন না হয়, তাহলে আমাদের কি করার আছে। বিশেষ করে বারইয়ারহাট ট্রাফিক মোড় খুব ঝুঁকিপূর্ণ। এখানে প্রায় সময় দুর্ঘটনা ঘটছে।
চট্টগ্রাম জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সৌম্য তালুকদার বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত হওয়ার পর মানুষের দাবি এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ডিওলেটার দেওয়ায় ফুট ওভারব্রিজগুলো নির্মাণ করা হয়েছে। যাদের জন্য নির্মাণ হয়েছে তারা ব্যবহার না করা দুঃখজনক। সড়কের মাঝে আইল্যান্ডের ফাঁকা অংশগুলো বন্ধ করা যায় কিনা সে বিষয়ে আলোচনা করব।