দৃষ্টিনন্দন প্রাকৃতিক ঝরনা মীরসরাইয়ের খৈয়াছরা। প্রতিদিন হাজার হাজার দর্শনার্থী ছুটে আসছেন এ ঝরনার সৌন্দর্য উপভোগ করতে। তবে ঝরনায় যাওয়ার অন্তত ৫ কিলোমিটার পথজুড়ে বেহাল অবস্থা। কোথাও ভাঙা রাস্তা, কোথাও কাদা-পানি। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বড়তাকিয়া বাজার পেরিয়ে ঝরনার দিকে এগুতে হয়। শুরুতে সামান্য রাস্তা কার্পেটিং থাকলেও এরপর দেখা যায় গর্তে ভরা পুরো সড়ক। দর্শনার্থীদের কাছে এ বেহাল সড়ক ও দুর্গম পাহাড়ের পিচ্ছিল পথই বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত বৃহস্পতিবার কাদা-পানি মাড়িয়ে পার হচ্ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাহাদ (২৫)। তিনি বলেন, এমন কাদাময় রাস্তা বাংলাদেশের খুব কম জায়গায় আছে। অথচ সরকার এখন ঝরনা দেখতে টিকিট দিয়ে টাকা নিচ্ছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় ১২ নং খৈয়াছরার ইউপি চেয়ারম্যান মাহফুজুল হক জুনু বলেন, রাস্তাটির কাদা কমাতেই সেদিন রাস্তায় কিছু বালু মাটি দিয়েছিলাম। কিন্তু রাতের বৃষ্টিতে উল্টো কাদা বেড়ে গেছে। তবে শীঘ্রই রাস্তাটির উন্নয়ন কাজে হাত দেয়া হবে।
চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, খৈয়াছড়া ঝরনাকে পর্যটনমুখী করতে ২০১৭ সালে একটি পৃথক প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। তবে ২৮ কোটি টাকার প্রকল্প আলোর মুখ দেখেনি এখনো। প্রস্তাবিত এ প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে গাড়ি পার্কিং নির্মাণ, ২০০ হেক্টর সাইকাস উদ্ভিদ বনায়ন, ৬০০ হেক্টর দুষ্প্রাপ্য বিপদাপন্ন দেশীয় প্রজাতির চারা রোপণ, ফলদ প্রজাতি ও স্থানীয় প্রজাতির চারা রোপণ, যাতায়াতের জন্য ৫টি আরসিসি বক্স কালভার্ট নির্মাণ, সড়ক নির্মাণ, পাঁচটি শৌচাগার ও ওয়াশরুম নির্মাণ, দুই কিলোমিটার বৈদ্যুতিক লাইন স্থাপন, ১৫ ডেসিমল জমি অধিগ্রহণ, ৩টি গভীর নলকূপ স্থাপন, নিরাপত্তার জন্য আরসিসি বাউন্ডারি নির্মাণ ইত্যাদি।
জানা যায়, ২০১৩ সালে খৈয়াছড়া ঝরনা প্রচারের মুখ দেখে। এরপর দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ভ্রমণ পিপাসুরা ছুটে আসে ঝরনায়। চলতি বছর খৈয়াছড়া ঝরনা ২৫ লাখ ৫৫ হাজার টাকায় ইজারা দেয়া হয়। প্রত্যেক পর্যটকের কাছ থেকে ২০ টাকা প্রবেশ মূল্য নেয়া হয়ে থাকে। গত কয়েক বছরেই এখানে কোটি টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে। কিন্তু দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে করা হয়নি নুন্যতম ব্যবস্থা।
চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের স্থানীয় রেঞ্জের দায়িত্বে থাকা সহকারী বন সংরক্ষক জামিল মোহম্মদ খান বলেন, ঝরনার প্রকল্পটি প্রক্রিয়াধীন। করোনাসহ বিশ্বময় প্রতিকূল পরিস্থিতির কবলে পড়ে প্রকল্পটি থমকে গেছে বলে ধারনা করা যাচ্ছে।
উপজেলা প্রকৌশলী রনি সাহা বলেন, এই সড়কটি উন্নয়নের জন্য প্রস্তাবনা দেয়া আছে। বরাদ্ধ পেলেই আমরা কাজে হাত দেব।