২০২৪ সালের ২৯ জুলাই রাষ্ট্রীয় শোক প্রত্যাখ্যান করে মুখে ও চোখে লাল কাপড় বেঁধে ছবি তোলা এবং অনলাইনে তা ব্যাপকভাবে প্রচারের কর্মসূচি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মাহিন সরকার সোমবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে গণমাধ্যমকর্মীদের খুদে বার্তা পাঠিয়ে নতুন কর্মসূচির কথা জানান। এতে বলা হয়, হত্যা ও নির্যাতনের বিচার না করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে নির্মম উপহাস করা হচ্ছে। এর প্রতিবাদে রাষ্ট্রীয় শোক প্রত্যাখ্যান করে ৩০ জুলাই মঙ্গলবার মুখে ও চোখে লাল কাপড় বেঁধে ছবি তোলা এবং অনলাইনে তা ব্যাপক প্রচারের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৯ দফা দাবির বিষয়টিও তিনি খুদে বার্তায় উল্লেখ করেন। নতুন কর্মসূচির কথা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও প্রচার করা হয়। খবর বাসসের।
কর্মসূচি ঘোষণার পর সোমবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে এ কর্মসূচি পালন করতে শুরু করে শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ। এই কর্মসূচি ঘোষণার পর অনেক তারকাও ফেসবুক প্রোফাইল ছবি পরিবর্তন করেন। এদিকে সোমবার দুপুরে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে কোটা সংস্কার দাবির আন্দোলনকে ঘিরে ছড়িয়ে পড়া সহিংসতায় নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে মঙ্গলবার দেশব্যাপী শোক পালন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। বলা হয়, শোক পালনের অংশ হিসেবে কালো ব্যাজ ধারণ করা হবে। আর নিহত ব্যক্তিদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে সব মসজিদে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া মন্দির, গির্জা, প্যাগোডাসহ সব ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হবে। এদিকে সোমবার কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়কদের ‘জিম্মি’ করে বিবৃতি আদায়ের প্রতিবাদ, গুম–গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং ছাত্র–জনতার হত্যার বিচারের দাবিতে দেশের বিভিন্নস্থানে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
এইদিন শিক্ষার্থীরা পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানায়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর অবস্থানের মধ্যেও ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, কুমিল্লা, বরিশাল, ঠাকুরগাঁও, বগুড়া, যশোর, সিলেটের শাবিপ্রবি, জাবি, নোয়াখালীসহ কয়েক জেলার কিছুস্থানে বিক্ষোভ করেন তারা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এদিনও কর্মসূচিস্থল থেকে শিক্ষার্থীদের আটক করে।
সোমাবার রাজধানীর পল্টন, সেগুনবাগিচা, সায়েন্সল্যাব, ইসিবি চত্বর, মিরপুর–১০ নম্বর গোলচত্বরসহ কয়েকটি এলাকায় জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধাওয়া ও লাঠিচার্জে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। শুধু ঢাকায় জমায়েত হওয়ার স্থান থেকে কমপক্ষে অর্ধশত শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়।