২ কোটি ৩৮ লাখ টাকার গাড়ির দাম উঠেছে ৫৩ লাখ

কার্নেট সুবিধার বিলাসবহুল ১১২ গাড়ির নিলাম

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ১৬ নভেম্বর, ২০২১ at ৫:৪৭ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বন্দরে কার্নেট ডি প্যাসেজ বা শুল্কমুক্ত সুবিধায় আসা বিলাসবহুল ১১২ গাড়ির নিলামে ৫৬১ টি দরপত্র জমা পড়েছে। এরমধ্যে মানুয়াল পদ্ধতিতে জমা পড়েছে ২৯০টি এবং অলনাইনে (ই-অকশন) দরপত্র জমা পড়েছে ২৭১টি। এবারের নিলামে সর্বোচ্চ দর উঠেছে জার্মানির তৈরি বিএমডব্লিউ গাড়ির। ২০০৭ সালে তৈরি সিলভার কালারের গাড়িটির কাস্টমস কর্তৃপক্ষ সংরক্ষিত মূল্য ধরেছিল ২ কোটি ৩৮ লাখ ১৩ হাজার ৯৬০ টাকা। ফারজানা ট্রেডিং নামের একটি প্রতিষ্ঠান গাড়িটির দর হাঁকে ৫৩ লাখ টাকা। অপরদিকে বিএমডব্লিউ ব্র্যান্ডের ২০০৬ সালে তৈরি ছয় আসনে গাড়ির সর্বোচ্চ দর পড়েছে ৫০ লাখ টাকা। এছাড়া ২০০৬ সালে তৈরি ল্যান্ড রোভার ব্র্যান্ডের গাড়ির এবার সর্বোচ্চ দর পড়েছে ২৮ লাখ টাকা।
কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, নিলামের তালিকায় থাকা ১১২ গাড়ির মধ্যে ছিল-জার্মানি, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের তৈরি বিএমডব্লিউ, মার্সিডিজ বেঞ্জ, ল্যান্ড ক্রুইজার, ল্যান্ড রোভার, জাগুয়ার, মিতসুবিশি, টয়োটা এবং লেক্সাস জিপের মতো বিলাসবহুল গাড়ি। এর আগে গত ২০১৬ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত টানা চার বার নিলামে তুলেও প্রত্যাশিত দর না পাওয়ায় প্রতিবারই নিলাম বাতিল করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
কাস্টমস কর্মকর্তারা জানান, গত ৩ ও ৪ নভেম্বর ই-অকশনে আগ্রহীরা সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত জাতীয় রাজস্ব বোর্ড অথবা চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের ওয়েবসাইটের ই-অকশন লিংকে প্রবেশ করে প্রয়োজনীয় কাগজ আপলোড দিয়ে দরপত্র জমা দেন। ই অকশন ছাড়াও ম্যানুয়াল পদ্ধতির নিলামের জন্য কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা (প্রশাসন), চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে, সহকারী/ডেপুটি কমিশনার (সদর) ঢাকা দক্ষিণ কার্যালয়ে, সহকারী/ডেপুটি কমিশনার (সদর) কাস্টমস এঙাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট সিলেট কার্যালয়ে এবং মংলা কাস্টম হাউসের নিলাম শাখায় বাঙ স্থাপন করা হয়েছিল। এরমধ্যে চট্টগ্রাম কাস্টমসে স্থাপিত বঙে দরপত্র জমা পড়ে ১৯৬টি, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে স্থাপিত বঙে ২৪টি, ঢাকায় স্থাপিত বঙে ৬৯টি এবং সিলেটে স্থাপিত বঙে দরপত্র জমা পড়ে ১টি। তবে মংলাতে কোনো দরপত্র জমা পড়েনি।
কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, কার্নেট সুবিধায় আসা গাড়িগুলো প্রথম দফায় গত ২০১৬ সালের আগস্টে ৮৫টি, দ্বিতীয়বার ২০১৭ সালের মে মাসে ১১৩টি, তৃতীয়বার ২০১৮ সালের মে মাসে ১১১টি গাড়ি এবং গত ২০১৯ সালের ১৬ এপ্রিল চতুর্থবারের মতো ২২টি গাড়ি তোলা হয়। কিন্তু প্রতিবারই দামে অসামঞ্জস্য থাকায় দরদাতাদের কাছে গাড়ি বিক্রি করা সম্ভব হয়নি।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের উপ-কমিশনার আলী রেজা হায়দার বলেন, অনলাইন ও ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে কার্নেট ডি প্যাসেজ ঘোষণায় আসা গাড়ির নিলাম সম্পন্ন হয়েছে। এখন দরপত্র যাচাই বাছাই করে নিলাম কমিটি সর্বোচ্চ দরদাতাদের অনুকূলে বিক্রয় অনুমোদন দিবে।
উল্লেখ্য, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কার্নেট সুবিধায় গাড়ি আমদানির সুবিধা দেয়া হয়ে থাকে। তবে নির্দিষ্ট সময় পর আবার সেগুলো ফিরিয়ে নিতে হয়। বাংলাদেশে যারা শুল্কমুক্ত এই সুবিধা ব্যবহার করে এসব গাড়ি এনেছেন তাদের বেশির ভাগই প্রবাসী বাংলাদেশী, যাদের দ্বৈত নাগরিকত্ব রয়েছে। সে সুযোগ কাজে লাগিয়ে তাদের অনেকেই এসব গাড়ি কার্নেট সুবিধায় এনে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে বিক্রি করে দেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তাই এসব গাড়ি আমদানির ওপর কড়াকড়ি আরোপ করা হলে একসময় আমদানিকারকরা গাড়িগুলো খালাস করে নেননি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচান্দগাঁওয়ে এএসআই হত্যায় ছিনতাইকারীর যাবজ্জীবন
পরবর্তী নিবন্ধদুদকের মামলায় আসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে চার্জগঠন আজ